
শেখ শফিকুর রহমান,নিউইয়র্ক | রবিবার, ১৬ এপ্রিল ২০২৩ | প্রিন্ট | 299 বার পঠিত | পড়ুন মিনিটে
সেপ্টেম্বর মাস ছাড়া বাকি মাস জুড়ে যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামীলীগের রাজনৈতিক কর্মকান্ড থাকে নিষ্প্রান বা নীরব।তেমনভাবে ঘটা করে জাতীয় দিবস পালন করতে দেখা যায় না। করলেও সেটা হয়ে থাকে দায়সাড়াভাবে । অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকেন গোটা বিশেক নেতাকর্মী। যে কয়জন থাকেন অনুষ্ঠানে সবাই সুযোগ পান বক্তব্য দিতে অর্থাৎ যারা নেতা তারাই শ্রোতা। এই কথা গুলোর সত্যতা জানতে হলে যেতে হবে আওয়ামীলীগ আয়োজিত অনুষ্ঠানে। আওয়ামী ঘরনায় শ্রুতিমধুর শব্দ হচ্ছে ‘সেপ্টেম্বরী নেতা’।
যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের সভাপতি ড. সিদ্দিকুর রহমান। এক যুগের বেশি সময় ধরে দায়িত্ব পালন করছেন। কর্মি বান্ধব সিদ্দিক বাস করেন নিউ জার্সিতে। কিন্তু দলীয় কর্মকান্ড ও জাতীয় দিবসে স্বস্ত্রীক ছুটে আসেন নিউইয়র্কে। দলীয় কোন কার্যালয় না থাকায় বিভিন্ন রেষ্টুরেন্টই নেতাকর্মিদের নিয়ে তার বসার স্থান। ঘন্টার পর ঘন্টা একজন সাধারন কর্মির মতো বসে থাকেন জ্যাকসন হাইটসে। নবান্ন রেষ্টুরেন্টের অধর্- বৃত্তায়িত টেবিলটি তার খুবই পছন্দের। নিউইয়র্কের সাংবাদিক ও জ্যাকসন হাইটসে আড্ডাবাজরা মজা করে বলেন ‘সিদ্দিক কর্ণার’। নিরংকার এ রাজনীতিক দলমত নির্বিশেষে সকলের কাছে সন্মানীয়। সমস্যাটি হয় সিদ্দিকুর রহমান ব্যক্তিগত, পারিবারিক কিংবা দলীয় কারনে যুক্তরাষ্ট্রে না থাকলে বা বাংলাদেশে গেলে । ঐতিহ্যবাহী আওয়ামী লীগ নিউইয়র্কে এতিম হয়ে যায়। একজন প্রবীন সাংবাদিকের ভাষায়, ‘ড. সিদ্দিক দেশে গেলে যেন দলটি চলে যায় বাংলাদেশে। যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগ আছে বলে মনে হয় না’। চোখে পড়ে না উল্লেখযোগ্য কর্মসূচি। অবশ্য মিশন বা কনস্যুলেট কোন অনুষ্ঠান আয়োজন করলে অনেকেই তাতে যোগ দেন সদলবলে। সামনের আসনগুলো চাই। সাংবাদিক বা অতিথিদের নির্ধারিত আসনগুলো নিজেদের সম্পত্তি ভেবে বসে পড়েন অনায়াসে। মেতে ওঠেন সেলফি তোলায়। তাদের সামাল দিতে হিমশিম খেতে হয় মিশন ও কনস্যুলেটের কর্মকর্তাদের।
একদল নেতা সেপ্টেম্বর মাস এলেই জ্যাকসন হাইটসে রাত দিন ঘুরে বেড়ান।তখন তাদের জন্য অনেকেই রেস্টুরেন্টে বসার জায়গা পেতে বেশ বেগ পেতে হয়।আর তখন সেইসব সেপ্টেম্বরী নেতারা আওয়ামীলীগের ব্যানারে মিছিল মিটিংএ মুখরিত থাকেন সারাক্ষন। তাদের দাবী একটাই নতুন কমিটি চাই। সেপ্টেম্বরী নেতারা সারাবছর থাকেন ঘুমন্ত। সেপ্টেম্বর মাসে দলের সভানেত্রী নিউইয়র্ক থাকেন। ঘুম ভাংগে তাদের। দলের সভানেত্রীর নজরে আসার জন্য প্রধানমন্ত্রীর হোটেলের সামনে আড্ডা দিতে দেখা যায় সারাক্ষন। হোটেল লবিতে পা রাখার যায়গা থাকে না। তা সামাল দিতে হোটেল স্টাফদের হিমশিম খেতে হয়। বিদেশি হোটেল গেষ্টরা হন বিরক্ত। বিশ্বের অন্য কোন দেশের প্রধানমন্ত্রী বা প্রেসিডেন্ট হোটেলে উঠলে এমন দৃশ্য দেখা যায় না। সেপ্টেম্বরে মিছিল মিটিংএ জ্যাকসন হাইটস এলাকা প্রকম্পিত হয়ে উঠে। বছরের বাকী সময় তেমন একটা দেখা যায়না । যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামীলীগের কার্যকরী কমিটি অনেক বড়। সবাইকে নিয়ে অনুষ্ঠান করলে শুধু কমিটির লোকই হবে শতাধিক। সভানেত্রী বর্তমান কমিটির বিকল্প সভাপতি হিসেবে গ্রহনযোগ্য কাউকে না পাওয়াতে যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামীলীগের নতুন কমিটির কথা ভাবছেন না। অনেকেই মনে করেন গ্রহনযোগ্য কাউকে না পাওয়া পর্যন্ত নতুন কমিটি হবে না। শেখ হাসিনা খুঁজছেন একজন সার্বক্ষনিক সভাপতি। তা’ছাড়া ২০২৩ তো নির্বাচনী বছর। যার জন্য সেপ্টেম্বরী নেতারা ঝিমিয়ে পড়েছেন। এই মুহূর্তে রাজনৈতিক কোন কর্মকান্ড বা কর্মসূচী পালন করতে তেমন একটা পরিলক্ষিত হচ্ছেনা। হয়তো তারা আগামী সেপ্টেম্বরের প্রহর গুনছেন। সেপ্টেম্বরে প্রধানমন্ত্রী জাতিসংঘ অধিবেশনে আসলে তারা আবারও নিজেদের অবস্থান মিছিল মিটিংয়ের মাধ্যমে জানান দিবেন।আবারও জ্যাকসন হাইটসের মাঠ সরগরম হয়ে উঠবে নেতাদের পদচারনায়।এখন সেটাই দেখার অপেক্ষায় নিউইয়র্ক প্রবাসী বাংলাদেশীরা।
Posted ৬:১৬ অপরাহ্ণ | রবিবার, ১৬ এপ্রিল ২০২৩
nykagoj.com | Monwarul Islam