কৈশরে যখন মনির খান,আসিফ,এস ডি রুবেলদের গান শুনতাম,জেমস,বিপ্লব,আয়ুব বাচ্চুদের গান শুনা লোকেরা আমাদের ভাবতো ক্ষ্যাত। রুচি নেই,নিম্ন রুচির মানুষ।ওসব গান বাজে টেইলারের ,মাইকের দোকানে।
আমি আবার শরীফ উদ্দিন,লতিফ সরকার,কাজল দেওয়ানদের গান যারা শুনতো তাদের তেমনই ভাবতাম আমাকে যেমন ভাবা হতো।এক অপরের রুচির প্রতি ওয়াক থু অবস্থা!!!
এই যে রুচির বিচার,এর মানদন্ড কার হাতে?
আসলে রুচিটাই বা কী?!
হিরো আলম গানের নামে,অভিনয়ের নামে যা করেছে তাতে রাগ তো উঠেছে আমারও। কেন রাগ হবে আমার? কদিন তাকে ফলো করেছি মজার কান্ডা কারখানা দেখতে।এখন আনফলো করে রেখেছি।কেন আমার মনে হলো আমি উচা জাতের,ওকে ফলো করলে জাত চলে যাবে?
সে কাউকে জোর করেনি কোনো কিছু শুনতে বা দেখতে।তবু একজন মানুুষের উদ্ভট সব কর্মকান্ড আমাদের বিনোদনের খোরাক হয়ে গেলো। সার্কাসের বাদঁড় ভেবে তাকে নিয়ে মজা নিলাম।ওঁর নিম্নমানের কাজ আমাদের ভাবতে শেখাল আমরা কতটা উচাঁ রুচির মানুষ।
তবু,ধীরে ধীরে সে এমন সব জিনিস অর্জন করলো যা অনেক গুনী মানুষের কল্পনারও বাহিরে। তার পরিচিতি,খ্যাতি এবং অর্থনৈতিক স্বচ্ছলতা সাধারণ মানুষের চেয়ে অনেক বেশি। সে একজন সফল ব্যক্তি।
সে তো রোল মডেল নয়।সে তা চায়ওনি। একে আমরা সৃষ্টি করিনি,লালন করেছি,সুযোগ দিয়েছে। যাকে ট্রল,নিন্দা করেছি,হেসেছি,সে -ই এখন আমার চেয়ে অনেক ভাবেই সফল!এও সহ্য করা যায়।এ ও সম্ভব।
আর হিরো আলমের থামার কোনো লক্ষণ নেই।সে দুর্বার!
কে কী ভাবলো,বললো,সে তা থোড়াই কেয়ার করে।
আমি তাকে ইগনোর করছি,কারণ তার কাজ আমার ভালো লাগে না,আমি উচাঁ শ্রেণীর রুচির মানুষ।
তা সে নির্বাচনে গেলো।তাকে আমরা আঘাত করলাম।
সে অধিকার আমরা অর্জন করেছি।যে এই সমাজের,রাষ্ট্রের সংস্কৃতির বারোটা বাজিয়েছে,তারও আজ বারোটা বাজিয়ে দিলাম।শুদ্রের কী সাহস! ব্রাহ্মণদের সাথে সমান হতে আসে।
তাই তাকে পিটিয়ে দিলাম।বুঝিয়ে দিলাম,অসভ্যদের এই সমাজে জায়গা নেই।এখানে সভ্য,সুশীল,রুচিশীলরাই কেবল রাষ্ট্রীয় দায়িত্বে বসতে পারবে বা বসতে চাওয়ার বাসনা কেবল তাদের।হিরো আলমদের দুঃসাহের জবাব আজকে আবারো দেয়া হলো। শখের বসে দু চারটা হিরো আলামকে ছাড় দেয়া যায়,বাড়তে দেয়া যায়,কিন্তু লড়তে দেয়া যায় না।
এক কাজ করুন,সভ্যতার সার্টিফিকেট,রুচির সনদ চালু করুন। যারা আপনাদের মানদন্ড পূরণ করতে পারবে না,তাদের বঙ্গোপোসাগরে ফেলে দিন।
এই দেশটা শুধু রুচিবান,ক্ষমতাবান,সুন্দর,সুশীলদের বসবাসের জন্য হোক।
তাকে রুচির জন্য মাইর দেয়া না হলে,কেন দেয়া হলো? আর যে কারণেই দেয়া হোক না কেন,মানুষের হাসির রিয়েক্ট,এই যে সন্তুষ্টি,তা কেন।কেন আজ অনেকের ঈদের দিন।?কেন মনে হচ্ছে,উচিত শিক্ষা হয়েছে।জা*নোয়ারের দল হা*মলা করেছে,তা বুঝলাম,তাকে সমর্থন দিচ্ছে কারা? কেন?
— ©Main Uddin
(ফেসবুক থেকে নেয়া)