সোমবার ৬ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ২৩শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ওরা এক সময় কিছুটা বাড়াবাড়ি করেছিলঃ আব্দুল মোমেন

আমেরিকাকে খুনিমুক্ত করতে প্রবাসী বাংলাদেশিদের প্রতি আহবান পররাষ্ট্র মন্ত্রীর

নিজস্ব প্রতিবেদক   |   শনিবার, ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৩   |   প্রিন্ট   |   193 বার পঠিত   |   পড়ুন মিনিটে

আমেরিকাকে খুনিমুক্ত করতে প্রবাসী বাংলাদেশিদের প্রতি আহবান  পররাষ্ট্র মন্ত্রীর

পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ. কে. আব্দুল মোমেন বললেন, আমেরিকাকে খুনিমুক্ত করতে প্রবাসী বাংলাদেশিদের জোড়ালো আন্দোলন করতে হবে। খুনির বাসার সামনে গিয়ে অবস্থান নিতে হবে। খুনি রাশেদ মিথ্যা তথ্য দিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে রাজনৈতিক আশ্রয় পেয়েছে। হোমল্যান্ড সিকিউরিটি তার কেসটি রিভিউ করেছে। মিথ্যা তথ্য দিয়ে নাগরিকত্ব পেলে যুক্তরাষ্ট্র তা কেড়ে নিতে পারে। সুতরাং তাকে বাংলাদেশে ফেরত পাঠাতে আইনগত সমস্যা থাকার কথা নয়। আমেরকিান সরকারের দৃিষ্টিতে আনার জন্য আপনাদের (প্রবাসীদের) আন্দেলন করতে হবে। ২৪ ফেব্রুয়ারী শুক্রবার নিউইয়র্কে বাংলাদেশ কনস্যুলেট আয়োজিত “বাংলাদেশের উন্নয়নে প্রবাসীদের ভূমিকা” শীর্ষক মতবিনিময় সভায় বঙ্গবন্ধুর খুনেিক ফেরত নেয়া প্রসংগে তিনি এ কথা বলেন। এ সময় যুক্তরাষ্ট্রে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ ইমরান উপস্থিত ছিলেন। কনসাল জেনারেল মনিরুল ইসলাম অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করেন।

মতবিনিময় সভার প্রধান অতিথি পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. মোমেন বলেন, ইউএস – বাংলাদেশ এর মধ্যে মধুর সম্পর্ক রয়েছে এখন। তা আরও বাড়ছে। এমন মধুর সম্পর্ক সত্বেও কিছু কিছু মিডিয়া উদ্ভট সংবাদ প্রকাশ করে জনগণকে বিভ্রান্ত করছে। এ ব্যাপারে প্রবাসীদের সজাগ থাকতে হবে। নিজ নিজ এলাকার সিনেটর-কংগ্রেসম্যানসহ প্রশাসনের লোকজনের সাথে সম্পর্ক গভীর করতে হবে। বাংলাদেশ এগিয়ে চলার সত্যিকারের কথা তাদেরকে অবহিত করতে হবে। তিন বলেন, র‌্যাব এক সময় কিছুটা বাড়াবাড়ি করেছিল। এখন কিন্তু তা নেই। অনেক ভালো কাজ করছে। সমালোচকরাও প্রসংশা করতে শুরু করেছে।
মতবিনিময় সভায় কমিউনিটির পক্ষে ৩০ জন প্রবাসী বক্তব্য রাখেন। উল্লেখযোগ্যরা হলেন যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের প্রেসিডেন্ট ড. সিদ্দিকুর রহমান, মোহাম্মদ আলী সিদ্দিকী,আওয়ামী লীগ নেতা সৈয়দ বশারত আলী, ড,মাসুদুল হাসান, আশরাফুজ্জামান, মোর্শেদা জামান, মোহম্মদ আলী,মিসবাহ আহমেদ, শেখ আতিকুর রহমান, আব্দুর রহিম বাদশা, মহিউদ্দীন দেওয়ান,শাহনাজ মমতাজ, রানা ফেরদৌস চৌধুরী, আব্দুল জলিল,মনসুর খান,ফরিদ আলম,ড. আব্দুল বাতেন, সাখাওয়াত আলী, কাজি কয়েস,সাখাওয়াত বিশ্বাস,আব্দুল হাসিব মামুন,ম্ইনুল ইসলাম, আবু হানিফ, সাংবাদিক আবু তাহের, আবু সাইয়িদ ও আমান উদ্দৌলা।

প্রবাসীরা উদ্ভূত পরিস্থিতি এবং প্রবাসীদের বিভিন্ন সমস্যা-সম্ভাবনা আলোকপাত করেন। এনআইডি কার্ড সকলের জন্যে দ্রুত ইস্যু করার আহবান জানান। অনেক প্রবাসীর সহায়-সম্পদ দুর্বৃত্তরা দখল করেছে, সরকারের বিনিয়োগের আহবানে সাড়া দিয়ে বাংলাদেশে গিয়ে অনেকে কাংখিত সহযোগিতা পান না, এয়ারপোর্টে এখনও কিছু অসৎ কর্মকর্তার বেপরোয়া আচরণ অব্যাহত রয়েছে, নিউইয়র্ক অঞ্চলের বিশাল জনগোষ্ঠির সেবা প্রদানের জন্যে বড় একটি ভবনে কন্স্যুলেট অফিস স্থাপনের পাশাপাশি মিশিগান, টেক্সাসে কন্স্যুলেট অফিস স্থাপনের কথাও উঠে এ সময়। কারিগরি সেক্টরে উচ্চ শিক্ষা গ্রহণে আগ্রহীদের জন্যে স্কলারশিপ বাড়ানোর আহবান জানান যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশী মালিকানাধীন ‘ওয়াশিংটন ইউনিভার্সিটি অব সায়েন্স এ্যান্ড টেকনোলজির চ্যান্সেলর আবুবকর হানিফ। কৃষিবিদ আশরাফুজ্জামান আগামী প্রজন্মের দিকে তাকিয়ে দ্বৈত নাগরিত্বের যুক্তি তুলে ধরেন। মোর্শেদা জামান দেশে ডলার পাঠাতে ১০ হাজারের লিমিট বাড়ানো যায় কিনা তা বিেিবচনায় আনার দাবি জানান। মনসুর খান দেশে প্রবাসীদের সম্পদ দখল হয়ে যাবার অভিযোগ উত্থাপন করেন। আওয়ামী লীগ সভাপতি সিদ্দিকুর রহমান বলেন, বাংলাদেশের ওপর স্যাংশন জারি করার জন্য ড. ইউনুস ও ড. ওসমানে ফারুকের ভাই জড়িত। জামায়াত শিবির এখানে কোন ফ্যাক্টর ছিল না। এ দুজনের অপকর্ম আমাদের রুখতে হবে।

 

সকলের আহবানের পরিপ্রেক্ষিতে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, উন্নয়নের ধারা অব্যাহত থাকলে উন্নত, সমৃদ্ধশালি, স্থিতিশীল, অসাম্প্রদায়িক অর্থনীতি, যেখানে অন্ন, বস্ত্র বাসস্থান, শিক্ষা সেবা, স্বাস্থসেবা-সকলের জন্যে নিশ্চিত হবে, সেই সোনার বাংলা বিনির্মাণের লক্ষ্য ২০৪১ সালের মধ্যে আমরা অর্জনে সক্ষম হবো। আমরা ইতিমধ্যেই খাদ্যে স্বয়ংসম্পন্ন, সবার জন্যে কাপড় নিশ্চিত করেছি। ইতিমধ্যেই ৩৫ লাখ গৃহহারাকে বাড়ি তৈরী করে দেয়া হয়েছে। স্কুলে ভর্তির হার হান্ড্রেড পার্সেন্ট হয়ে গেছে। তবে শিক্ষার গুণগত মান নিয়ে যে প্রশ্ন রয়েছে, তা দূর করতে সরকার বদ্ধপরিকর। প্রায় ১৬ হাজার হেলথ ক্লিনিক স্থাপন করা হয়েছে প্রত্যন্ত অঞ্চলে। সেখান থেকে বিনামূল্যে ৩০ ধরনের ওষুধ বিতরণ করা হচ্ছে। ড. মোমেন উল্লেখ করেন, কান্ট্রি ইজ ডুয়িং ওয়েল। তবে এখনও অনেক চ্যালেঞ্জ রয়ে গেছে। বেকারত্ব রয়েছে। জলবায়ু পরিবর্তনের ভয়ংকর আশংকা দিনদিনই বাড়ছে। এছাড়া নতুন নতুন পরিস্থিতিও তৈরী হচ্ছে। তবে আমরা সবকিছু ঠিকঠাকমত সারতে পারছি-এটাই বড় সত্য। আব্দুল মোমেন বিজ্ঞ রাজনীতিকের মতো প্রবাসীদের সকল প্রশ্নের জবাব দেন। ধৈর্য সহকারে প্রবাসীদের বক্তব্য শুনেন। অনেকেরই আশংকা ছিল তিনি হয়তো সেনশনাল কিছু কথা বলে ফেলতে পারেন। কিন্তু এবার তিনি ছিলেন যথেষ্ঠ সংযত ও পরিশীলিত। তার বক্তব্যে উপস্থিত সকলেই সন্তোষ প্রকাশ করেছেন।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ ইমরান প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্স দেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছে উল্লেখ করে তিনি প্রবাসীদের প্রত্যেককেই বিদেশের মাটিতে বাংলাদেশের শুভেচ্ছা দূত হিসেবে অভিহিত করে দেশের মর্যাদা ও ভাবমূর্তি বৃদ্ধিতে ভূমিকা রাখার জন্য ধন্যবাদ জানান। তিনি প্রধানমন্ত্রী ঘোষিত রূপকল্প ২০৪১ বাস্তবায়নে সকলের সক্রিয় সহযোগিতা কামনা করেন। তিনি সরকারের প্রবাসী বান্ধবনীতি অনুসারে প্রবাসীদের আন্তরিকতার সাথে সেবা প্রদানের উপর গুরুত্বারোপ করেন।

 

Facebook Comments Box

Posted ৯:০৬ অপরাহ্ণ | শনিবার, ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৩

nykagoj.com |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

advertisement
advertisement
advertisement

এ বিভাগের আরও খবর

ক্যালেন্ডার

সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
 
১০১১১২
১৩১৪১৫১৬১৭১৮১৯
২০২১২২২৩২৪২৫২৬
২৭২৮২৯৩০৩১  
সম্পাদক
আফরোজা ইসলাম
কন্ট্রিবিঊটিং এডিটর
মনোয়ারুল ইসলাম
Contact

+1 845-392-8419

E-mail: nykagoj@gmail.com