এ. কে আবুল কালাম আজাদ | বৃহস্পতিবার, ০৯ নভেম্বর ২০২৩ | প্রিন্ট | 125 বার পঠিত | পড়ুন মিনিটে
ঠাকুরগাঁওয়ের বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার ধনতলা ইউনিয়নের নাগেস্বরবাড়ী গ্রামে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে চিহ্নিত সন্ত্রাসীরা প্রকাশ্য দিবালোকে কৃষকের লিজ নেওয়া জমির ধান কেটে নিয়ে যাওয়ায় সময় সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে বাঁধা দিতে গেলে তাদের হামলায় কৃষকের পরিবারের ৪ জন গুরুতর আহত হয়। আহতরা বালিয়াডাঙ্গী হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রয়েছেন। আহতরা হলেন-রমেশ চন্দ্র শীল (৬০) তার পুত্র রাজকুমার চন্দ্র শীল (৩০) ভাতিজা সাগর চন্দ্র শীল (৩২) ও ছোট ভাইয়ের স্ত্রী মল্লিকা বালা (৪৫) এবং অপর পক্ষের পিতাম্বর চন্দ্র সিংহ (৩৫)।
আহতদের মধ্যে রাজকুমার চন্দ্র শীলের শারিরীক অবস্থা আশংঙ্খাজনক হওয়ায় বালিয়াডাঙ্গী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের দায়িত্বরত চিকিৎসক তাৎক্ষনিকভাবে তাকে ঠাকুরগাঁও আধুনিক সদর হাসপাতালে রেফার্ড করে।
দু’পক্ষের সংঘর্ষের ঘটনার পর থেকে জমি লিজ নেওয়া কৃষক রমেশ চন্দ্র শীলের জমির পাকা ধান জোরপূর্বক কেটে নিয়ে যায় প্রতিপক্ষরা। এমন অভিযোগ উঠেছে প্রতিপক্ষে নেতৃত্ব দেওয়া একই গ্রামের হরসুন্দর
সিংহ ও তার পুত্র যতিস চন্দ্র সিংহ ও তাদের ভাড়াটিয়া সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার ধনতলা ইউনিয়নের নাগেস্বরবাড়ী গ্রামের হরসুন্দর সিংহের কন্যা কল্পনা রাণীর ভোগদখলীয় নাগেস্বরবাড়ী মৌজার ৩৪ শতক জমি গত ২০১৩ সালে একই গ্রামের মৃত অন্ন প্রসাদের পুত্র রমেশ চন্দ্র শীল ২৫ হাজার টাকার বিনিময়ে ৩৪ শতক জমি ১৫০ টাকা মূল্যে নন জুডিশিয়াল ষ্টেম্পের চুক্তিপত্রে স্বাক্ষরিত জমি লিজ নিয়ে বিভিন্ন ফসল চাষাবাদ করে আসে। রমেশ চন্দ্র শীল ওই জমিতে আমন ধান চাষাবাদ করলে প্রতিপক্ষের লোকজন ও তাদের ৩০/৪০ জন ভাড়াটিয়া সন্ত্রাসীরা মিলে গত বুধবার (৮ নভেম্বর) সকাল ১০টায় ওই জমির ধান কেটে নিয়ে যাওয়ার সময় লিজ নেওয়া কৃষক রমেশ চন্দ্র শীল ও তার পরিবারের লোকজন মিলে সন্ত্রাসীদের কর্মকাণ্ডে বাঁধা দিতে গেলে এসময় তারা ক্ষিপ্ত হয়ে ধারালো অস্ত্রের আঘাতে একই পরিবারের রমেশ চন্দ্র শীল ও তার পুত্র রাজকুমার শীল, ভাতিজা সাগর শীল ও ছোট ভাইয়ের স্ত্রী মল্লিকা বালাসহ ৪ জন গুরুতর আহত হয়। এঘটনায় অপর পক্ষের পিতাম্বরসহ উভয় পক্ষের ৫ জন আহত হয়ে বালিয়াডাঙ্গী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি হয়।
আহতদের মধ্যে রাজকুমার চন্দ্র শীলের শারিরীক অবস্থা আশংঙ্খাজনক হওয়ায় বালিয়াডাঙ্গী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের দায়িত্বরত চিকিৎসক তাৎক্ষনিকভাবে তাকে ঠাকুরগাঁও আধুনিক সদর হাসপাতালে রেফার্ড করে।
ইতি পূর্বে প্রতিপক্ষের লোকজন রমেশ চন্দ্র শীলের পরিবারের লোকজনের বিরুদ্ধে ১৭ টি বিভিন্ন মামলা দায়ের করলে ১২ টি মামলার তদন্তে ও আদালতের মাধ্যমে নি:স্পত্তি হয়। বাকী ৬টি মামলা বর্তমানে আদালতে বিচারাধীন রয়েছে বলে জানা গেছে।
দু’পক্ষের একাধিক মামলায় ওই গ্রামের প্রায় মানুষের নামে মামলা হলে এরপর থেকে ওই গ্রামে উত্তেজনাকর পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়ে থাকে।
এই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে প্রতিপক্ষের লোকজন পুলিশের ধরাছোঁয়ার বাইরে থেকে একই গ্রামের অসহায় কৃষক রমেশ চন্দ্র শীলের লিজ নেওয়া চাষাদের জমির ধানক্ষেত প্রতিপক্ষের সন্ত্রাসী তান্ডব চালিয়ে ধান কেটে নিয়ে গেছে। এতে কৃষক রমেশ চন্দ্র শীল ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে অসহায় হয়ে পড়েছে।
ভুক্তভোগী কৃষক রমেশ চন্দ্র শীল বলেন, প্রতিপক্ষের লোকজন আধিপত্য বিস্তার করে দীর্ঘদিন ধরেই আমার পরিবারের লোকজনের বিরুদ্ধে ১৭ টি মিথ্যা মামলা দায়ের করে হয়রানী করে আসতে থাকলে এরই মধ্যে ১২ মামলা নিস্পত্তি হয়। বাকী ৬ টি মামলা আদালতে বিচারাধীন রয়েছে। এরই জের ধরে প্রতিপক্ষের লোকজন ও তাদের ভাড়াটিয়া সন্ত্রাসীরা মিলে গত বুধবার সকাল ১০টায় লিজ নেওয়া জমির ধান কেটে নিয়ে যাওয়ার সময় তাদের বাঁধা নিষেধ করলে তারা ক্ষিপ্ত হয়ে অস্ত্র দিয়ে আমাকেসহ আমার পরিবারের ৪ জনকে গুরুতর যখম করে।
একই গ্রামের কল্পনা বালার নিকট হতে আমার লিজ নেওয়া বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার ধনতলা ইউনিয়নের নাগেস্বরবাড়ী মৌজার ৩৪ শতক জমিতে রোপিত পাকা ধান কেটে নিয়ে যায় কল্পনা বালার বাবা হরসুন্দর সিংহ ও তার পুত্র যতিশ চন্দ্রসহ তাদের ভাড়াটিয়া সন্ত্রাসীরা।
সন্ত্রাসীরা দেশীয় অস্ত্র শস্ত্র নিয়ে ওই জমিতে প্রবেশ করে পাকা ধান কাটতে থাকে। সংবাদ পেয়ে কৃষক রমেশ শীল ও তার পরিবারের লোকজন মিলে ঘটনাস্থলে গিয়ে তাদেরকে ধান কাটার কাজে বাঁধা দিলে হরসুন্দর সিংহের গংদের ধারালো অস্ত্রের আঘাতে কৃষক রমেশ চন্দ্র শীলসহ তার পরিবারের ৪ জন গুরুতর আহত হয়েছে। এসময় সন্ত্রাসীরা কৃষক রমেশ চন্দ্রের লোকজনকে প্রাণনাশের হুমকি দেখিয়ে প্রায় ২৫ মন পাকা ধান কেটে নিয়ে যায়। এতে কৃষক রমেশ চন্দ্র শীলের ক্ষতিসাধন হয়েছে। ঘটনাটি মুঠোফোনে ৯৯৯ নাম্বারে জানানো হলে পরে বালিয়াডাঙ্গী থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
বালিয়াডাঙ্গী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) খায়রুল আনাম বলেন, মৌখিকভাবে ধান কাটার ব্যাপারটি শুনেছি। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
Posted ২:৩৫ অপরাহ্ণ | বৃহস্পতিবার, ০৯ নভেম্বর ২০২৩
nykagoj.com | Stuff Reporter