মঙ্গলবার ৭ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ২৪শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

মিলনের মহড়ায় বর্ণাঢ্য আয়োজনে গিয়াস আহমেদকে সংবর্ধনা

নিজস্ব প্রতিবেদক   |   শুক্রবার, ১২ মে ২০২৩   |   প্রিন্ট   |   295 বার পঠিত   |   পড়ুন মিনিটে

মিলনের মহড়ায় বর্ণাঢ্য আয়োজনে গিয়াস আহমেদকে সংবর্ধনা

বর্ণাঢ্য আয়োজনে গিয়াস আহমেদকে সংবর্ধনা

ছাত্র রাজনীতি দিয়ে জাতীয়তাবাদের রাজনীতিতে হাতেখড়ি গিয়াস আহমেদের। নেতৃত্ব দিয়েছেন ঢাকার দোহার থানা ছাত্রদলের সভাপতি, রমনা থানার ছাত্রদলের সাংগঠনিক সম্পাদক এবং ঢাকা জেলা ছাত্রদলের সভাপতির। নব্বইয়ে এরশাদবিরোধী আন্দোলনে গুরুত্বপুর্ণ ভূমিকা রেখেছেন। ছিলেন কেন্দ্রীয় বিএনপির আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক।

বাংলাদেশের রাজনীতির ধারাবাহিকতা বজায় রেখেছেন যুক্তরাষ্ট্রেও। যুক্তরাষ্ট্র বিএনপির সিনিয়র সহ-সভাপতি ছিলেন তিনি। মূলধারার রাজনীতিতেও নিজেকে নিয়ে গেছেন বহু দূর। ব্যবসায়ী হিসাবেও সফল গিয়াস আহমেদ। ঢাকা জেলার কৃতি সন্তান গিয়াস আহমেদকে সম্প্রতি কেন্দ্রীয় বিএনপির সদস্য করা হয়েছে। এ কারণে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাতে এবং গিয়াস আহমেদকে সংবর্ধনা দিতে ৮ মে উডসাইডের গুলশান টেরেসে বর্ণাঢ্য এক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।

সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে যুক্তরাষ্ট্র বিএনপি, অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের সর্বস্তরের নেতা-কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন। সর্বস্তরের নেতা-কর্মীরা বর্তমান সরকারের কবল থেকে দেশকে মুক্ত করতে আন্তর্জাতিক জনমত গঠনের বিকল্প নেই বলে অভিমত ব্যক্ত করেন। এজন্য সকলেই যুক্তরাষ্ট্র কংগ্রেসে লবিংয়ের জন্য ঐক্যবদ্ধ ভূমিকায় অবতীর্ণ হওয়ার আহ্বান জানান।

অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন সাবেক মন্ত্রী ও বিএনপি স্থায়ী কমিটির প্রবীণতম সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন। তিনি অভিযোগ করেন, বাংলাদেশের গণতন্ত্র বিপন্ন, জনগণের মৌলিক অধিকার নিয়ে ছিনিমিনি চলছে, উন্নয়নের নামে হরিলুটের রাজত্ব কায়েম করা হয়েছে। সদ্য স্বাধীন বাংলাদেশেও তারা একই কাণ্ড করেছিল। সমাজতান্ত্রিক অর্থনীতির নামে রাষ্ট্রীয় সম্পদ লুটতরাজ করায় ৭৪ সালে বাংলাদেশে দুর্ভিক্ষ তৈরী হয়েছিল।

তিনি বলেন, গায়ের জোরে ক্ষমতায় থেকে তারা অর্থনীতিকে ধ্বংস করেছে। কখনোই তারা পারবে না অর্থনীতিকে মেরামত করতে। বিচার ব্যবস্থাকে দলীয়করণ করে সম্পূর্ণভাবে ধ্বংস করা হয়েছে বলেও অভিযোগ করেন বিএনপির এই নেতা। মানুষ সুাবিচার পায় না। যা বিচার হয় তা সরকারের পক্ষ থেকে দিক-নির্দেশনার ভিত্তিতে। এসব কারণে বাংলাদেশের মানুষের পিঠ দেয়ালে ঠেকে গেছে। এ ধরনের অপকর্মের প্রতিবাদ দূরের কথা নিন্দা জানালেও সরকারের বিশেষ মহলের রোষানলে পড়তে হচ্ছে বলে অভিযোগ করেন খন্দকার মোশারফ।

বিএনপি নেতা জয়নাল আবদিন ফারুক সকলকে অভিনন্দন জানিয়ে বলেন, কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য হিসাবে গিয়াস আহমেদ, জিল্লুর রহমান এবং মিল্টন ভূইয়ার দায়িত্ব হচ্ছে শেখ হাসিনার পদত্যাগের আন্দোলনকে প্রবাসে সুসংগঠিত করা। তাহলে বাংলাদেশের নেতা-কর্মীরা আরো উজ্জীবিত হবেন কেয়ারটেকার সরকারের দাবি আদায়ের আন্দোলনে। ‘আমরা ঢাকাবাসী’ ব্যানারে অনুষ্ঠিত সংবর্ধনায় সভাপতিত্ব করেন এম. বাসেত রহমান। সঞ্চালনায় ছিলেন সোহরাব হোসেন ও গিয়াস উদ্দিন। ঢাকা থেকে ভার্চুয়ালে আরো বক্তব্য দেন বিএনপি নেতা মীর্জা আব্বাস, খায়রুল কবীর খোকন প্রমুখ। শুরুতে বিএনপি, জাসাস, যুবদল, ছাত্রদল ছাড়াও বিভিন্ন সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠনের পক্ষ থেকে ফুলেল শুভেচ্ছা জানানো হয় গিয়াস আহমেদকে।

অনুষ্ঠান-মঞ্চে উপবেশন এবং বক্তব্য দেন বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা বেবী নাজনীন, চিত্রনায়ক হেলাল খান, যুক্তরাষ্ট্র বিএনপির সাবেক সভাপতি আব্দুল লতিফ সম্রাট, সাবেক সাধারণ সম্পাদক জিল্লুর রহমান, সাবেক যুগ্ম সম্পাদক মিজানুর রহমান মিল্টন ভূইয়া, সাবেক ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মোস্তফা কামাল পাশা বাবুল প্রমুখ।

 

বক্তারা বলেন, এরশাদবিরোধী আন্দোলন, ১/১১ পরবর্তী সময়ের তুমুল আন্দোলনের মত এখনও সোচ্চার হতে হবে ‘দেশ বাঁচানোর আন্দোলনে, গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার কল্পে।’ নেতা-কর্মীদের ফুলেল শুভেচ্ছা ও ভালবাসায় সিক্ত গিয়াস আহমেদ বলেন, সাংগঠনিক নেতৃত্ব নিয়ে মতভেদ দূরে ঠেলে এখন হোয়াইট হাউজ, স্টেট ডিপার্টমেন্ট এবং জাতিসংঘের সামনে দুর্বার আন্দোলন রচনা করতে হবে। অতি সম্প্রতি বিশ্বব্যাংকের সামনে শেখ হাসিনার স্বৈরাচারী আচরণের প্রতিবাদে বিএনপি ও সমমনা প্রবাসীরা যে শো-ডাউন দেখিয়েছেন তা অব্যাহত রাখতে হবে আন্তর্জাতিক জনমত গঠনে।

সমাবেশে নেতৃবৃন্দের মধ্যে আরো ছিলেন নূসরাত আহমেদ, জসীম ভূইয়া, ভিপি জসীম, এম এ বাতিন, মাওলানা অলিউল্লাহ আতিকুর রহমান, হাবিবুর রহমান সেলিম রেজা, কাজী আমিনুর রহমান, আমিনুল ইসলাম চৌধুরী, আলমগীর কবীর, পারভেজ সাজ্জাদ, হুমায়ূন কবীর, কাজী আজম, ফিরোজ আহমেদ, শাহাদৎ হোসেন রাজু, আনিসুর রহমান, জাহাঙ্গির হোসাইন, সৈয়দা মাহমুদা শিরিন, সরোয়ার খান বাবু, জাহাঙ্গীর সোহরাওয়ার্দি প্রমুখ। উল্লেখ্য, গিয়াস আহমেদ ঢাকা দোহার থানা ছাত্রদলের সভাপতি, রমনা থানার ছাত্র দলের সাংগঠনিক সম্পাদক, ঢাকা জেলা ছাত্রদলের সভাপতি হিসাবে এরশাদবিরোধী আন্দোলনে গুরুত্বপুর্ণ ভূমিকা পালন করেন। যুক্তরাষ্ট্রে এসে তিনি এরশাদবিরোধী আন্দোলন করেন।

যুক্তরাষ্ট্র বিএনপি প্রতিষ্ঠার আগে গিয়াস আহমেদের নেতৃত্বে ১৯৮৮-এর মার্চ মাসে যুক্তরাষ্ট্র ছাত্রদল গঠন করা হয় এবং তিনি প্রথম সভাপতি নির্বাচিত হন। যুক্তরাষ্ট্র বিএনপি গঠনেও তিনি অন্যতম ভুমিকা পালন করেন। যুক্তরাষ্ট্র বিএনপির প্রথম আহবায়ক কমিটির তিনি একজন অন্যতম সদস্য ছিলেন। তিনি যুক্তরাষ্ট্র স্বেচ্ছাসেবক দলের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি, যুক্তরাষ্ট্র বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক, নিউইয়র্ক স্টেট বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা সভাপতিও ছিলেন।

গিয়াস আহমেদ যুক্তরাষ্ট্র বিএনপির সিনিয়র সহ-সভাপতি, ভারপ্রাপ্ত সভাপতি হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন। ওয়ান ইলেভেনের সময় বেগম খালেদা জিয়া তার নিজস্ব ক্ষমতাবলে গিয়াস আহমেদকে কেন্দ্রীয় বিএনপির আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক হিসাবে নিয়োগ দেন,যা এখনো বাতিল করা হয়নি। সবশেষে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারপারসন তারেক রহমান গিয়াস আহমেদকে কেন্দ্রীয় বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য করেন।

গিয়াস আহমেদ ২০০২ নিউইয়র্ক স্টেট সিনেটর হিসাবে নির্বাচন করে আলোড়ন সৃষ্টি করেন। ২০০৪ সালে তিনি নিউইয়র্ক স্টেট অ্যাসেম্বলি সদস্য হিসেবেও নির্বাচন করেন। তিনি বাংলাদেশ কংগ্রেসনাল ককাস গঠনে অগ্রণি ভুমিকা পালন করেন। তিনি বাংলাদেশ কংগ্রেসের প্রতিনিধি হিসাবে তৎকালীন কংগ্রেস সদস্য জোসেফ ক্রাউলি এবং গ্রেগরি মিকসের সাথে বাংলাদেশে গিয়ে বাংলাদেশের পক্ষে জোরালো ভুমিকা পালন করেন। জাতিসংঘের অর্থায়নে চট্টগ্রামে এশিয়ান উইম্যান ইউনিভার্সিটি গঠনেও গিয়াস আহমেদ গুরত্বপূর্ণ ভুমিকা পালন করেন।

Facebook Comments Box

Posted ২:০৮ পূর্বাহ্ণ | শুক্রবার, ১২ মে ২০২৩

nykagoj.com |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

advertisement
advertisement
advertisement

ক্যালেন্ডার

সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
 
১০১১১২
১৩১৪১৫১৬১৭১৮১৯
২০২১২২২৩২৪২৫২৬
২৭২৮২৯৩০৩১  
সম্পাদক
আফরোজা ইসলাম
কন্ট্রিবিঊটিং এডিটর
মনোয়ারুল ইসলাম
Contact

+1 845-392-8419

E-mail: nykagoj@gmail.com