খেলা ডেস্ক | বৃহস্পতিবার, ০৬ জুলাই ২০২৩ | প্রিন্ট | 69 বার পঠিত | পড়ুন মিনিটে
হুট করে সংবাদ সম্মেলন ডেকে দীর্ঘ ১৬ বছরের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটকে বিদায় বলেছেন তামিম ইকবাল। বৃহস্পতিবার চট্টগ্রামের একটি হোটেলে সংবাদ সম্মেলন করে এই সিদ্ধান্ত জানিয়েছেন তিনি।
তামিমের এমন আকস্মিক বিদায়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে মিশ্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে। কেউ কেউ তামিমের সিদ্ধান্তকে সাধুবাদ জানালেও এমন বিদায় মেনে নিতে পারছেন না অনেকেই। তামিমের এমন ঘোষণায় অবাক হয়েছেন মোহাম্মদ আশরাফুল। সামাজিক মাধ্যম ফেসবুক লাইভে এসে বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের সাবেক অধিনায়ক বলেছেন, ‘তামিম ইকবাল আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে অবসর নিয়ে ফেলেছেন। এটা শুনে অবাক হয়েছি। ২০০৭ সালে আমি ও নাফীস ইকবাল একসঙ্গে অনূর্ধ্ব-১৭ এশিয়া কাপ খেলতে গিয়েছিলাম পাকিস্তানে। নাফীস অধিনায়ক ছিল, আমি ছিলাম সহ-অধিনায়ক। তখন থেকেই আসলে আমি তামিমকে চিনি। সে এয়ারপোর্টে এসেছিল হাফপ্যান্ট পরে। যদিও আমিও তখন ছোট ছিলাম। তামিমও অনেক ছোট ছিল। আমাদের থেকে সে ৪-৫ বছরের জুনিয়র ছিল।’
তামিমকে আবেগপ্রবণ আখ্যা দিয়ে সাবেক এই অধিনায়ক বলেন, ‘যতটুকু চিনি, সে সিদ্ধান্ত হুট করে নেয়। তবে খুব অনড় থাকে। তামিম সবার পরিসংখ্যান মনে রাখে। তবে তার সিদ্ধান্তে একটু অবাক হয়েছি। তবে এটাও ঠিক সে চমৎকার একটা সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তামিম একটু ভিন্ন, বেশিই আবেগপ্রবণ। ওর গত কয়েকটা সিরিজ চোটে যাচ্ছিল। আফগানিস্তানের বিপক্ষে তার শুরুটা ভালো হয়নি।’
তামিমের অবসর নিয়ে আশরাফুল বলেন, ‘তামিমের এভাবে সরে যাওয়াটা আমি জানি না কতটুকু ভালো হয়েছে। আবার আরেক দিকে যদি চিন্তা করি। সে আসলে সবকিছু হুটহাট করে। ২০২২ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপেও সে যায়নি। যদিও সে লম্বা সময় তখন বাইরে ছিল। চোটের কারণে সে এক বছর টি-টোয়েন্টির বাইরে ছিল। সেখান থেকেই হয়তো সিদ্ধান্ত নিয়েছে, মিডিয়ায় যখন কথা হচ্ছিল তাকে নেবে কিনা। তখন নিজে থেকে সরে গিয়েছে।’
তামিমের প্রতি আশরাফুলের অনুরোধ, কিছুদিন বিশ্রাম নিয়ে হলেও যেন আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ফিরে আসে তামিম। লাইভে আশরাফুল বলেন, ‘তামিম গত ১৯টা বছর তুমি আমাদের অনেক বিনোদন দিয়েছ। আমি বলব ২০১৪-১৮ পর্যন্ত তোমার ক্যারিয়ারের সেরা সময় গিয়েছে। ওই সময় তোমার গড় ৭০+ ছিল। অসাধারণ নেতৃত্ব দিয়েছ। বাংলাদেশের হয়ে অনেক অবদান রেখেছ। যদিও তুমি আমার অনেক জুনিয়র। যেখানে আমি অবসর নিইনি। মাশরাফি অবসর গ্রহণ করেনি। তুমি সিদ্ধান্ত নিয়েছে। আমি আশা করব ঘরোয়া ক্রিকেটে সে আরও ৩-৪ বছর খেলবে। কিছুদিন বিশ্রাম নিয়ে আবার হয়তো আন্তর্জাতিক ক্রিকেটেও আসতে পারে। কারণ অবসর নেওয়ার মতন তার বয়স এমন কিছু হয়নি। চোটে অবশ্য তামিম একটু বেশিই পড়েছেন। শেষ কয়েকটা বছর বেশ কয়েকটি সিরিজের আগে দেখা যাচ্ছিল সে শতভাগ ফিট থাকত না।’
ক্যারিয়ারের শুরু থেকেই বাংলাদেশের একমাত্র ওপেনার হিসেবে আছেন তামিম। অনেক ওপেনার আসে যায়, কিন্তু তামিমের ওপেনিং পজিশনটা কেউ নিতে পারেনি। যেটা সবচেয়ে কঠিন জানিয়ে আশরাফুল বলেন, ‘ওপেনার হিসেবে ২০০৭ থেকে শুরু করে এখন পর্যন্ত ওপেনিং করাটা ক্রিকেটের সবচেয়ে কঠিন। সে জিনিসটা তুমি করেছ। তাই আমার হঠাৎ করে মনে হলো, তুমি অন্যান্য ক্রিকেটারদের চেয়ে ভিন্ন, সেটা বলি সবাইকে। আমি মনে করি, সঠিক সিদ্ধান্ত নিয়েছ। যেহেতু বিশ্বকাপের আরেকটা চাপ থাকত, আর এই সিরিজটাও এত সহজ হবে না।’
এর আগে অবসর ঘোষণায় তামিম জানিয়েছেন, ‘হুট করে সিদ্ধান্ত নেননি তিনি। কিছুদিন ধরে বিষয়টি নিয়ে ভাবছিলেন। পরিবারের সঙ্গেও এটা নিয়ে কথা বলছিলেন।’
তিনি বলেন, ‘আমার মনে হয়েছে, অবসর নেওয়ার জন্য এটা সঠিক সময়। আমি সবসময় বলি, আমি ক্রিকেট খেলি আমার বাবার স্বপ্ন পূরণ করার জন্য। কতটা তার স্বপ্ন পূরণ করতে পেরেছি জানি না। তবে সৎ থেকে শতভাগ দেওয়ার সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছি। অবসরের আরও কিছু কারণ আছে। আমি মনে করি না, সেগুলো এখানে বলা দরকার।’
Posted ১১:১০ পূর্বাহ্ণ | বৃহস্পতিবার, ০৬ জুলাই ২০২৩
nykagoj.com | Stuff Reporter