
খেলা ডেস্ক | রবিবার, ২৫ আগস্ট ২০২৪ | প্রিন্ট | 46 বার পঠিত | পড়ুন মিনিটে
টেস্ট ক্রিকেটে দেশের পক্ষে খেলা ব্যক্তিগত বড় ইনিংসের সব প্রথমের সঙ্গে জড়িয়ে মুশফিকুর রহিম। দেশের প্রথম ডাবল সেঞ্চুরিয়ান তিনি। রেকর্ড তিনটি ডাবল সেঞ্চুরি করা প্রথম ব্যাটারও। এই যে গতকাল পাকিস্তানের মাটিতে ১৯১ রানের বিশাল ইনিংস খেললেন, তার আগে কোনো বাংলাদেশি ব্যাটার পাকিস্তানের মাটিতে এতটা দাপুটে ইনিংস খেলেননি। এই অর্জনকে তো বলাই যায়– মুশফিকের পাকিস্তান জয়!
পাকিস্তানের মাটিতে প্রথম টেস্ট ম্যাচ খেলা উইকেটরক্ষক এ ব্যাটারের। রাওয়ালপিন্ডিতে স্বাগতিক বোলারদের হতাশায় ডুবিয়ে রানের পর রান সাজিয়ে পৌঁছে গিয়েছিলেন আরেকটি ডাবল সেঞ্চুরির খুব কাছে। মোহাম্মদ আলির করা অফ স্টাম্পের বাইরের বলে খেলতে গিয়ে ক্যাচ তুলে আউট না হলে আরও একটি ডাবল সেঞ্চুরি স্বাদ পেতেও পারতেন তিনি। অথচ চার বছর আগে পাকিস্তান সফর নিয়ে কি তুলকালামই না বাধিয়েছিলেন মুশফিক। বিসিবির চুক্তিভুক্ত ক্রিকেটার হওয়ার পরও নিরাপত্তার কারণে পাকিস্তানে খেলতে যেতে রাজি হননি। ২০২০ সালে রাওয়ালপিন্ডির খেলা সে ম্যাচটি ইনিংস ও ৪৪ রানে হেরেছিল বাংলাদেশ।
সেই একই মাঠে এবার কী দারুণ লড়াই বাংলাদেশের। চারটি হাফ সেঞ্চুরি ও একটি বড় সেঞ্চুরিতে স্বাগতিক পাকিস্তানকে পেছনে ফেলে ১১৭ রানের লিড নেয় দল। ৫৬৫ রানের বিশাল ইনিংস গড়ে তোলার নায়ক হলেন মুশফিক। তিনি নিজে রান করেছেন, অন্যকে রান করতে সহযোগিতা করেছেন জুটির সঙ্গী হয়ে। তাই তো মেহেদী হাসান মিরাজ নিজের ভালো ব্যাটিংয়ের কৃতিত্বও মুশফিককে দিলেন হাসিমুখে।
১৪৭ রানে মুমিনুল হক আউট হওয়ার পর মুশফিক নেমেছিলেন। ওপেনার সাদমান ইসলামকে নিয়ে ৫২ রানের জুটি করেন। সাদমান ৯৩ রানে আউট হলে চালকের আসন নেন অভিজ্ঞ মুশফিক। এর পর তাঁকে সঙ্গ দিতে কতজনই তো ক্রিজে গেছেন। সাকিব আল হাসান ঝটিকা বিদায় নেওয়ার পর লিটন কুমার দাসকে নিয়ে তৃতীয় দিনের খেলা শেষ করেন। দারুণ জমে গিয়েছিল এ দু’জনের জুটি। দু’জনই নামের পাশে হাফ সেঞ্চুরি নিয়ে শেষ করেছিলেন দিনের খেলা। যদিও চতুর্থ দিন সকালে ছন্দপতন ঘটে লিটনের আউটে। ১৬ রান যোগ করে আলাদা হন তারা। এর পরই শুরু হয় ব্যাটিংয়ের আসল শো। মেহেদী হাসান মিরাজকে সঙ্গে নিয়ে মাইলফলক স্পর্শ করেন মুশফিক।
পাকিস্তানের বিপক্ষে প্রথম আর সব মিলিয়ে একাদশ সেঞ্চুরি করেন তিনি। তামিম ইকবালকে পেছনে ফেলে টেস্ট সেঞ্চুরিতে দ্বিতীয় স্থানের দখল নেন। ১২ সেঞ্চুরি নিয়ে মুমিনুল হক শুধু তাঁর ওপরে। সপ্তম উইকেটে ১৯৬ রানের জুটি হয় দু’জনের। মিরাজ করেন ৭৭ রান। এই জুটির কল্যাণেই পাকিস্তানের বিপক্ষে সর্বোচ্চ রান করে বাংলাদেশ। ২২টি চার ও একটি ছয় দিয়ে সাজানো মুশফিকের ইনিংস। উইকেটরক্ষক এ ব্যাটার নিজে খেলেছেন, মিরাজকে পরামর্শ দিয়ে গেছেন পুরো সময়।
সংবাদ সম্মেলনে মিরাজ অগ্রজকে প্রশংসায় ভাসালেন, ‘আমাদের জুটি গড়ার পুরো কৃতিত্ব মুশফিকের। তিনি আমাকে সাপোর্ট দিয়ে গেছেন পুরো সময়। প্রথম থেকেই বলছিলেন– রান করার জন্য দারুণ উইকেট। শুধু দেখে খেলে যেতে থাক। আমাদের বোলাররা বিকেলে ভালো করেছে। কাল প্রবল শক্তি নিয়ে নামতে হবে। প্রথম সেশনে গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি উইকেট নিতে পারলে জয়ের সম্ভাবনা তৈরি হবে।’
পাকিস্তানের মাটিতে বাংলাদেশ দলের এই পারফরম্যান্স মুগ্ধ করেছে বিসিবি সভাপতি ফারুক আহমেদকে, ‘আমার মনে হয়, এটা অন্যতম সেরা একটি টেস্ট ম্যাচ, যেখানে অনেক রান তাড়া করার পর আমরা লিডে এসেছি। ১১৭ রান মনে হয় লিড হয়েছে। তার মধ্যে একটা উইকেট পেয়েছি। জয় অথবা ড্রতে শেষ হতে পারে। আজকে চমৎকার একটা দিন ছিল। মুশফিক সেঞ্চুরি করেছে। তার আগে সাদমান রান করেছে। মুমিনুল, মিরাজ রান করেছে। আমি আরও খুশি যে, বিদেশে এত ভালো খেলছি। দেশে তো আমরা সব সময় ভালো খেলি। পাকিস্তানের মাটিতে এই টেস্টে আমার মনে হয়, খুব ভালো অবস্থায় আছি।’
Posted ৩:৪৪ পূর্বাহ্ণ | রবিবার, ২৫ আগস্ট ২০২৪
nykagoj.com | Stuff Reporter