খেলাধূলা ডেস্ক | শুক্রবার, ০৩ নভেম্বর ২০২৩ | প্রিন্ট | 71 বার পঠিত | পড়ুন মিনিটে
চাওরে বাজার মেট্রোস্টেশনের ভিড় হঠাৎই যেন পজ বাটনে চাপা পড়ে থমকে গেল। একটা হতাশার সমবেত সুর ছাপিয়ে চলে আসার ঘোষণাটি স্বাভাবিকের চেয়েও জোরালো শোনাল। আসলে বিরাট কোহলি আউট হয়েছেন, সেঞ্চুরি থেকে মাত্র ১২ রান দূরে।
এতক্ষণ যারা মোবাইল হাতে নিয়ে স্ক্রিনে মুখ গুজেছিলেন, তারাই চোখ সরিয়ে ট্রেনে ওঠায় মনোযোগ দিলেন। মেট্রোতে উঠেও অচেনা যাত্রীরা মনভার কাটিয়ে মিলে গেল একটি আলোচনায়– আজ নয়তো কাল, শচীনজির সমান সেঞ্চুরি তাদের দিল্লিওয়ালের (দিল্লির মানুষ) হবেই।
শুধু দিল্লির মেট্রোতে নয়, শহরের ব্যস্ত সড়কে হাঁটতে থাকা মানুষগুলোর কানে গুজে রাখা রেডিও হেডফোন, ছোট দোকানির ক্যাশবাক্সের সামনে রাখা স্মার্টফোনের ডিজনি হটস্টার অ্যাপস– কাজের ফাঁকে সবারই মন পড়েছিল মুম্বাইয়ের ওয়াংখেড়ের দিকে, যেখানে তাদেরই শহরের ছেলে বিরাট কোহলির খেলা চলছে। সেঞ্চুরি হবেই আজ– ঘরের ছেলের জন্য এমন একটা নীরব প্রার্থনাও বুঝি ছিল তাদের।
এমনিতে এই মহানগরের গণ্ডি পেরিয়ে বিরাট কোহলি অনেক আগেই নিজেকে সর্বভারতীয় তারকা হিসেবে দাঁড় করিয়েছেন। তার পরও শচীন টেন্ডুলকার যেমন সবকিছুর পরেও একজন বিশুদ্ধ মারাঠি এবং মুম্বাইকর, বিরাট কোহলিও তেমনি আগে দিল্লিওয়ালে।
এই শহরেই কুড়ি বছর আগে তার আইনজীবী বাবা প্রেম কোহলি হরিয়ানা থেকে এসেছিলেন। এই শহরেরই বিকাশপুরিতে বিকাশ হয়েছে বিরাটের। তাঁর বিশালতা ছড়িয়েছে এই শহরেরই মিরাবাগে, যেখানকার মাঠে তিনি ছোটবেলা থেকেই ক্রিকেটের সঙ্গে। ম্যাচ দেখার ফাঁকে ফাঁকেই মেট্রোরেলের পাশের যাত্রী রঘু মেহেতা বলছিলেন, বাকিটা গুগল থেকেই জেনে নেওয়া। যদিও দিল্লির ক্রিকেট কিংবা দিল্লির কোনো বিষয় নিয়ে বীরেন্দ্র শেহবাগ কিংবা গৌতম গম্ভীরকে যতটা সরব দেখা যায়, বিরাটকে কখনোই সেভাবে পাওয়া যায়নি।
এই শহরে গম্ভীরের যত পোস্টার আর শেহবাগের যত বিজ্ঞাপনী বিলবোর্ড রয়েছে, কোহলির সেভাবে নেই। বরং আইপিএলে বেঙ্গালুরুর সঙ্গে কোহলির যে সম্পর্ক, সেটা থেকে ভিন্ন ধারণাও হতে পারে। সেই সহযাত্রীই ভুলটা ভাঙালেন গম্ভীর এখন রাজনীতিতে নেমেছেন, পোস্টার তাঁর দেখতেই পারেন। আর বিরাটকে তো সবাই ভালোবাসে। তাহলে দিল্লিওয়ালে বিরাট কোহলি?
এই শহরেই মিরাবাগ, পশ্চিম বিহার এবং দিল্লি মেট্রো গ্রিন লাইনের কাছে নাকি কোহলির তিনটি বাড়ি রয়েছে। কিন্তু এখন আর এখানে খুব বেশি আসেন না তিনি। পাহাড়গঞ্জের এক ছোট দোকানি তাঁর অনুযোগের কথা বললেন– তিনি তো এখন মুম্বাইতে থাকেন। আনুশকা শর্মাকে বিয়ে করার পর দিল্লির পাট চুকিয়ে মুম্বাইয়ের বড় ফ্ল্যাটে থাকেন। তাঁর বউই তাঁকে দিল্লিতে আসতে দেন না। দিল্লিওয়ালকে নাকি আনুশকা মুম্বাইকর বানাতে চাইছেন।
এমনিতে ঢাকার মতো চায়ের দোকানে টেলিভিশনে ম্যাচ দেখার জন্য ভিড় দিল্লিতে দেখা যায় না। এখানেও সবাই খেলা দেখেছেন, কিন্তু ওই যে দল বেঁধে দেশের খেলা দেখার যে একটা আনন্দ, তা ধরা পড়েনি এখানে এসে। তবে গসিপ এখানেও বেশ চলে।
কোহলিকে যেমন আনুশকা মুম্বাই নিয়ে গেছেন, তেমনি পাঞ্জাবের ছেলে শুভমান গিলকেও নাকি মুম্বাই নিয়ে যাবেন শচীনকন্যা সারাহ ! ফিসফিস করে ওই দোকানি এমনভাবে বললেন, যেন এই পেজথ্রির খবর তিনিই প্রথম জেনেছেন!
Posted ৪:৪৩ পূর্বাহ্ণ | শুক্রবার, ০৩ নভেম্বর ২০২৩
nykagoj.com | Stuff Reporter