সোমবার ১২ই মে, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ২৯শে বৈশাখ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

শিরোনাম >>
শিরোনাম >>

খালেদা জিয়াকে মুক্তি না দিলে পরিণতি হবে ভয়াবহ: ফখরুল

ডেস্ক রিপোর্ট   |   শনিবার, ২৯ জুন ২০২৪   |   প্রিন্ট   |   114 বার পঠিত   |   পড়ুন মিনিটে

খালেদা জিয়াকে মুক্তি না দিলে পরিণতি হবে ভয়াবহ: ফখরুল

দলের চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার নিঃশর্ত মুক্তির দাবিতে রাজধানীতে সমাবেশ করেছে বিএনপি। সমাবেশ থেকে সরকার পতনের একদফা দাবিতে যুগপৎ আন্দোলনরত রাজনৈতিক দল এবং জোটগুলোকে খালেদা জিয়ার মুক্তির আন্দোলন, সংগ্রাম এবং লড়াই চালিয়ে যাওয়ার আহ্বান জানানো হয়। পাশাপাশি খালেদা জিয়ার মুক্তির আন্দোলন আরও তীব্র করারও ঘোষণা দিয়েছে বিএনপি। এতে প্রধান অতিথির বক্তব্যে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, আজকে বেগম খালেদা জিয়া ছাড়া গণতন্ত্র চিন্তা করতে পারি না। মিথ্যা মামলায় ৬ বছর কারাগারে আটক আছেন তিনি। আমরা খুব পরিষ্কার করে বলতে চাই, বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্ত করুন। অন্যথায় আপনাদেরকে যেকোনো পরিণতির জন্য তৈরি থাকতে হবে।

রাজধানীর নয়াপল্টন দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে শুক্রবার বিএনপি’র উদ্যোগে ‘দলের চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার নিঃশর্ত মুক্তির দাবিতে’ সমাবেশে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এসব কথা বলেন। বিকাল পৌনে ৩টায় পবিত্র কোরআন তিলাওয়াতের মধ্যদিয়ে সমাবেশ শুরু হয়। শেষ হয় সোয়া ৬টার দিকে। এই সমাবেশের জন্য দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে অস্থায়ী মঞ্চ তৈরি করা হয়।

খালেদা জিয়ার মুক্তির আন্দোলন প্রসঙ্গে বিএনপি মহাসচিব বলেন, আজকে আমি সকলের তরফ থেকে এবং দলের তরফ থেকে আহ্বান জানাতে চাই, বেগম খালেদা জিয়া আমাদের গণতন্ত্রের প্রতীক।

আমাদের আন্দোলনের প্রতীক। বেগম খালেদা জিয়াকে বাঁচাতে হলে তাকে রক্ষা করতে হবে। একই সঙ্গে আমাদের গণতন্ত্রকে রক্ষা করতে হলে এবং আমাদের অধিকারকে ফিরে আনতে হলে আমাদের সকলকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। একই সঙ্গে অন্যান্য রাজনৈতিক দলগুলোর  প্রতি আমি আহ্বান জানাতে চাই, আসুন, আজকে আমরা যেমন গণতান্ত্রিক অধিকারের জন্য যুগপৎ আন্দোলন, সংগ্রাম ও লড়াই করছি। দেশনেত্রীর মুক্তির আন্দোলনকে একইভাবে একত্রীভূত করে আমরা সবাই ঐক্যবদ্ধ হয়ে সোচ্চার আওয়াজ তুলি। 

ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের চুক্তির প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ভারতের সঙ্গে তারা চুক্তি করেছে। এই চুক্তিকে শুধু আমরা না, দেশের যারা আইন বিশেষজ্ঞ আছেন- তারা সবাই বলছেন, এটা বাংলাদেশ বিরোধী এবং স্বার্থ বিরোধী। আমরা পানি চাই, আমরা অভিন্ন ৫৪টি নদীর পানি চাই, আমরা সীমান্ত হত্যা বন্ধ চাই, যেসমস্ত সমস্যা আছে সেই সমস্যার সমাধান আমরা চাই। তা না করে এই সরকার সবকিছুই বিলিয়ে দিয়ে এসেছে।

বিএনপি নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে মামলা এবং আন্দোলনে মৃত নেতাকর্মীদের প্রসঙ্গে মির্জা ফখরুল বলেন, আমরা সমস্ত নেতাকর্মীদের মামলাগুলো প্রত্যাহার চাই। আমরা আমাদের সমস্ত নেতাকর্মী, যারা মারা গেছেন- তাদের জন্য ক্ষতিপূরর্ণ চাই। পাশাপাশি আমি তরুণদের বলতে চাই, তরুণদের হাতেই এদেশের ভবিষ্যৎ নির্ভর করেছে। বারবার সময় ও সুযোগ আসে না। আজকে জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করে সামনের দিকে এগিয়ে গিয়ে এই ভয়াবহ দানব, যে আমাদের দেশ ও গণতন্ত্রকে ধ্বংস করছে- তাদেরকে আমাদের নিচিহ্ন করতে হবে।
তিনি আরও বলেন, আজকে খেটে খাওয়া শ্রমিকরা চাল-ডাল, তেল কিনতে হিমশিম খাচ্ছেন। কেউ চিকিৎসা পায় না। লুট করে বিদেশে টাকা পাচার করেছেন। সেনাবাহিনীর সাবেক প্রধান, তিনি দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত। আমরা চিন্তা করতে পারি না। তিনি দেশের গণতন্ত্র ধ্বংসের সঙ্গে জড়িত। অবিশ্ববালাগে যখন দেখি, পুলিশের সাবেক প্রধান হাজার হাজার কোটি টাকার মালিক। এনবিআর’র একজন কর্মকর্তা কয়েক হাজার কোটি টাকার মালিক। কিন্তু রাঘববোয়ালদের এখন পর্যন্ত ধরা হচ্ছে না। আজকে এই দেশ এই লুটেরাদের হাতে নিরাপদ না।  আজকে এই সরকার দেশকে ধ্বংস করে দিয়েছে।

খালেদা জিয়া গণতন্ত্রের আন্দোলনের কথা উল্লেখ করে ফখরুল বলেন, এই আন্দোলন এখনো চলছে। এই আন্দোলনের জন্য আপনারা অনেকে অনেক ত্যাগ স্বীকার করেছেন। আমাদের ৬০ লক্ষ মানুষের বিরুদ্ধে। মিথ্যা মামলা দেয়া হয়েছে। আমাদের ৭০০-র বেশি মানুষকে গুম করে ফেলা হয়েছে। আজকে আমাদের প্রায় ৪ হাজার নেতাকর্মীকে মিথ্যা মামলায় সাজা দেয়া হয়েছে। উদ্দেশ্য একটাই, এদেশের গণতন্ত্রকে চিরদিনের জন্য নির্বাসিত করা।

মির্জা ফখরুল বলেন, বিএনপি’র নেতাকর্মীদের ত্যাগ এদেশের গণতান্ত্রিক ইতিহাসে স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে। কিন্তু এটাই এখন পর্যন্ত পর্যাপ্ত নয়। আমাদেরকে রাজপথে আরও তীব্র, তীব্র এবং তীব্র আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে। এই পরিবর্তন যে নিয়ে আসে, এই পরিবর্তন কিন্তু আমাদের মতো শুধুমাত্র বয়সী লোকদের দিয়ে আসে না। পরিবর্তন আসে তরুণ-যুবকদের মাধ্যমে।

বেগম খালেদা জিয়ার রাজনৈতিক সংগ্রামের প্রেক্ষাপট তুলে ধরে তিনি বলেন, ৯ বছর স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে এই রাজপথে সংগ্রাম করেছিলেন খালেদা জিয়া। তিনি নিজে পায়ে হেঁটে হেঁটে মিছিলে নেতৃত্ব দিয়েছেন। তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বারবার তাকে নির্যাতিত করা হয়েছে। কিন্তু তিনি কখনোই রাজপথ ছাড়েননি। সংগ্রাম করেই সেই স্বৈরাচারকে পরাজিত করে এদেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। সুতরাং এই বাংলাদেশে বেগম খালেদা জিয়া এবং গণতন্ত্র, এই দু’টাকে আলাদা করে দেখার সুযোগ নেই। এখন বাংলাদেশে গণতন্ত্র মানেই বেগম খালেদা জিয়া।

মির্জা ফখরুল বলেন, আমাদের লক্ষ্য একটা, সেটা হচ্ছে- বেগম খালেদা জিয়ার নিঃশর্ত মুক্তি চাই। কারণ তিনি এদেশের মানুষের পাশে থেকে সারাটা জীবন সংগ্রাম করেছেন। পাকিস্তানের সেনাবাহিনী তাকে গ্রেপ্তার করে পাকিস্তানের সেনানিবাসের কারাগারে বন্দি করেছিল। স্বাধীনতার পরেই তাকে মুক্ত করা হয়েছিল। সেজন্য আমি সবসময় বলি, বেগম খালেদা জিয়া হচ্ছেন এদেশের প্রথম নারী মুক্তিযোদ্ধা।

সভাপতির বক্তব্যে বিএনপি’র স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস বলেন, একটা ব্যানারে দেখলাম, খালেদা জিয়া সুস্থ হলে দেশ সুস্থ থাকবে। কথাটা ঠিক। বেগম খালেদা জিয়া অসুস্থ, আজকে পুরো জাতি অসুস্থ হয়ে গেছে। চোর-ডাকাত-বাটপার-বদমাইস সবাই মুক্তি পেয়ে যায়, আর বেগম খালেদা জিয়াকে আপনি (প্রধানমন্ত্রী) মুক্তি দিতে চান না। আমরা পরিষ্কার বলতে চাই, দেশনেত্রীকে যেকোনো মূল্যে মুক্তি দিতে হবে। তার মুক্তির স্বার্থে কোনো আপস কারও সঙ্গে হবে না, তার মুক্তি ইনশাআল্লাহ্ আমরা করে ছাড়বো। দেশনেত্রীর মুক্তির লক্ষ্যে কর্মসূচি দেয়া হয়েছে। এরপর আরও কর্মসূচি আসবে। আমি স্পষ্ট করে বলতে চাই, আমরা বহুদিন পরে প্রথম বেগম খালেদা জিয়াকে নিয়ে মুখ খুলেছি, এই মুক্তির আন্দোলন থামবে না, কোথায় গিয়ে থামবে সেটা আল্লাহ্ই বলতে পারেন।

Facebook Comments Box

Posted ৭:৪৫ অপরাহ্ণ | শনিবার, ২৯ জুন ২০২৪

nykagoj.com |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

advertisement
advertisement
advertisement
সম্পাদক
আফরোজা ইসলাম
কন্ট্রিবিঊটিং এডিটর
মনোয়ারুল ইসলাম
Contact

+1 845-392-8419

E-mail: nykagoj@gmail.com