বুধবার ৯ই অক্টোবর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ২৪শে আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

‘আমরা বিমান হামলায় মরিনি কিন্তু ক্ষুধায় মরছি’

আন্তর্জাতিক ডেস্ক   |   রবিবার, ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৪   |   প্রিন্ট   |   115 বার পঠিত   |   পড়ুন মিনিটে

‘আমরা বিমান হামলায় মরিনি কিন্তু ক্ষুধায় মরছি’

গাজায় খাবারের অভাব ক্রমাগত অসন্তোষ বাড়িয়ে তুলেছে। শুক্রবার খাবারের দাবিতে শত শত মানুষ বিক্ষোভ করেছেন। সেই বিক্ষোভে অংশ নিয়েছেন শিশুরাও। এসময় তারা প্লাস্টিকের বাটি, তোবড়ানো রান্নার পাত্র নিয়ে ভিড় জমান। তবে তাদের ভাগ্যে জোটে খুবই অল্প পরিমাণে খাবার। সরবরাহ কমার কারণে খাদ্যবস্তুর দাম আকাশ ছুঁয়েছে।

বিক্ষোভে কিছু শিশু প্ল্যাকার্ড নিয়েও অবস্থান নেয়। তাদের মধ্যে এক শিশুর প্ল্যাকার্ডে লেখা ছিল- ‘আমরা বিমান হামলায় মরিনি কিন্তু ক্ষুধায় মরছি।’

বিক্ষোভে অংশ নেওয়া উদ্বাস্তু শিবিরের এক বাসিন্দা প্রশ্ন করেন, আমরা না হয় টিকে আছি, কিন্তু ৪-৫ বছর বয়সী বাচ্চারা কী অপরাধ করেছে যে তারা ক্ষুধা নিয়ে ঘুমাতে যাচ্ছে, আর ক্ষুধা নিয়ে জেগে উঠছে?

এদিকে ১৯ ফেব্রুয়ারি ইউনিসেফ জানায়, গাজায় দুই বছরের কম বয়সী শিশুদের প্রতি ছয় জনের একজন অপুষ্টিতে ভুগছে।

কুড়িয়ে পাওয়া, পচন ধরা ভুট্টার দানা, পশুখাদ্য, এমনকি গাছের পাতা খেয়ে ক্ষুধা দমিয়ে রাখছে গাজার উদ্বাস্তুরা।

খাবার নেই, ময়দা নেই, সুপেয় পানি নেই, এক নারী বলেন। আমরা প্রতিবেশীদের কাছে ভিক্ষা করছি। বাড়িতে একটা পয়সাও নেই। আমরা দরজায় দরজায় যাচ্ছি, কেউ আমাদের ভিক্ষা দিচ্ছে না।

এদিকে উত্তর গাজায় অবস্থিত জাবালিয়া উদ্বাস্তু শিবিরে খাদ্যের তীব্র আকাল। পরিবারের শিশুদের মুখে খাবার তুলে দিতে নিজের দুটি ঘোড়া জবাই করতে বাধ্য হন উদ্বাস্তু আবু জিবরিল।

ঘোড়া জবাই করে বাচ্চাদের খাওয়ানো ছাড়া কোনো পথ ছিল না, ক্ষুধা আমাদের মেরে ফেলছে, তিনি সংবাদ সংস্থা এএফপিকে বলেন।

ঘোড়ার মাংসের সাথে ভাত রান্না করে পরিবার ও প্রতিবেশীদের মাঝে বিলি করেন তিনি। তবে খাবারটি যে ঘোড়ার মাংস দিয়ে তৈরি, তা সবার থেকে গোপন রাখা হয়।

গত বছরের ৭ অক্টোবর ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস ইসরায়েলে হামলা চালানোর পর গাজায় নির্বিচার হামলা শুরু করে ইসরায়েল। এর আগে গাজার সবচেয়ে বড় উদ্বাস্তু শিবির ছিল জাবালিয়া।

হামলা শুরুর পর নিকটবর্তী বেইত হানুন থেকে পালিয়ে জাবালিয়ায় আশ্রয় নেন ৬০ বছর বয়সী জিবরিল ও তার পরিবার। উদ্বাস্তু শিবিরে তাবুর নিচে দিন যাপন করছেন তিনি ও তার পরিবার।

মাত্র আধা বর্গ মাইলের এই উদ্বাস্তু শিবির স্থাপন করা হয় ১৯৪৮ সালে। আগে থেকেই এখানে দূষিত পানি, অনিয়মিত বিদ্যুৎ সরবরাহ আর ঘনবসতির সমস্যা ছিল। এখানে বর্তমানে এক লাখেরও বেশি উদ্বাস্তু বসবাস করছেন।

ইসরায়েলের হামলার কারণে এখানে মানবিক সহায়তা পাঠাতে অপারগ হয়ে পড়েছে সাহায্যকারী সংস্থাগুলো, ফলে খাদ্য সংকট দেখা দিয়েছে। বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি সম্প্রতি জানিয়েছে গাজার প্রায় ২২ লাখ মানুষের মাঝে দুর্ভিক্ষ দেখা দিতে পারে শিগগিরই।

শুক্রবার জাবালিয়া থেকে চার মাইল দূরের এক হাসপাতালে অপুষ্টিতে মারা যায় দুই মাস বয়সী এক শিশু, জানিয়েছে গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। এ ছাড়া ৭ অক্টোবর থেকে এ পর্যন্ত যুদ্ধে গাজার ২৯ হাজার ৬০৬ জন নিহত হয়েছেন।

Facebook Comments Box

Posted ২:৩০ অপরাহ্ণ | রবিবার, ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৪

nykagoj.com |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

advertisement
advertisement
advertisement
সম্পাদক
আফরোজা ইসলাম
কন্ট্রিবিঊটিং এডিটর
মনোয়ারুল ইসলাম
Contact

+1 845-392-8419

E-mail: nykagoj@gmail.com