
জাতীয় ডেস্ক | মঙ্গলবার, ১৫ জুলাই ২০২৫ | প্রিন্ট | 17 বার পঠিত | পড়ুন মিনিটে
জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেছেন, ‘মুজিববাদী সংবিধান বাংলাদেশ রাষ্ট্রকে আগাতে দেয়নি। কিন্তু সেই মুজিববাদী সংবিধান এখন টিকিয়ে রাখতে চাচ্ছে বিএনপি। বিএনপি এখন চাঁদাবাজ দলে পরিণত হয়েছে। মুজিববাদের নতুন পাহারাদার হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে। এই পাহারাদারকে আপনাদের প্রতিহত করতে হবে।’
জুলাই পদযাত্রার ১৪তম দিনে গতকাল সোমবার দুপুর ১টায় পটুয়াখালী সার্কিট হাউস সড়কে শহীদ হৃদয় তরুয়া চত্বরে সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এ কথা বলেন।
নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘আমরা অনৈক্য চাই না, আমরা বিভাজন চাই না। কিন্তু কেউ যদি জনগণের বিরুদ্ধে দাঁড়ায়; জুলাই গণঅভ্যুত্থানের বিরুদ্ধে কোনো শক্তি দাঁড়ায়; তাহলে তাদের সঙ্গে আমাদের ঐক্য সম্ভব নয়।’
তিনি বলেন, ‘জুলাই গণঅভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে এই তরুণ নেতৃত্ব পুরোনো সিস্টেমের পতন ঘটাতে চেয়েছিল। তাই এই সিস্টেম কখনোই চায় না– গণঅভ্যুত্থানের নেতৃত্ব দাঁড়াক এবং রাজনৈতিকভাবে এরা টিকে থাকুক। সেই অভ্যুত্থানের সময় থেকে আজ পর্যন্ত আমাদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র চলমান।’
তিনি বলেন, ‘আপনারা দেখেছেন, গণঅভ্যুত্থানের সময় শেখ হাসিনার সরকার যেভাবে আমাদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র চলমান রেখেছিল, এই অভ্যুত্থানের পরে দুর্নীতি মাফিয়াদের সিস্টেম, সেই সেনাবাহিনী আমলাতন্ত্রের সিস্টেম আমাদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র চলমান রেখেছে। অভ্যুত্থান-শক্তির মধ্যে বিভাজন তৈরি করা হয়েছে।’
সমাবেশে এনসিপির মুখ্য সংগঠক (দক্ষিণাঞ্চল) হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, ‘শহীদ মিনারে আগামী ৩ আগস্ট আমরা একত্রিত হবো। গত বছরের ৩ আগস্ট ছিল হাসিনা পতনের ইশতেহার। আর এই বছরের ৩ আগস্ট হবে স্বৈরাচারমুক্ত বাংলাদেশ গঠনের ইশতেহার।’
মুখ্য সংগঠক (উত্তরাঞ্চল) সারজিস আলম বলেন, ‘এই লুটপাট আর চলবে না। এই জুলাইয়ে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হতে হবে– আমাদের শহীদেরা, আহত যোদ্ধারা যে আকাঙ্ক্ষা সামনে রেখে লড়াই করেছিলেন, তা যেন আমরা ভুলে না যাই।’
সমাবেশে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন সিনিয়র যুগ্ম সদস্য সচিব ডা. তাসনিম জারা, সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক সামান্তা শারমিন, যুগ্ম সদস্য সচিব নাহিদা সরোয়ার নিভা, যুগ্ম আহ্বায়ক মুজাহিদুল ইসলাম শাহিন, জহিরুল ইসলাম মুছা প্রমুখ। এর আগে এনসিপি নেতারা সার্কিট হাউস থেকে পদযাত্রা নিয়ে নিউমার্কেট, সদর রোড, নতুন বাজার, লঞ্চঘাট, পুরান বাজার, মুকুল সিনেমা হল, বনানী, পৌরসভা, কাজীপাড়া হয়ে হৃদয় তরুয়া চত্বরে মিলিত হন। সমাবেশ শেষে তারা জুলাই অভ্যুত্থানে শহীদ হৃদয় তরুয়ার পরিবারের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন।
একটি দলের চাঁদাবাজদের নির্মমতায় খুন
এদিকে বরগুনা সদর রোডে গতকাল বিকেলে পথসভায় নাহিদ ইসলাম বলেন, জুলাই অভ্যুত্থানের পর আমরা বলেছিলাম, চাঁদাবাজ এবং দুর্নীতি যে সিস্টেম টিকিয়ে রাখে, আমরা সেই সিস্টেমের পতন চাই। কিন্তু আমরা দেখেছি, সেই সিস্টেমকে টিকিয়ে রাখছে একটি দল। তারা চাঁদাবাজ এবং দুর্নীতিকে প্রশ্রয় দিচ্ছে। ঢাকায় মিটফোর্ড এলাকায় বরগুনার সন্তান সোহাগকে নির্মমভাবে পাথর দিয়ে জনসমক্ষে হত্যা করা হয়েছে। এমন হত্যা ও চাঁদাবাজি কি বরগুনাবাসী দেখতে চায়– এ প্রশ্ন রেখে নাহিদ বলেন, আপনারা প্রতিবাদ করুন। দেশবাসীকে জানান এই সরকারের প্রশাসনের ব্যর্থতা আর একটি রাজনৈতিক দলের চাঁদাবাজদের নির্মমতা।
নাহিদ ইসলাম আরও বলেন, আমরা বরগুনার মৎস্য, কৃষি সমস্যাসহ পরিবেশবান্ধব উন্নয়ন করতে চাই। সংস্কার ছাড়া নতুন বাংলাদেশ গড়া সম্ভব হবে না। একটি দল এক সময় পাকিস্তানপন্থিদের পুনর্বাসিত করেছে; এখন মুজিববাদ পুনর্বাসন করতে চায়। কিন্তু তা করতে দেওয়া হবে না। এ সময় ‘চাঁদাচাজ আর দখলদার, মুজিববাদের পাহারাদার’ বলে স্লোগান তোলেন কর্মীরা।
সভায় সিনিয়র যুগ্ম সদস্য সচিব ডা. তাসনিম জারা বলেন, পূর্বের ভাঙাচোরা ব্যবস্থায় আমরা থাকতে চাই না।
এনসিপি নেতারা চরমোনাইয়ে
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-প্রচার ও দাওয়াহ সম্পাদক কেএম শরীয়ত উল্লাহ জানান, এনসিপির শীর্ষ নেতারা গতকাল রাতে চরমোনাই পীরের বাড়িতে যান। তারা সেখানে রাতের খাবার খেয়ে নগরীতে ফিরে গেছেন। ইসলামী আন্দোলনের জ্যেষ্ঠ নায়েবে আমির মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ ফয়জুল করীম এনসিপি নেতাদের অভ্যর্থনা জানান ও মতবিনিময় করেন।
Posted ৭:৩৬ পূর্বাহ্ণ | মঙ্গলবার, ১৫ জুলাই ২০২৫
nykagoj.com | Stuff Reporter