বাংলাদেশ ডেস্ক | শনিবার, ২১ অক্টোবর ২০২৩ | প্রিন্ট | 33 বার পঠিত | পড়ুন মিনিটে
মণ্ডপে মণ্ডপে চণ্ডীপাঠ, ঢাকের বাদ্য, শঙ্খ ও উলুধ্বনির মাধ্যমে গতকাল শুক্রবার মহাষষ্ঠীতে মহিষাসুরমর্দিনী দেবী দুর্গাকে বরণ করে নিয়েছেন ভক্তরা। ষষ্ঠীপূজার মধ্য দিয়ে এ দিন সূচনা ঘটেছে বাঙালি হিন্দুদের সবচেয়ে বড় এ ধর্মীয় উৎসবের।
গতকাল ষষ্ঠী তিথিতে ঢাকেশ্বরী জাতীয় মন্দিরে সকাল সাড়ে ৮টায় বিল্ববৃক্ষ বা বেলগাছের নিচে ঘট স্থাপন করে ষোড়শ উপাচারে হয় দেবীর কল্পারম্ভ ও ষষ্ঠীবিহিত পূজা। এ সময় ভক্তরা দেবী দুর্গার চরণে পুষ্পার্ঘ্য দিয়ে প্রার্থনা করেছেন দেশ তথা বিশ্বে অশুভ শক্তির বিনাশ আর শুভ শক্তি প্রতিষ্ঠার। এর পর সায়ংকালে দেবীর বোধন, আমন্ত্রণ ও অধিবাসের মধ্য দিয়ে শুরু হয় মূল পূজা। সন্ধ্যায় মণ্ডপ ও মন্দিরে চণ্ডীপাঠের মাধ্যমে বোধনের মধ্য দিয়ে চলে দক্ষিণায়নে নিদ্রিত দেবীর নিদ্রা ভাঙার বন্দনা।
ষষ্ঠীপূজা উপলক্ষে গতকাল ঢাকেশ্বরী মন্দির ভোর থেকেই ছিল মুখর। ঢাকা মহানগর পূজা উদযাপন পরিষদের উপদেষ্টা প্রণব চক্রবর্তী বলেন, ‘ষষ্ঠীর সকালের পর্বটি মূলত কল্পারম্ভ। এর মাধ্যমে আমরা কল্পনা করছি যে, দেবী বিল্ব বৃক্ষে অধিষ্ঠান করেছেন। তাঁকে আমরা পূজা করব। এই সংকল্প করাটাই কল্পারম্ভ। সন্ধ্যায় বোধন এবং অধিবাসের মধ্য দিয়ে দেবীকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। বোধন হলো উপলব্ধি করা যে দেবী এসেছেন। সপ্তমী থেকে মূলত পূজা শুরু হবে।’
ষষ্ঠীপূজা উপলক্ষে এদিন রাজধানীর অন্য মন্দির ও মণ্ডপগুলোতেও ছিল ভক্তের ভিড়। ঢাকা মহানগরীর ২৪৬টিসহ এবার সারাদেশে ৩২ হাজার ৪০৮টি মণ্ডপে দুর্গাপূজা হচ্ছে। পূজাকে ঘিরে এরই মধ্যে কঠোর নিরাপত্তার ব্যবস্থা করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। প্রতিটি মণ্ডপে পুলিশ, আনসার-ভিডিপির পাশাপাশি কোথাও কোথাও নিযুক্ত করা হয় র্যা ব-বিজিবি সদস্যদের। সাদা পোশাকে গোয়েন্দা সদস্যদের ছিল সতর্ক পাহারা। অনেক মণ্ডপে আর্চওয়ে ও মেটাল ডিটেক্টরে কড়া তল্লাশির মধ্য দিয়ে দর্শনার্থীদের প্রবেশ করতে দেখা গেছে। তবে কড়া নিরাপত্তা ব্যবস্থা ছেদ ফেলেনি পূজার আনন্দমুখরতায়। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল সকালে ঢাকেশ্বরী জাতীয় মন্দিরে পূজারি ও দর্শনার্থীদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করেন। এছাড়া ঢাকেশ্বরী মন্দির মেলাঙ্গনে দুস্থদের মধ্যে বস্ত্র বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী।
আজ মহাসপ্তমী। এদিন সকালে দেবী দুর্গার চক্ষুদান, নবপত্রিকা প্রবেশ, স্থাপন, সপ্তাদি কল্পারম্ভ ও সপ্তমীবিহিত পূজা হবে। এভাবে উৎসব চলবে আগামী মঙ্গলবার বিজয়া দশমীতে প্রতিমা বিসর্জন পর্যন্ত। সনাতনী শাস্ত্র অনুযায়ী, মহাসপ্তমীতে ষোড়শ উপাচারে দেবী দুর্গাকে পূজিত করা হবে। এ ছাড়া চক্ষুদানের পর ভক্তরা আসন, বস্ত্র, নৈবেদ্য, স্নানীয়, পুষ্পমাল্য, চন্দন, ধূপ ও দীপ দিয়ে দেবীকে পূজা করবেন।
২ লাখ ১৫ হাজার আনসার ও ভিডিপি সদস্য মোতায়েন
দুর্গাপূজা উপলক্ষে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে সারাদেশের মণ্ডপগুলোয় ২ লাখ ১৫ হাজার আনসার ও ভিডিপি সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে। তারা আগামী ২৪ অক্টোবর পর্যন্ত মণ্ডপগুলোয় সার্বক্ষণিক নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকবেন। গতকাল আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর উপপরিচালক (গণসংযোগ কর্মকর্তা) জাহিদুল ইসলাম এ তথ্য জানিয়েছেন।
জাহিদুল ইসলাম জানান, প্রতিটি জেলায় যে কোনো আপৎকালীন মোতায়েনের জন্য রেঞ্জের অধীন ব্যাটালিয়নগুলোতে ৬৪টি কুইক রেসপন্স টিম প্রস্তুত রাখা হয়েছে। এ ছাড়া যে কোনো জরুরি পরিস্থিতি মোকাবিলায় অনুরোধ করা হয়েছে আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর সদরদপ্তরের কন্ট্রোল রুমের ০১৭৭৭৭৯৪৪৮৩ ও ০১৭৭৭৭৯৪৪৮৪ নম্বরে যোগাযোগের জন্য।
Posted ১০:৫৭ পূর্বাহ্ণ | শনিবার, ২১ অক্টোবর ২০২৩
nykagoj.com | Stuff Reporter