নিজস্ব প্রতিবেদক | শনিবার, ০৬ জানুয়ারি ২০২৪ | প্রিন্ট | 148 বার পঠিত | পড়ুন মিনিটে
প্যালেস্টাইন প্রশ্নে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের ভূমিকায় মুসলিম সম্প্রদায় ভীষণ ক্ষিপ্ত। বাইডেন প্রশাসনের উস্কানী ও সর্মথনে প্যালেস্টাইনে নির্বিচারে গণহত্যা চালিয়েছে ইজরাইল। ২৪ হাজার নীরিহ মানুষকে হত্যা করা হয়েছে পশু পাখির মতো। ধ্বংসস্তুপে পরিণত করেছে প্যালেস্টাইনকে। জাতিসংঘ প্যালেস্টাইনীদের ওপর হামলা বন্ধে যুদ্ধ বিরতির প্রস্তাব আনলে ভেটো দেয় আমেরিকা। বাইডেন প্রশাসনের বিশেষ অর্থায়ন ও অস্ত্র সরবরাহে ইজরাইল সেখানে নির্মম হত্যাকান্ড চালায়। এতে সমগ্র ইসলামী বিশ্ব নিন্দা জানিয়েছে। ফুঁসে উঠছে আমেরিকার মুসলিম সম্প্রদায়। আমেরিকার জাতীয় িিনর্বাচনগুলোতে সাধারনত ডেমোক্যাটিক পার্টি মুসলমানদের নিঃশর্ত সর্মথন পেয়ে থাকে। এ বছর নভেম্বরে অনুষ্ঠিত প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে বদলে যেতে পারে হাওয়া। ইতোমধ্যে মুসলিম বিভিন্ন সংগঠন বাইডেনের বিরুদ্ধে ভোট জেহাদ ঘোষণা করেছে। তারা বলেছে, প্যালেস্টোইনে গণহত্যার জবাব দেয়া হবে ব্যালটে। ‘নো মোর বাইডেন’। এদিকে ইমিগ্রেশন সমস্যা সমাধানে ব্যর্থতায় আমেরিকানরা ভীষন নাখোশ। এ প্রতিক্রিয়া পড়বে ভোটের ওপর।
প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের নমনীয় ভূমিকার কারণে মেক্সিকো সীমান্ত পথে হাজার হাজার এসাইলাম প্রার্থী আমেরিকায় ঢুকে পড়লে টেক্সাসের গভর্নর এ্যাবোট স্টেটের খরচে বাসভর্তি করে মাইগ্রেন্টদের নিউইয়র্কসহ লসএঞ্জেলেস, শিকাগো, বস্টনের মত ডেমোক্রেটিক সিটিগুলোতে পাঠানো শুরু করেন। ফলে এই মাইগ্রেন্টদের সমস্যায় পড়ে সিটি ও স্টেটগুলো।টেক্সাসের রিপাবলিকান গভর্নও গ্রেগ এ্যাবটকে বারবার অনুরোধ জানানো সত্তে¡ও তিনি বিরতিহীনভাবে এসাইলাম প্রার্থীদের পাঠানো বন্ধ করেননি।
এরই প্রেক্ষিতে নিউইয়র্ক সিটির মেয়র এরিক এডামস জানান, তিনি মাইগ্রেন্ট বয়ে আনা বাস নিউইয়র্ক সিটিতে ঢুকতে দেবেন না। মেয়র বাস কোম্পানিগুলোর বিরুদ্ধে ৭০০ মিলিয়ন ডলারের ক্ষতিপূরণ মামলা করেন।এদিকে ম্যানহ্যাটানে ঢুকতে না পেরে টেক্সাস থেকে আসা বাসগুলো নিউজার্সির নিউয়ার্ক সিটিতে এবং সেকাকসে মাইগ্রেন্ট প্রত্যাশীদের নামিয়ে দেয়। এই ঘটনায় একদিকে নিউয়ার্ক ও সেকাকস সিটির মেয়ররা ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন। অপরদিকে গভর্নর ফিল মারফিও বিরক্তি প্রকাশ করেছেন। ফলে মাইগ্রেন্ট সংকট নিয়ে স্টেটের সাথে স্টেটের সম্পর্ক তিক্ত হয়ে উঠছে। আগে যেমন এক স্টেট বিভিন্ন সমস্যায় অপর স্টেটের পাশে গিয়ে দাঁড়াতো, এখনকার চিত্র ক্রমশ বিপরীত হয়ে উঠছে।
এদিকে প্রেসিডেন্ট বাইডেন তার নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী যুক্তরাষ্ট্রের ভিতরে অবস্থানরত আনডকুমেন্টেড ইমিগ্রান্টদের জন্য কিছুই করতে না পারায় স্প্যানিশ ভোটারদের সমর্থন হারাচ্ছেন। তিনি বরং নতুন ইমিগ্রান্টদের জন্য টেক্সাসের বর্ডার খুলে দিয়েছেন। এর ফলে সব দোষ গিয়ে পড়ছে প্রেসিডেন্ট বাইডেনের ওপর।
বৃহস্পতিবার নিউইয়র্ক টাইমস শিরোনাম করেছে ‘ইমিগ্রেশন প্রশ্নে বাইডেন চাপের মুখে, কেবল রিপাবলিকানদের কাছ থেকেই নয়’। অর্থাৎ ডেমোক্রেটরাও প্রেসিডেন্টের এই ভুল কিংবা নমনীয় নীতি পছন্দ করছে না টাইমস বলছে বিভিন্ন স্টেটের ডেমোক্রেটিক গভর্নর এবং বিভিন্ন সিটির ডেমোক্রেটিক মেয়ররাও ক্ষুব্ধ প্রেসিডেন্টের ওপর। কারণ তিনি সীমান্ত খুলে দিয়ে এসাইলাম প্রার্থীদের ঢুকতে দিচ্ছেন, কিন্তু স্টেট বা সিটিগুলোকে অর্থ দিচ্ছেন না। যেমন নিউইয়র্ক সিটি ইমিগ্রান্ট-বান্ধব বা স্যাংচুয়ারি সিটি হওয়া সত্তে¡ও নবাগত মাইগ্রেন্টদের আশ্রয় দেয়ার কারণে সিটির বাজেট কাট করায় তার প্রতি জনসমর্থন ব্যাপক হারে কমে গেছে।
নিউইয়র্ক সিটিতে টেক্সাস থেকে ১৬৪,৫০০ এসাইলাম প্রার্থী এসেছে বাসে, ডেনভার সিটিতে এসেছে ৩৬,০০০ জন। এইসব সিটির শেল্টারের সব বেড পূর্ণ হয়ে যাওয়ায় যাদের এই বেনিফিট পাওয়ার কথা তারা পাওয়া থেকে বঞ্চিত হচ্ছে ।নিউইয়র্ক টাইমস বলছে ২০২৩ অর্থবছরে দক্ষিণাঞ্চলের সীমান্ত দিয়ে আমেরিকায় ঢুকেছে প্রায় ২৫ লক্ষ নারী-পুরুষ-শিশু। গত বুধবার হাউজ স্পিকার মাইক জনসনের নেতৃত্বে ৬০ রিপাবলিকান কংগ্রেস সদস্য টেক্সাসে মেক্সিকো সীমান্তে সমবেত হন স্বচক্ষে ইমিগ্রান্ট সংকট দেখার জন্য। তারা তীব্র ভাষায় প্রেসিডেন্ট বাইডেনের সমালোচনা করেন।
একদিকে ডোনাল্ড ট্রাম্পের কারণে স্টেটের সাথে স্টেটের সম্পর্কে অবনতি, অপরদিকে প্রেসিডেন্ট বাইডেনের ভুল নীতির কারণে ইমিগ্রেশন নিয়ে সংকট সৃষ্টি হওয়ায় আমেরিকা অভ্যন্তরীণ ব্যাপক সমস্যায় হাবুডুবু খাচ্ছে।
Posted ৭:৩০ অপরাহ্ণ | শনিবার, ০৬ জানুয়ারি ২০২৪
nykagoj.com | Monwarul Islam