
নিজস্ব প্রতিবেদক | শুক্রবার, ২০ জুন ২০২৫ | প্রিন্ট | 101 বার পঠিত | পড়ুন মিনিটে
‘নিউইয়র্কে লুকিয়ে থাকা বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের একজন প্রেস মিনিস্টারের কিছু ছবি গত সপ্তাহে সোশ্যাল মিডিয়ায় ব্যাপক প্রচারণা পেলেও তা দেখার কাজ আমাদের না। যুক্তরাষ্ট্রে যারা অবৈধ অর্থ পাচার করেছে তাদের ব্যাপারে তথ্য উদ্ধারে সরকার জোরেশোরে কাজ চালিয়ে যাচ্ছে তা নিশ্চিত করে বলতে পারি। আগামী মার্চের পর আমি এই পদে থাকব কি থাকবো না— তা জানি না। সেই সময়টা ধরে কাজ করতে চাই। আমার ব্যক্তিগত ধারণা জুলাই ছাত্র আন্দোলনে ২ হাজারের বেশি মানুষকে ফ্যাসিস্ট সরকার বাংলাদেশে হত্যা করেছে’।
দায়িত্ব গ্রহণের পর এই প্রথম মিডিয়ার মুখোমুখি হয়ে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেছেন বাংলাদেশ দূতাবাস ওয়াশিংটনে নিযুক্ত নতুন প্রেস মিনিস্টার ও সাংবাদিক গোলাম মোর্তোজা। এসময় নিউইয়র্কে নবনিযুক্ত কনসাল জেনারেল মোহাম্মদ মোজাম্মেল হকও বক্তব্য রাখেন। নিউইয়র্ক কনস্যুলেটে আমন্ত্রিত অতিথিদের তালিকাকরণের রাজনৈতিক দূষণ শুরু হয়েছে গত ৫—৭ বছর ধরে। তার মাত্রা বেড়েছিল কনসাল জেনারেল শামীমের সময়ে। নাম ধরে ধরে তিনি চিরুণী চালাতেন। বিএনপি—জামায়াতপন্থী হিসেবে ট্যাগ লাগাতে তাকে সাহায্য করতেন সাংবাদিক কার্ডধারী বেশ কয়েকজন ফ্যাসিবাদের দালাল। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের আগমন ও ফ্যাসিবাদের পতনের পর চিত্র পাল্টেছে। হাসিনা শাসনামলের দালাল সাংবাদিকদের দখলে ছিল মিশন ও কনস্যুলেট। তাদের দেয়া তালিকা ফলো করতো তারা। এই ২ প্রতিষ্ঠানের অনুষ্ঠান শেষে অনুগতদের নিয়ে গোপন বৈঠক করা হতো। তাদের হয়তো আমন্ত্রণ জানানো হয় না কিংবা নিজ থেকেই তারা অংশ নিচ্ছেন না। যদিও দলমত নির্বিশেষেই সকল মত ও পথের সাংবাদিকদের আমন্ত্রন জানানো উচিৎ। পেশার যায়গাটি তকমা দিয়ে বিভক্ত সঠিক নয়। এখন সেরকম না হলেও অধিকাংশ ফ্যাসিস্ট সহচোরদের আর দেখা যায় না। অনেকেে অবশ্য দেরিতে হলেও বুঝতে পেরেছেন। অবস্থান পরিবর্তন করেছেন। ফ্যাসিবাদকে সর্মথন করছেন না।
নিউইয়র্কের লং আইল্যান্ডে বাংলাদেশ কনস্যুলেট জেনারেল কার্যালয়ে গত ১৭ জুন বিকেলে আমন্ত্রিত সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময় অনুষ্ঠিত হয়েছে। অনুষ্ঠানে কনসাল জেনারেল মোহাম্মদ মোজাম্মেল হক বলেন, প্রবাসিদের জন্য দ্রুত সেবার মান বৃদ্ধি এবং দিনের কাজ দিনে সম্পন্ন করার চেষ্টা আমরা করছি। তবে আমাদের জনবল সমস্যা রয়েছে। প্রবাসিদের দ্বৈত নাগরিকত্ব নিয়ে অন লাইনে আবেদন করলেই আমরা তা করে দিচ্ছি।
দিল্লীতে বিগত সরকারের সময় নিযুক্ত প্রেস মিনিস্টার শাবান মাহমুদের দিকে ইঙ্গিত করে ওয়াশিংটনে নিযুক্ত বর্তমান সরকারের নতুন প্রেস মিনিস্টার গোলাম মোর্তোজার কাছে জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, বিগত সরকারের একজন প্রেস মিনিস্টার নিউইয়র্কে লুুকিয়ে চলাফেরা করেন এমন বিষয়টি নিয়ে আমাদের কোন কাজ নেই। দূতাবাসে আমার কাজ হচ্ছে আমি প্রেস রিলিজ তৈরি করি। মূলধারার মিডিয়ার সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করি। বাংলাদেশ বিষয়ক কোন সংবাদ প্রকাশিত হলে তা নিয়ে কথা বলি। বাংলাদেশ সরকার এবং যুক্তরাষ্ট্র সরকারের সবকয়টি আলোচনা পর্বে আমি উপস্থিত থাকি। আমি এই পদে যোগাদান করে সাংবাদিকতার দৃষ্টিতে পেছনে চলে গেলাম কিনা জানি না। অনুষ্ঠানে গোলাম মোর্তোজা বলেন, বাংলাদেশে ছাত্র জনতার রক্ত দেয়ার ঘটনা অভূতপূর্ব একটি ব্যাপার। যা লিখে, বলে বা ডকুমেন্টারি তৈরি করে বুঝানো যাবে না। নির্বাচন কবে হবে তার পরিষ্কার একটা চিত্র এখন আমাদের সামনে আছে।
নবনিযুক্ত কনসাল জেনারেল মোহাম্মদ মোজাম্মেল হক তার বক্তব্যে বলেন, আমি তিনজনের বিশ্লেষণ শুনতাম তারা হচ্ছেন আমার দেশ সম্পাদক মাহমুদুর রহমান, নিউএজ সম্পাদক নূরুল কবীর এবং গোলাম মোর্তোজা।
তাঁর এই বক্তব্যের পর প্রেস মিনিস্টার গোলাম মোর্তোজা দ্বিমত পোষণ করে বলেন, কারো নাম উল্লেখ করে বললে অসুবিধা হয়। কারো নাম উল্লেখ করা যাবে না। গণঅভ্যুত্থান একা একা হয় না। পেছনে ছাত্ররা ছিল। ফেসিস্টরা একা ছিল। এক ফোরটি সেভেনের গুলিতে হত্যার পর তাদের রক্তের ওপর দাঁড়িয়ে এই সরকার গঠিত হয়েছে। আমরা ওয়াশিংটনে আল জাজিরার এক সাংবাদিককে ১ ঘন্টার মধ্যে ভিসা দিয়েছি। এটিই প্রথম নয় আরও অনেক অনেক মানুষকে দিনেদিনে ভিসা দেয়া হচ্ছে। আইএমএফ—এর কিছু পলিসি বা শর্ত থাকে। বাংলাদেশ এখন স্বাধীনভাবে মতামত জানিয়ে সক্ষমতার পরিচয় দিয়েছে। যা মিডিয়ায় প্রকাশ করা যায়নি।
অনুষ্ঠানে নিউইয়র্কে বাংলাদেশি কমিউনিটির প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সম্পাদক ও সাংবাদিকরা উপস্থিত ছিলেন।
Posted ৩:০৩ অপরাহ্ণ | শুক্রবার, ২০ জুন ২০২৫
nykagoj.com | Monwarul Islam