
খেলাধুলা ডেস্ক | বৃহস্পতিবার, ০৫ ডিসেম্বর ২০২৪ | প্রিন্ট | 26 বার পঠিত | পড়ুন মিনিটে
রাত জেগে খেলা দেখা বেশির ভাগ সময় উপভোগ্য হয় না। যেমন ছিল না ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে প্রথম টেস্ট। বরং বিশাল হার দেখে সমর্থকদের হয়তো মনে হয়ে থাকতে পারে, শীতের রাতে অযথা আরামের ঘুম নষ্ট করা। দ্বিতীয় টেস্টে সে আক্ষেপে পুড়তে হয়নি।
জ্যামাইকার স্যাবাইনা পার্কে সদ্য সমাপ্ত দ্বিতীয় টেস্টে অলআউট ক্রিকেট খেলে ১০১ রানের জয়ে আসল টেস্টেরই স্বাদ উপহার দিয়েছেন মেহেদী হাসান মিরাজরা। বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপে নিজেদের শেষ সিরিজটি ১-১ ব্যবধানে ড্র করে পয়েন্ট টেবিলেও ওয়েস্ট ইন্ডিজকে পেছনে ফেলেছে বাংলাদেশ। ১২ টেস্টের চারটিতে জিতে টেবিলে অষ্টম। ১১ টেস্ট খেলে ৩২ পয়েন্ট নিয়ে তলানিতে উইন্ডিজ। সমতার এই সিরিজ দিয়ে শেষ হলো দু’দলের ২০২৩-২০২৫ সালের টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ সাইকেল।
আসলে রাত জেগে খেলা দেখার আগ্রহ বাড়িয়ে দেয় প্রথম ইনিংসে ওয়েস্ট ইন্ডিজের ১৪৬ রানে অলআউট হওয়া। ১৮ রানে এগিয়ে থেকে দ্বিতীয় ইনিংসে মিরাজদের সাহসী ব্যাটিং করা জয়ের স্বপ্ন দেখায়। মঙ্গলবার রাতে সে স্বপ্ন সত্যি হয়। তাই তো গভীর রাতে পাশের বাড়ি থেকে ভেসে আসে উচ্ছ্বসিত কণ্ঠস্বর। মিনি স্লোগান– ‘জিতে গেছি, জিতে গেছি।’ মিরাজরা জিতলে জেতে বাংলাদেশ।
হাবিবুল বাশারের দৃষ্টিতে রাত জেগে খেলা দেখার সার্থকতা জয়ে।
উইন্ডিজের মাটিতে টেস্ট জয় আশাবাদী করছে বিসিবি সভাপতি ফারুক আহমেদকে, ‘বাংলাদেশ ভারত ও দক্ষিণ আফ্রিকার কাছে হারের আগে পাকিস্তানে দুটি টেস্ট জিতেছে। এবার জিতল ওয়েস্ট ইন্ডিজে। আমাদের দলটা অধারাবাহিক, তবে সক্ষমতা আছে। আমি বিশ্বাস করি, সামর্থ্য অনুযায়ী খেলতে পারলে যে কোনো কন্ডিশনে যে কোনো দলের বিপক্ষে জেতা সম্ভব। ছেলেরা ব্যাকফুটে থেকে ফিরে এসেছে। একেই বলে সক্ষমতা। তারা যত তাড়াতাড়ি নিজেদের বুঝতে পারবে এবং উন্নতি করবে, তত ধারাবাহিক হতে পারবে। বিসিবি সভাপতি মনে করেন, টেস্ট জয় ওয়ানডে সিরিজে ভালো খেলতে প্রেরণা জোগাবে, ‘অধিনায়কের সঙ্গে আমার কথা হয়েছে। আমার মনে হয়, এই জয় ওয়ানডে সিরিজে ভালো খেলার সহায়ক হবে। কারণ, টেস্ট জয় খেলোয়াড়দের মধ্যে আত্মবিশ্বাস দেবে, তারাও জিততে পারে।’
কেমার রোচদের দিয়ে বাংলাদেশের ব্যাটিং গুঁড়িয়ে দিতেই কিংস্টনে পেসবান্ধব উইকেট করা হয়েছিল। শেষ পর্যন্ত নিজেদের পাতা ফাঁদেই পড়েছে তারা। প্রথম ইনিংসে বাংলাদেশকে ১৬৪ রানে বেঁধে ফেলে নিজেরা অলআউট ১৪৬ রানে। সাবেক প্রধান নির্বাচক মিনহাজুল আবেদীন নান্নু উচ্ছ্বসিত প্রশংসা করেন ক্রিকেটারদের, ‘অসাধারণ বোলিং করেছে। প্রথম ইনিংসে ওদের বড় রান করার সুযোগ দেয়নি। বাংলাদেশ দ্বিতীয় ইনিংসে খুবই বুদ্ধিমানের মতো কাজ করেছে দ্রুত রান তুলে। এই উইকেটে ২শর ওপরে রান তাড়া করা সব সময় কঠিন। জাকেরের ব্যাটিংটা ছিল বেশি কার্যকর। তৃতীয় ইনিংসে এভাবে শেষের দিকে ব্যাটিং করা চ্যালেঞ্জিং। সে যেভাবে ছয়গুলো মেরেছে, তাতেই খেলা ঘুরে গেছে।’ বাংলাদেশ দলের বিদেশের মাটিতে প্রথম টেস্ট সিরিজ জিতেছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজে, ২০০৯ সাল। সেবার ক্রিস গেইলরা না খেলায় ড্যারেন স্যামির টেস্ট দলকে সহজেই হারাতে পেরেছিলেন সাকিব আল হাসানরা। এবার ক্রেইগ ব্রাথওয়েটের উইন্ডিজ ছিল পূর্ণ শক্তির দল।
হাবিবুল বাশারের মতে, ‘এই জয়টা খুব দরকার ছিল। আমরা অনেক চাপে ছিলাম। পাকিস্তানে সিরিজ জয়ের পর ভারতে খুব খারাপ খেলেছি। বেশি কষ্ট পেয়েছি দেশে দক্ষিণ আফ্রিকার কাছে হোয়াইটওয়াশ হওয়ায়। ওই হারে দলের ওপর প্রভাব পড়েছিল। যেটার প্রতিফলন দেখা গেছে প্রথম টেস্টে। আমি খুবই খুশি দ্বিতীয় টেস্টে ছেলেরা ফিরে এসেছে। এই সিরিজে গুরুত্বপূর্ণ দুজন ব্যাটারকে ছাড়া খেলে জিতেছে। দ্বিতীয় ইনিংসে আমরা ব্যাটিংয়ে সাহস দেখিয়েছি। যে অ্যাটিটিউড দেখানো দরকার সেটা ছিল। তারা স্লেজিং করছিল, আক্রমণাত্মক ছিল। ওই সময়ে আমরা পাল্টা আক্রমণ করেছি। এটা আমাদের চরিত্রের বাইরে গিয়ে করা। তাসকিন এবং হাসানও উইকেটে থাকার চেষ্টা করেছে। আগে দেখেছি, বোলাররা ব্যাট করতে নেমে ভয় পাচ্ছে। নিজেকে ব্যাটার ভাবত না। এবার দেখলাম ব্যাটারদের সাপোর্ট করছে বোলাররা। তাইজুল ওই ইনিংস না খেললে রানটা অত বড় হতো না।’
Posted ৪:২২ পূর্বাহ্ণ | বৃহস্পতিবার, ০৫ ডিসেম্বর ২০২৪
nykagoj.com | Stuff Reporter