বৃহস্পতিবার ২রা মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১৯শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

পগবা: প্রতিভার নিদারুণ অপচয়!

খেলা ডেস্ক   |   রবিবার, ০৩ মার্চ ২০২৪   |   প্রিন্ট   |   40 বার পঠিত   |   পড়ুন মিনিটে

পগবা: প্রতিভার নিদারুণ অপচয়!

পল পগবার প্রতিভা নিয়ে কোনো দিনই প্রশ্ন ছিল না। অনেকের মতে, সর্বকালের সেরাদের কাতারে নাম লেখানোর সামর্থ্য ছিল তাঁর। কিন্তু একের পর এক ভুল, একগুঁয়েমি, বাজে কাজে কলঙ্কের কালিমায় ক্যারিয়ার শেষ হতে বসেছে তাঁর। যার সর্বশেষটি হলো ডোপ পাপে চার বছরের নিষেধাজ্ঞা। বিশ্বকাপজয়ী এ মিডফিল্ডারের বয়স এখন ৩১ ছুঁইছুঁই। চার বছরের নিষেধাজ্ঞা কাটিয়ে ৩৫ বছর বয়সে তাঁর পক্ষে ফুটবলে ফেরা কি সম্ভব? তাহলে এখানেই কি ইতি ঘটে গেল সময়ের অন্যতম সেরা এই প্রতিভার!

রবার্ট ডি নিরোর বিখ্যাত ‘এ ব্রঙ্কস টেল’ সিনেমায় কেন্দ্রীয় চরিত্রে থাকা তরুণের উপলব্ধি ছিল ‘জীবনে সবচেয়ে দুঃখজনক বিষয় হলো প্রতিভার অপচয়। তরুণ বয়সের কর্মগুলো আপনার জীবনকে চিরতরে বদলে দেবে।’

পল পগবা যেন বিখ্যাত এই সিনেমার যথোপযুক্ত বাস্তব উদাহরণ। একদা তিনি ছিলেন এই বিশ্বব্রহ্মাণ্ডের সবচেয়ে ব্যয়বহুল খেলোয়াড়। ব্রাজিলিয়ান গ্রেট রোনালদিনহো তাঁকে ব্যালন ডি’অরের সম্ভাব্য বিজয়ী হিসেবে চিহ্নিতও করেছিলেন। ২০১৬ সালে জুভেন্টাস থেকে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডে ফেরার পরই তাঁর পতনের সূচনা। উশৃঙ্খল জীবনে অভ্যস্ত হয়ে ওঠা ফরাসি এ তারকা খ্যাতির চূড়া থেকে নিজের ধ্বংসটাও দেখলেন। পগবার এই নিষেধাজ্ঞা ফুটবল বিশ্বের জন্যই ভীষণ দুঃখের। কারণ, ফুটবল ইতিহাসের অন্যতম সেরা প্রকৃতি প্রদত্ত সহজাত এই প্রতিভার সম্পূর্ণ স্ফুরণ দেখতে পারলেন না ফুটবলপ্রেমীরা। জুভেন্টাস ক্যারিয়ারের প্রথম দফায় এবং ফ্রান্স জাতীয় দলের হয়ে শুরুতে যা খেলেছিলেন, পরে এর ধারেকাছেও যেতে পারেননি তিনি।

গত বছরের ২০ আগস্ট উদিনেজের বিপক্ষে জুভেন্টাসের ম্যাচের পর দৈবচয়ন ভিত্তিতে পগবার নমুনা পরীক্ষা করা হয়। ৩-০ গোলে জেতা ওই ম্যাচে তিনি বেঞ্চে ছিলেন। পরীক্ষায় পগবার শরীরে উচ্চমাত্রার টেস্টোস্টেরন পাওয়ায় সেপ্টেম্বর মাসে তাঁকে সাময়িকভাবে নিষিদ্ধ করা হয়। পরের মাসে তাঁর ‘বি’ নমুনা পরীক্ষায়ও ফলাফল পজিটিভ আসে। যার ফলশ্রুতিতে গত বৃহস্পতিবার ইতালির জাতীয় ডোপিংবিরোধী ট্রাইব্যুনাল তাঁকে এই নিষেধাজ্ঞা দেয়। এ খবরে স্বভাবতই ভীষণ হতাশ পগবা।

ইনস্টাগ্রাম পোস্টে ৩০ বছর বয়সী এ ফুটবলার লেখেন, ‘খেলাধুলার পেশাদার ক্যারিয়ারে যা কিছু গড়েছি, তার সবই কেড়ে নেওয়ায় বিস্মিত, দুঃখ পেয়েছি, হৃদয়টা ভেঙে গেছে।’

ট্রাইব্যুনালের রায়কে ‘ভুল’ দাবি করে তিনি আরও বলেন, ‘আইনি বাধ্যবাধকতা সরে যাওয়ার পর আসল কাহিনি জানা যাবে। আমি জেনে-বুঝে এবং ইচ্ছা করে কখনোই এমন কিছু গ্রহণ করিনি, যার কারণে ডোপিং নীতি লঙ্ঘিত হয়।’

আপিল করার কথাও বলেছেন তিনি। তবে পগবা এখন ট্রাইব্যুনালের রায়কে ভুল বললেও তাঁর কথায় মানুষ খুব একটা বিশ্বাস করছে না। এর পেছনে কারণ হলো, তাঁর অতীত।

২০১১ সালে ম্যানইউর মূল দলে সুযোগ পাওয়ার আগেই পগবাকে সময়ের অন্যতম সেরা প্রতিভা ভাবা হচ্ছিল। পরের বছরই পাড়ি জমান জুভেন্টাসে। সেখানে দুর্দান্ত ফুটবল খেলেন তরুণ এ মিডফিল্ডার। জুভদের হয়ে প্রথম দফার এ চার বছরে ১২৪ ম্যাচে ২৮ গোল করেন। সিরি-এ, কোপা ইতালিয়া জিতেছেন। ২০১৬ সালে ফিরে আসেন ম্যানইউতে। ২০২২ সাল পর্যন্ত ছয় বছরে ম্যানইউর হয়ে ১৫৪ ম্যাচে ২৯ গোল করেন। ইউরোপা, লিগ কাপ জেতেন এই সময়ে।

২০১৮ সালে ফ্রান্সের হয়ে বিশ্বকাপও জেতেন। তবে দ্বিতীয় দফায় ম্যানইউতে ফেরার পরই তাঁর উশৃঙ্খল জীবনের সূচনা। ত্যক্ত-বিরক্ত হয়ে ম্যানইউর তৎকালীন কোচ হোসে মরিনহো এক পর্যায়ে পগবাকে ‘ভাইরাস’ বলেছিলেন। সে নিজে তো নিয়মশৃঙ্খলা মানেই না, ড্রেসিংরুমের পরিবেশ নাকি নষ্ট করে ফেলে সে। স্যার এলেক্স ফার্গুসনেরও অভিযোগ রয়েছে তাঁর প্রতি।

Facebook Comments Box

Posted ৭:৫৪ পূর্বাহ্ণ | রবিবার, ০৩ মার্চ ২০২৪

nykagoj.com |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

advertisement
advertisement
advertisement

ক্যালেন্ডার

সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
 
১০১১১২
১৩১৪১৫১৬১৭১৮১৯
২০২১২২২৩২৪২৫২৬
২৭২৮২৯৩০৩১  
সম্পাদক
আফরোজা ইসলাম
কন্ট্রিবিঊটিং এডিটর
মনোয়ারুল ইসলাম
Contact

+1 845-392-8419

E-mail: nykagoj@gmail.com