সোমবার ১৪ই জুলাই, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ৩০শে আষাঢ়, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

শিরোনাম >>
শিরোনাম >>

ওয়ানডে সিরিজ হতাশায় শেষ

খেলা ডেস্ক   |   বুধবার, ০৯ জুলাই ২০২৫   |   প্রিন্ট   |   29 বার পঠিত   |   পড়ুন মিনিটে

ওয়ানডে সিরিজ হতাশায় শেষ

প্রত্যাশার বেলুন উড়ছিল কলম্বো থেকেই। ক্যান্ডিতে সিরিজ নির্ধারণী ম্যাচের আগে তা পৌঁছে গিয়েছিল আকাশছোঁয়া উচ্চতায়। কে জানত, সিরিজ জয়ের সে আশা ছিল লাগামহীন, স্বপ্নভঙ্গের আলেয়া! মেহেদী হাসান মিরাজরা প্রত্যাশার সেই আলেয়ায় ডুবে গেলেন চোরাবালির মতোই। তারা শেষ ম্যাচে বাজে ক্রিকেট খেলে ক্যান্ডির পাল্লেকেলে স্টেডিয়ামে হেরে গেলেন ৯৯ রানে। ২-১ ব্যবধানে সিরিজ হেরে শেষ হলো মিরাজদের ওয়ানডে অভিযান। এ পরাজয়ে সিরিজ জয়ের অপেক্ষা বাড়ল আগামী সিরিজ পর্যন্ত। আগামী অক্টোবরে তিন ম্যাচ ওয়ানডে ও তিন ম্যাচ টি২০ সিরিজ খেলতে বাংলাদেশে আসবে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। সে পর্যন্ত অপেক্ষায় থাকতে হবে মিরাজদের।

শ্রীলঙ্কার ব্যাটিং কোচ থিলানা কানদাম্বি ম্যাচপূর্ব সংবাদ সম্মেলনে বলেছিলেন, পাল্লেকেলেতে ব্যাটিং উইকেটে খেলা হবে। এক বছরের পরিসংখ্যান তুলে ধরে বার্তা দিয়েছিলেন উভয় দলের ব্যাটারদের। বাংলাদেশ দলের ক্রিকেটাররাও জানতেন, জিততে হলে ব্যাটারদেরই দায়িত্ব নিতে হবে। পারভেজ হোসেন ইমনরা সে দায়িত্ব পালন করে গেলেন ভুলভাবে। কুশল মেন্ডিসের ব্যাটিং থেকে শিক্ষা নিয়ে মাটি কামড়ানো শট না খেলে উড়িয়ে বল বাউন্ডারি পার করতে গিয়ে হলেন আউট। মেহেদী হাসান মিরাজ চেষ্টাই করেননি ইনিংস লম্বা করতে। ইমন-মিরাজকে শট খেলতে দেখে যে কারও মনে হতে পারে, টি২০ ম্যাচের প্র্যাকটিস করতে নেমেছিলেন।

এই ম্যাচে ছয়জন ব্যাটার বোল্ড আউট হয়েছেন। তানজিদ হাসান তামিম, নাজমুল হোসেন শান্ত, তাওহীদ হৃদয়, জাকের আলী, তাসকিন আহমেদরা এভাবে আউট হওয়ায় তাদের ব্যাটিং স্কিল নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। সিরিজ জয়ের লক্ষ্য পূরণে ব্যাটারদের যেখানে গুছিয়ে খেলার কথা, সেখানে এলোমেলো ব্যাটিং করে গুটিয়ে গেছে ১৮৬ রানে। হৃদয় ৭৮ বলে ৫১ রান, জাকের ৩৫ বলে ২৭ আর ইমন ৪৪ বলে ২৮ রান করেন। তিনটি করে উইকেট গেছে স্বাগতিক দুই পেসার আসিথা ফার্নান্দো ও দুশমন্ত চামিরার দখলে। লঙ্কান পেস জুটি জয়ের পথ মসৃণ করতে পারলেও ম্লান ছিলেন তাসকিনরা।

শ্রীলঙ্কা আগে ব্যাটিং নিয়ে ৭ উইকেটে ২৮৫ রান করায় মানসিকভাবে আগেই হেরে যায় বাংলাদেশ। লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে তাই লড়াই জমাতে পারেনি। পাল্লেকেলে স্টেডিয়ামের দুই দিকের দুই সবুজ গ্যালারি থেকে সিংহলিজ ভাষায় কুশল মেন্ডিসকে প্রেরণা দিয়ে গেলেন দর্শকরা। লঙ্কান এ টপঅর্ডারের হাফ সেঞ্চুরি পূরণ হওয়ার পর দর্শকের প্রত্যাশাও বেড়ে যায়। তারা চেয়েছিলেন বাংলাদেশি বোলারদের বিপক্ষে বড় শট খেলেন কুশল। তিনি সমর্থকদের প্রত্যাশা পূরণ করেন ১৬টি চার মেরে ৯৫ বলে ১০০ রান করেন। কুশলের ষষ্ঠ ওয়ানডে সেঞ্চুরি এটি। প্রথম ওয়ানডে শতকও ছিল বাংলাদেশের বিপক্ষে ২০১৭ সালে ডাম্বুলায় পরিত্যক্ত ম্যাচে। ১১৪ বলে ১২৪ রানে শামীম পাটোয়ারীকে ফিরতি ক্যাচ দিয়ে আউট হন কুশল। তাঁর ব্যাটেই মূলত ইনিংস গড়েছে শ্রীলঙ্কা। সেট হয়ে তাঁকে বড় ইনিংস খেলতে দেওয়া বাংলাদেশের বোলিং ব্যর্থতা। প্রেমাদাসা স্টেডিয়ামে তানভীর ইসলামদের যেভাবে বোলিং করতে দেখা গেছে, গতকাল তার ছিটেফোঁটাও ছিল না। পেস বা স্পিন কোনো বিভাগেই তেমন হুমকি হয়ে উঠতে পারেনি বাংলাদেশ। সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচে ৫ উইকেট পাওয়া বাঁহাতি স্পিনার তানভীর ছিলেন খরুচে। ১০ ওভারে ৬১ রান দিয়ে ১ উইকেট শিকার তাঁর।

কন্ডিশনের সুবিধা না পেলে বাংলাদেশের বোলাররা সংগ্রাম করেন। পাল্লেকেলেতেও সিরিজ নির্ধারণী ম্যাচে বোলিং বিভাগ স্বাভাবিক ছন্দ দেখাতে পারেনি। বাঁহাতি পেসার মুস্তাফিজ সিরিজজুড়েই কাঙ্ক্ষিত মানে ছিলেন না। কলম্বোর প্রথম ম্যাচে মাংসপেশিতে টান পড়ায় বল করেছেন ৬ ওভার। দ্বিতীয় ম্যাচে জানিত লিয়ানাগেকে আউট করে জয়ের পথ মসৃণ করলেও পারফরম্যান্সের দিক থেকে পেছনের সারির বোলার তিনি। গতকাল পাল্লেকেলেতে পেসারদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি ৫২ রান দিয়ে উইকেটশূন্য তিনি। সে তুলনায় চোট কাটিয়ে ফেরা তাসকিনের বুদ্ধিদীপ্ত বোলিং চোখে পড়ার মতোই। তিনি রান বেশি দিলেও উইকেট নিয়ে পুষিয়ে দেন। গতকালও গুরুত্বপূর্ণ দু’জন ব্যাটার চারিথ আসালঙ্কা আর দুনিথ ওয়ালালেগেকে আউট করেন তিনি। ইনিংসের শুরুতে পেসার তানজিম হাসান সাকিব যেভাবে ব্রেক থ্রু দিয়েছিলেন নিশান মাদুশঙ্কাকে আউট করে, সেই ছন্দ পরে দেখা যায়নি। ফলে পেস বোলারদের ব্যর্থ করে বড় সংগ্রহের দিকে এগিয়েছে শ্রীলঙ্কা। তিন পেসারের ২৬ ওভারে ২০টি চার ও দুটি ছয় মেরেছে স্বাগতিকরা।

Facebook Comments Box

Posted ৭:৫২ পূর্বাহ্ণ | বুধবার, ০৯ জুলাই ২০২৫

nykagoj.com |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

advertisement
advertisement
advertisement

এ বিভাগের আরও খবর

সম্পাদক
আফরোজা ইসলাম
কন্ট্রিবিঊটিং এডিটর
মনোয়ারুল ইসলাম
Contact

+1 845-392-8419

E-mail: nykagoj@gmail.com