শনিবার ২১শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ৬ই আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

আইন ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ঘেরাওয়ের চিন্তা বিএনপির

বাংলাদেশ ডেস্ক   |   মঙ্গলবার, ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৩   |   প্রিন্ট   |   117 বার পঠিত   |   পড়ুন মিনিটে

আইন ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ঘেরাওয়ের চিন্তা বিএনপির

গুরুতর অসুস্থ খালেদা জিয়াকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে পাঠানোর দাবিতে ৪৮ ঘণ্টার আলটিমেটাম শেষে আইন ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ঘেরাওয়ের কর্মসূচি দিতে পারে বিএনপি। রোববার ঘোষিত আলটিমেটাম শেষ হবে আজ মঙ্গলবার বিকেল ৫টায়। বিএনপির সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরাম জাতীয় স্থায়ী কমিটি ও সিনিয়র নেতারা আজ মঙ্গলবার বৈঠকে বসে নতুন কর্মসূচি চূড়ান্ত করবেন। বিএনপির নীতিনির্ধারক সূত্র এ তথ্য জানিয়েছে।

এদিকে এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থার কোনো উন্নতি হয়নি। আগের মতোই লিভারের পাশাপাশি ফুসফুসের জটিলতা নিয়ে শঙ্কিত তাঁর চিকিৎসকরা। মেডিকেল বোর্ডের একজন চিকিৎসক নাম না প্রকাশের শর্তে জানিয়েছেন, গতকালও তাঁর ফুসফুস থেকে পানি বের করা হয়েছে। শরীরে ক্যাথেডর লাগানো হয়েছে। এ ছাড়া তাঁর কেবিন রুমেই আলট্রাসনোগ্রাম করানো হয়েছে। খালেদা জিয়ার অবস্থা দিন দিন জটিল হচ্ছে। যত দ্রুত সম্ভব তাঁকে উন্নত চিকিৎসায় বিদেশে নেওয়া দরকার।

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর গতকাল সোমবার রাজধানীতে সমাবেশে বলেছেন, গণতন্ত্রের নেত্রী খালেদা জিয়া এখন জীবন-মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছেন। তিনি এত বেশি অসুস্থ যে তাঁর চিকিৎসকরা অবিলম্বে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে নেওয়ার কথা বলেছেন।

জানা গেছে, গতকাল রাতেই খালেদা জিয়ার সর্বশেষ শারীরিক অবস্থা নিয়ে মেডিকেল বোর্ডের সভা অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে তাঁর বিভিন্ন পরীক্ষার রিপোর্ট নিয়ে আলোচনা করেন চিকিৎসকরা। তবে তাদের সিদ্ধান্ত সম্পর্কে কিছু জানা যায়নি।
খালেদা জিয়ার শারীরিক খোঁজ নিতে গতকাল বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী হাসপাতালে যান। সেখানে চিকিৎসকদের সঙ্গে কথা বলে দলীয় প্রধানের অবস্থার বিষয়ে জানার চেষ্টা করেন।

প্রধানমন্ত্রীর চায়ের আমন্ত্রণ নিয়ে পরস্পরবিরোধী বক্তব্য

বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য ও দলের যুক্তরাজ্য সভাপতি এম এ মালেক বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের সভাপতি ড. সিদ্দিকুর রহমানের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা চা খাওয়ার আমন্ত্রণ জানালে তিনি আগে দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে মুক্তি দিয়ে বিদেশে উন্নত চিকিৎসার দাবি জানান। তাঁর দাবি অবহিত করার পর প্রধানমন্ত্রী বিষয়টি ‘ইতিবাচক’ হিসেবে দেখছেন বলে জানান আওয়ামী লীগ নেতারা।

এম এ মালেক দাবি করেন, চায়ের দাওয়াতে বসার পর খালেদা জিয়ার বিদেশে চিকিৎসার বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেবেন বলে জানান আওয়ামী লীগ নেতারা। জবাবে তিনি বলেছেন, বিদেশে চিকিৎসার বিষয়ে আগে ঘোষণা দিক, তারপর চা খাবেন। তিনিসহ বিএনপি নেতাদের সঙ্গে তিন দফায় বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়েছে। তবে প্রধানমন্ত্রী এ বিষয়ে আগে ঘোষণা না দেওয়ায় আমরা চায়ের আমন্ত্রণ গ্রহণ করিনি।

এ ব্যাপারে যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের সভাপতি ড. সিদ্দিকুর রহমান বলেন, প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ পেয়ে গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় তিনি সরাসরি এম এ মালেকের সঙ্গে দেখা করে প্রধানমন্ত্রীর চায়ের আমন্ত্রণ পৌঁছে দেন। এ সময় প্রায় ৩০-৩৫ জন বিএনপি নেতাকর্মীও উপস্থিত ছিলেন। তাঁর দাওয়াত গ্রহণ করেন এবং পাঁচ সদস্যের প্রতিনিধি দলের তালিকাও আমাকে দেন। এ সময় এম এ মালেক অসুস্থ বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার চিকিৎসা বিদেশে করার বিষয়টি নজরে নিয়ে আসার বিষয়ে কথা বলতে চান বলে জানান। আমিও প্রধানমন্ত্রীকে বিষয়টি অবহিত করি, তিনি রাজি হন। কিন্তু পরে শুক্রবার তারা আর কোন যোগাযোগ করেননি। পরে একটা অজুহাত দেখালেন যে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ বিষয়টি কিছুই জানেন না বলে জানিয়েছেন। জবাবে আমি বলেছি, এটা তো পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কোনো বিষয় না। পরে তারা আর কোনো যোগাযোগ করেননি।

আইনমন্ত্রীর ভাষ্য

আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেছেন, বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার দণ্ড স্থগিত করে শর্তসাপেক্ষে মুক্তি দেওয়া হয়েছে। তাঁকে বিদেশ পাঠানোর ব্যাপারে বর্তমানে আইনের অবস্থান থেকে সরকারের আর কিছু করার নেই। গতকাল সচিবালয়ে নিজ কার্যালয়ে গণমাধ্যমকর্মীর সঙ্গে আলাপকালে এসব কথা বলেন তিনি। এর আগে আইনমন্ত্রীর সঙ্গে সচিবালয়ে সাক্ষাৎ করেন জাতিসংঘের মুক্তচিন্তা, মত প্রকাশের স্বাধীনতার বিকাশ ও সুরক্ষাবিষয়ক বিশেষ র‍্যাপোটিয়ার আইরিন খান।

আনিসুল হক বলেন, ফৌজদারি কার্যবিধির ৪০১ (১) এর ক্ষমতাবলে শর্তযুক্তভাবে সাজা স্থগিত রেখে খালেদা জিয়াকে মুক্তি দেওয়া হয়েছে এবং সেটা প্রধানমন্ত্রীর মহানুভবতায়। এখন আইনের যে পরিস্থিতি, তাতে যদি কোনো পরিবর্তন আনতে হয় সেক্ষেত্রে খালেদা জিয়াকে আগে যে শর্তযুক্ত মুক্তি দেওয়া হয়েছে, সেটাকে বাতিল করতে হবে। তার পরে অন্য বিবেচনা করা যাবে। তিনি বলেন, ‘আমি বলেছিলাম, তাঁকে (খালেদা জিয়া) বিদেশে যাওয়ার আবেদনটা প্রথমে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে করতে হয়। সেই আবেদন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠায় এবং আইন মন্ত্রণালয়ের মতামতের ওপরই নির্ভর করে এই ব্যাপারটা। আমার মনে হয়, আইনের সেই অবস্থান থেকে সরকারের আর কিছু করার নেই। অপর এক প্রশ্নের জবাবে আনিসুল হক বলেন, আমাদের (স্বরাষ্ট্র ও আইন মন্ত্রণালয়ের) মধ্যে কোনো ঠেলাঠেলি নেই। আমি পরিষ্কারভাবে আবারও বলছি, যদি কোনো আবেদন আসে; সেই আবেদন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় মতামতের জন্য আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠাবে।

Facebook Comments Box

Posted ৪:৫৮ পূর্বাহ্ণ | মঙ্গলবার, ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৩

nykagoj.com |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

advertisement
advertisement
advertisement

ক্যালেন্ডার

সোম মঙ্গল বু বৃহ শুক্র শনি রবি
 
১০১১১৩১৫
১৬১৯২০২১২২
২৩২৪২৫২৬২৭
৩০  
সম্পাদক
আফরোজা ইসলাম
কন্ট্রিবিঊটিং এডিটর
মনোয়ারুল ইসলাম
Contact

+1 845-392-8419

E-mail: nykagoj@gmail.com