নিজস্ব প্রতিবেদক | মঙ্গলবার, ২১ মার্চ ২০২৩ | প্রিন্ট | 259 বার পঠিত | পড়ুন মিনিটে
জালালাবাদ এসোসিয়েশনের নির্বাচিত সাবেক ৬ সাধারন সম্পাদক বললেন, সংগঠনের সাধারন সম্পাদক মইনুল ইসলামের অসহযোগিতায় সমঝোতা উদ্যোগ ভেস্তে গেল। লিখিতভাবে প্রতিশ্রুতি দিয়েও তিনি বাড়ি নিয়ে জটিলতা ও সংগঠনের সাড়ে ৩ লাখ টাকা ফেরত প্রশ্নে এগিয়ে আসেননি। অপর এক প্রশ্নের জবাবে তারা বলেন, সহ সাধারন সম্পাদক রোকন হাকিমকে ভারপ্রাপ্ত সাধারন সম্পাদক হিসেবে ঘোষণাও সাংগঠনিক হয়নি। তাকে ভারপ্রাপ্ত সাধারন সম্পাদক হিসেবে উল্লেখ করা জালালাবাদের সংবিধান অনুসারে অবৈধ। তবে কার্যকরি কমিটির সভায় ময়নুলকে সাময়িকভাবে বহিস্কারও বৈধ। তাকে স্থায়ীভাবে বহিস্কার করতে হলে সাধারন সভায় সিদ্ধান্ত নিতে হবে। এই অন্তবর্তী সময়ে সাধারন সম্পাদকের কাজগুলো সহসাধারন সম্পাদক করবেন এটাই স্বাভাবিক। তারা বলেন,জালালাবাদের অর্থ নিজের প্রতিষ্ঠান কিনতে ব্যবহার করা একটি ক্রিমিনাল অ্যাক্ট। এ ব্যাপারে আইনী প্রক্রিয়ায় যাওয়ার সাংগঠনিক বডি ৬ সাবেক সাধারন সম্পাদক নন। নির্বাচিত বর্তমান কমিটিই এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিতে পারবেন। তবে রোকন হাকিমকে ভারপ্রাপ্ত সাধারন সম্পাদক ঘোষণাও সঠিক হয়নি। গত সোমবার সন্ধ্যায় জামাইকার হিলসাইডস্থ মতিন রেষ্টুরেনেন্টে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে জালালাবাদ সংগঠনের সাবেক ৬ সাধারন সম্পাদক এসব কথা বলেন। তারা হলেন জুনেদ এ খান,মিসবাহ মজিদ, আতাউর রহমান সেলিম, আব্দুল হাসিব মামুন,আহমেদ জিলু ও জেড চৌধুরী জুয়েল। জুয়েল মালয়েশিয়ায় অবস্থান করায় সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত থাকতে পারেন নি।
৬ সাধারন সম্পাদক সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে বলেন, জালালাবাদ এসোসিয়েশনের সংকট সমাধানে আমরা একটি সমঝোতাপত্র তৈরি করি। সভাপতি বদরুল খান এতে স্বাক্ষর করেন। সাধারন সম্পাদক ময়নুল এক সপ্তাহ ধরে তালবাহানা করার পর স্বাক্ষর প্রদান করে। স্বাক্ষর করার পরও ময়নুল সংগঠনের অর্থে কেনা বাড়ির কাগজপত্র ও খরচের হিসেব দিতেও গড়িমসি করেন। অনেক আলেচানার পর আরও ১ সপ্তাহ পর তিনি বাড়ি কেনার আংশিক হিসেব দাখিল করেন। এতে দেখা যায় বাড়ি ক্রয়কালে তিনি সংগঠনের তহবিল থেকে ৩ লাখ ৯ হাজার ডলার উত্তোলন করেছেন। বাড়ি কেনার পর নাকি তিনি বাড়ির জন্য আরও ২ লাখ ৪০ হাজার ৯৮২ ডলার খরচ করেছেন। অন্যান্য খরচসহ সবমিলে বাড়িটি জালালাবাদ এসোসিয়েশনের নামে হস্তান্তর করতে প্রয়োজন হবে প্রায় ১ মিলিয়ন ২ লাখ ৫৯ হাজার ৩২ ডলার। আদৌ এ বাড়ির দাম এটা হবে কিনা, জালালাবাদের নামে বাড়িটি নিলে তা আর্থিকভাবে ক্ষতির কারন হবে কিনা তা যাচাই করার জন্য ময়নুলকে অনুরোধ করা হয় বাড়ির এপ্রেইজাল ও ইনসপেকশনে অনুমতি দেবার জন্য। কিন্তু এতে তিনি রাজি হন নি। এতে সমঝোতার উদ্যোগ বাধাগ্রস্থ হয়। সঠিক তথ্য বিবেচনায় না এনে বাড়িটি প্রশ্নে আলোচনা সঠিক হবে না। সাধারন সম্পাদক ময়নুলের অসহযোগিতায় সমঝোতা প্রক্রিয়া থেকে আমরা সরে দাঁড়াচ্ছি। তবে সমঝোতার স্বার্থে যে কোন পক্ষকে আগামীতে সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে।
এক প্রশ্নের জবাবে সাবেক সাধারন সম্পাদক আবুল হাসিব মামুন বলেন, সাধারন সম্পাদক ময়নুলকে সাময়িকভাবে বহিস্কার সাংগঠনিকভাবেই হয়েছে। তবে তার চূড়ান্ত অনুমোদন নিতে হবে সাধারন সভায়। আমরা এই আলেচনা ও সমঝোতা উদ্যোগের গত দেড় মাস ময়নুল সাময়িক বহিষ্কারের আওতায় ছিলেন না। তার বহিষ্কারের আদেশ স্থগিত রাখা হয়েছিল সমঝোতার স্বার্থে । গতকাল পর্যন্তও (১৯ মার্চ) তা স্থগিত ছিল। এটা আমরা করতে পেরেছিলাম উভয় পক্ষের সাথে আলোচনা করে সংগঠনের স্বার্থে। অপর এক প্রশ্নের জবাবে সাবেক সাধারন সম্পাদক মিছবাহ মজিদ বলেন, রোকনকে সাধারন সম্পাদক ঘোষণা নিয়ম মোতাবেক হয়নি। তিনি সহসাধারন সম্পাদক হিসেবেই কাজ চালিয়ে নিতে পারতেন সাধারন সভা পর্যন্ত। তবে ময়নুলকে সাময়িক বহিস্কার অবশ্যই সাংবিধানিক। তিনিতো ক্রিমিনাল অ্যাক্ট এর মতো কাজ করেছেন। কেন আমাদের এই উদ্যোগ ব্যর্থ হলো তা সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে জালালাবাদবাসীকে জানানো হলো। জ্বনাব মজিদ বলেন, বাড়িটি জালালাবাদের জন্য নিয়ে বা না নিয়েও সমাধানের পথ খুঁজে বের করা যেত। কিন্তু বাড়িটির প্রশ্নে ময়নুল ইসলামের কোন সহযোগিতা আমরা পাই নি। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বিবৃতি পাঠ করেন সাবেক সাধারন সম্পাদক জুনেদ এ খান।
এদিকে রোকন হাকিম এক প্রতিক্রিয়ায় বলেন, আমাকে অহেতুক বিব্রত করা হচ্ছে। মনে হচ্ছে আমি সাধারন সম্পাদক হবার জন্যই ময়নুলের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছি। আমি প্রানপ্রিয় জালালাবাদের লাখ লাখ ডলার লুটপাটের প্রতিবাদে কথা বলছি। সাধারন সম্পাদক ময়নুলকে বহিস্কার করার পর সংগঠনের কার্যকরি কমিটি ও ট্রাষ্টিবোর্ড আমাকে ভারপ্রাপ্ত সাধারন সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালনে আহবান জানিয়েছে। তা সংগঠনের রেজুলেশনেও রয়েছে। আমিতো চেয়ে কিছু নেইনি। সাবেক ৬ সাধারন সম্পাদক যা বলছেন তাতে আমি বিব্রত। অনেকেই আমাকে এ ব্যাপারে কল করছেন।
Posted ২:৪৩ অপরাহ্ণ | মঙ্গলবার, ২১ মার্চ ২০২৩
nykagoj.com | Monwarul Islam