বৃহস্পতিবার ১৬ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ২রা জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

মোদির ১০ বছরে কেমন করল ভারতের অর্থনীতি

নিউইয়র্ক ডেস্ক   |   বৃহস্পতিবার, ০৪ এপ্রিল ২০২৪   |   প্রিন্ট   |   54 বার পঠিত   |   পড়ুন মিনিটে

মোদির ১০ বছরে কেমন করল ভারতের অর্থনীতি

ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি যখন ২০১৪ সালে জয়ী হন, তখন আওয়াজ ওঠে ‘আচ্চে দিন আনে ওয়ালি হে’। অর্থাৎ সামনে সুদিন আসছে। আগামী ১৯ এপ্রিল শুরু হওয়া জাতীয় নির্বাচনের মাধ্যমে তিনি আরেক দফা প্রধানমন্ত্রী হতে চান।

মোদি যখন ক্ষমতায় আসেন, সে সময়ের তুলনায় ভারতের অর্থনীতির আকার এখন দ্বিগুণ। তবে এ অগ্রগতি পুরোপুরিই অসম। দেশটিতে ধনি-দরিদ্রের বৈষম্য বেড়েছে। ভারতের প্রবৃদ্ধির সিংহভাগ নির্ভর করে আয়ের সিঁড়ির শীর্ষে থাকা ব্যক্তিদের ওপর, যার মধ্যে আছে বড় ব্যবসায়িক গোষ্ঠী।

নিউইয়র্ক টাইমসের এক প্রতিবেদনে এসব তথ্য উঠে আসে। এতে বলা হয়, ভারতের ১৪০ কোটি জনসংখ্যার ৯০ শতাংশ বছরে সাড়ে ৩ হাজার ডলারের কম আয়ে জীবনযাপন করেন। তবে দরিদ্র জেলাগুলোতে নরেন্দ্র মোদি সরকার জনসাধারণের জীবনকে সহজ করতে বেশ কিছু পদক্ষেপ নিয়েছে। বিনামূল্যে খাদ্য দেওয়া, গ্যাস সিলিন্ডার সরবরাহসহ নানা সুবিধা দেওয়া হয়েছে। অনেক গ্রামে এলইডি বাতি, সস্তা মোবাইল ফোন ও ফ্রি মোবাইল ডাটা পৌঁছে গেছে।

নরেন্দ্র মোদির ভারতে অগ্রগতির ধারা অব্যাহত রয়েছে। তবে বিস্ময়কর বিষয় হলো, গত ১০ বছর ধরে দেশটিতে প্রবৃদ্ধির যে হার ছিল, তা আগের কয়েক দশকের মতোই; এর বেশি কিছু নয়। কিন্তু মোদি সব সময়ই আগের সরকারগুলোকে দেশের অর্থনীতি ধ্বংস করার জন্য সমালোচনা করে থাকেন। বাস্তবতা হলো, ভারতের অর্থনীতির সফলতার গল্পও মোদির প্রধানমন্ত্রী পদে আরোহণের মতো– ক্ষমতার সব স্তরের নিয়ন্ত্রণ হাতে নিয়ে প্রচার-প্রদর্শনকে সর্বাগ্রে রাখা।

ভারতের সব জায়গায় এখন মোদির মুখ দেখা যায়; বিশেষ করে রাজধানী দিল্লিতে সবচেয়ে বেশি। বিশ্বের আর কোনো রাজধানীতে নির্বাচিত নেতার এত ছবি দেখা যায় না। এক জয়জয়কারময় পরিবেশে ভারতের অর্থনীতি নিয়ে এখন নৈরাশ্যবাদীরাও আশাবাদী। যেখানে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারের পক্ষ থেকে চলতি অর্থবছরের প্রবৃদ্ধি ধরা হয়েছে ৭ দশমিক ৩ শতাংশ, সেখানে অর্থনীতিবিদরা বলছেন, এটা ৬ থেকে ৬ দশমিক ৫-এর মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকবে। সর্বনিম্ন হতে পারে ৪ দশমিক ৫ শতাংশ। এমনটা হলেও তা যুক্তরাষ্ট্রকে পেছনে ফেলবে; সম্ভবত চীনকেও।

তবে সরকারের সঙ্গে কাজ করা অর্থনীতিবিদদের বাইরে কথা বলার ওপর নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। যারা সরকারের সঙ্গে কাজ করছেন না, সেসব অর্থনীতিবিদ আতঙ্কের পরিবেশে থাকেন; কারণ স্বাধীন অনেক গবেষণা প্রতিষ্ঠানে অভিযান চালানো হয়েছে এবং ধ্বংস করা হয়েছে।

মোদির আগে পুরস্কারজয়ী অর্থনীতিবিদ মনমোহন সিং ভারতের প্রধানমন্ত্রী ছিলেন। এখন বলা হচ্ছে, তাঁর সময়ে ভারত এক ‘ব্যর্থ রাষ্ট্রে’ পরিণত হয়েছিল, যদিও তখন প্রবৃদ্ধি কখনও ১০ শতাংশ পর্যন্ত উঠেছিল। বিজেপি নেতা মোদি এখন ভারতের প্রশাসনিক প্রতিষ্ঠানগুলো পুনর্গঠনে ব্যস্ত। জাতীয় পর্যায়ে রাজনৈতিক প্রতিযোগিতা অনেকটাই শেষ হয়ে গেছে; তিনি এখন দেশটির ২০ কোটি মুসলিম সংখ্যালঘুর প্রতি শত্রুতামূলক আচরণ করছেন।

ডিজিটাল ক্ষেত্র– বিশেষ করে ব্যাংকিং ও ব্যবসায়িক লেনদেনের ক্ষেত্রে ব্যাপক অগ্রগতি করেছে ভারত। এ ধারা শুরু হয়েছিল মনমোহন সিং সরকারের আমলে, যা নরেন্দ্র মোদি সরকারের ১০ বছরেও অব্যাহত ছিল।

নিউইয়র্ক টাইমসের প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০১৬ সালের ৮ নভেম্বর মোদি সরকার হঠাৎ করে ভারতীয় মুদ্রার বড় নোটগুলোকে বাতিল ঘোষণা করে। অপরাধীদের কালো টাকা ঠেকাতে এমন উদ্যোগ নেওয়া হলেও তা ভারতের অর্থনীতিতে বড় আঘাত হানে। এ ছাড়া নরেন্দ্র মোদির শাসনামলে গৌতম আদানি বিশ্বের দ্বিতীয় ধনাঢ্য ব্যক্তিতে পরিণত হন। এর আগে তাঁকে বিশ্বে খুব বেশি মানুষ চিনতেন না।

Facebook Comments Box

Posted ৯:৩৬ পূর্বাহ্ণ | বৃহস্পতিবার, ০৪ এপ্রিল ২০২৪

nykagoj.com |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

advertisement
advertisement
advertisement

ক্যালেন্ডার

সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
 
১০১১১২
১৩১৪১৫১৬১৭১৮১৯
২০২১২২২৩২৪২৫২৬
২৭২৮২৯৩০৩১  
সম্পাদক
আফরোজা ইসলাম
কন্ট্রিবিঊটিং এডিটর
মনোয়ারুল ইসলাম
Contact

+1 845-392-8419

E-mail: nykagoj@gmail.com