
নিজস্ব প্রতিবেদক | শনিবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৫ | প্রিন্ট | 100 বার পঠিত | পড়ুন মিনিটে
কবিগুরুর এই গানের প্রতিটি চরণের প্রতিফলন ছিল গতকালের চট্টগ্রাম সমিতির “পহেলা বৈশাখ এবং ঈদ পুনর্মিলনী”র আয়োজনে। বিকেল থেকে শুরু করে সন্ধ্যা পেরিয়ে গভীর রাত পর্যন্ত রঙের মেলা জমেছিলো “চট্টগ্রাম ভবন” এবং তার আশপাশের এলাকায়। এ যেন রঙের মেলা, প্রাণের মেলা!! নানা বয়সী মানুষের ভিড়ে লোকারণ্য হয়ে যায় সম্পূর্ণ এলাকাটি, বিশেষ করে নারীদের উপস্থিতি ছিল অবাক করার মতন। নানা উৎসবমুখর সাজে সকলে সেজেছিলেন এবং সাজিয়ে ছিলেন। ভবনের প্রবেশদ্বারে ছিল অতি আকর্ষণীয় সাজসজ্জা, আর ভেতরে বৈশাখী এবং ঈদ এর থিম দিয়ে সাজানো হয়, যা কিনা সকল অভ্যাগতদের দৃষ্টি আকর্ষণে সমর্থ হয়েছে। আর অতিথিরা ও এসেছিলেন দূর দূরান্ত থেকে। বোস্টন, নিউ জার্সি , পেনসিলভেনিয়া ,কানেক্টিকাট, ব্রঙক্স, কুইন্স, স্টাটেন আইল্যান্ড, লং আইল্যান্ড কোনো এলাকাই বাদ পড়েনি!! আর হোস্ট কাউন্টি ব্রুকলিনতো আছেই!! তিল ধরণের ঠাঁই ছিল না, কিন্তু সকলেই মিশে গেছেন একসাথে, একাত্ম হয়েছেন মন খুলে। এমন দৃশ্য অনেকদিন দেখেনি চট্টগ্রামবাসী।
বিকেলে আগত অতিথিদের আপ্যায়ণ করা হয় নানা ধরণের দেশীয় হাতে তৈরী পিঠাপুলি দিয়ে, ছিল মচমচে মুড়ি আর ছোলা, গরম গরম জিলাপি ছিল সুপারহিট!! আর চটপটির স্ট্যান্ডে হুমড়ি খেয়ে পড়েছিলেন মেয়েরা, ছেলেরা ও বাদ যাননি!!! সবশেষে ছিল গরমাগরম চা !!
শিশুদের জন্য ছিল খেলনা এবং চকোলেট এর ছড়াছড়ি।
মাগরিবের নামাজের পরপরই শুরু হয় উদ্বোধনী অনুষ্ঠান— সমিতির সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ আরিফুল ইসলামের সঞ্চালনায় স্বাগত বক্তব্য রাখেন চট্টগ্রাম সমিতির জনপ্রিয় সভাপতি মোহাম্মদ আবু তাহের। তিনি তার বক্তব্যে বলেন— সকল চট্টগ্রামবাসীর মিলনকেন্দ্র চট্টগ্রাম সমিতি, সকলের অংশগ্রহণেই পূর্ণতা পাবে এই সংগঠন। ভেদাভেদ ভুলে সবাইকে এক হবার আহব্বান জানান জনাব তাহের। এই পর্বে আরও বক্তব্য রাখেন সমিতির প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি জনাব আব্দুর রহিম, সাবেক সভাপতি জনাব মোহাম্মদ হানিফ, সাবেক সভাপতি জনাব কাজী শাখাওয়াত হোসেইন আজম, সাবেক ট্রাস্টি বোর্ড এর কো—চেয়ারম্যান, প্রতিষ্ঠাতা ট্রেজারার শামসুল আলম, নির্বাচন কমিশনার মোহাম্মদ হোসেন, সাবেক সাধারণ সম্পাদক মুনির আহমেদ, সাবেক সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ সেলিম, সাবেক সাধারণ সম্পাদক মোর্শেদ রিজভী, অন্তর্বর্তীকালীন কমিটির সদস্য নুরুল আনোয়ার, আবুল কাসেম চট্টলা, সাবেক নির্বাচন কমিশনার আবু তালেব চৌধুরী চান্দু , আজীবন সদস্য সারওয়ার হোসেন, সমিতির সাবেক কার্যকরী সদস্য কামাল হোসেন মিঠু ,সাবেক অডিট কমিটির সদস্য ইব্রাহিম দিপু, ইঞ্জিনিয়ার জাহাঙ্গীর, সংগঠক সৈয়দ অম বাবর, সৈয়দ হেলাল মাহমুদ, রাজনীতিবিদ জনাব খোরশেদ খন্দকার, সাবেক কোষাধ্যক্ষ দিদার আহমেদ, জামাল চৌধুরী, বিশিষ্ট কমিউনিটি এক্টিভিস্ট এবং সিপিএ শ্রাবনী, সাবেক সহ সভাপতি ফোরকান আহমেদ, সাবেক ভারপ্রাপ্ত সভাপতি খোকন কে চৌধুরী, সাবেক সহ—সভাপতি সাহাবুদ্দিন চৌধুরী লিটন ,সাবেক কোষাধ্যক্ষ মতিউর রহমান, সাবেক ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক আশ্রাব আলী লিটন, কানেক্টিকা থেকে আগত জনাব নাজিম চৌধুরী, আবুল কালাম, বাসন আলী, নিউ জার্সি থেকে মোহাম্মদ আল মামুন, মোহাম্মদ সেলিম, উত্তম দাস, পেনসিলভেনিয়া থেকে কাজী মনসুর কাইয়ুম, আমির হোসেন , ফেরদৌস ইসলাম, তৈয়ব উদ্দিন, শহিদুল ইসলাম, কলিম উদ্দিন, জিয়াউল হক মিজান, সাবেক কোষাধ্যক্ষ দিদারুল আলম প্রমুখ।
বিশিষ্ট অথিদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন আব্দুল কাদের মিয়া ফাউন্ডেশন এর প্রতিষ্ঠাতা জনাব আব্দুল কাদের মিয়া, নিউ ইয়র্ক প্রেস ক্লাবের সাবেক সভাপতি, গণমাধ্যম ব্যক্তিত্ব লাবলু আনসার, সন্দ্বীপ পৌরসভা কল্যাণ সমিতির সভাপতি হাজী জাফর , বিশিষ্ট ব্যাংকার ওসমান গনি চৌধুরী, ফজলুল কাদের চৌধুরী , এডভোকেট আবদুল হামিদ ,সহ আরো অনেকে।
এর পরেই ধন্যবাদ দিয়ে বক্তব্য রাখেন “ঈদ পুনর্মিলনী এবং পহেলা বৈশাখ উদযাপন কমিটির আহ্বায়ক মোহাম্মদ এনাম চৌধুরী, সদস্য সচিব মোহাম্মদ টি আলম, কোষাধ্যক্ষ মোহাম্মদ শফিকুল আলম, সহকারী কোষাধ্যক্ষ নুরুল আমিন, প্রধান সমন্বয়কারী তানিম মহসিন, যুগ্ম আহ্বায়ক ইমরুল কায়সার, সমন্বয়কারী মোহাম্মদ ইছা, অফিস সম্পাদক অজয় প্রসাধ ,প্রচার সম্পাদক জাবের শফি, কলিম উললাহ, যুগ্ম সদস্য সচিব মোহাম্মদ মহিম উদ্দিন, পল্লব রায়..
সংক্ষিপ্ত বক্তব্য পর্বের পরেই শুরু হয় মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক পরিবেশনা, মঞ্চে আসেন বাংলাদেশের জনপ্রিয় শিল্পী নাজু আখন্দ। একের পর এক জনপ্রিয় গান পরিবেশনা করে সকলকে মাতিয়ে তোলেন। দর্শক এবং শ্রোতারা গানের তালে তালে নাচে নাচে ভরিয়ে তোলেন অনুষ্ঠান প্রাঙ্গণ। সমস্ত হল জুড়ে এক আনন্দঘন পরিবেশে সৃষ্টি হয়। উপস্থিত সকলে দীর্ঘদিন পর চট্টগ্রাম ভবনে এরকম আয়োজনের ভূয়াসী প্রশংসা করেন, এবং আশা প্রকাশ করেন এই জয়যাত্রা অব্যাহত থাকবে। গানের অনুষ্ঠান চলাকালীন সময়ে পরিবেশন করা হয় বৈশাখী এবং ঈদ মেনুতে সাজানো ঘরে তৈরী সুস্বাদু খাবার, খাবারের তালিকায় ছিল পান্তা ইলিশ, মুরগির রোস্ট , খাসীর রেজালা, গরুর মাংস ভুনা, আলু ভর্তা, বেগুন ভর্তা, শুঁটকি ভর্তা, টমেটো ভর্তা, ডাল, সাদা ভাত!!!
ঈদের আবহকে ধরে রাখতে পরিবেশনা করা হয় সেমাই।
রাত প্রায় সাড়ে এগারোটা পর্যন্ত চলে অনুষ্ঠান, তারপর ও যেন তৃপ্তি মেটেনা, চট্টগ্রাম ভবনের সামনে চলতে থাকে আড্ডা। অনেকদিন পর এক সুখময় অনুভূতি নিয়ে আগতরা বাড়ি ফিরে যান।।
Posted ৬:১২ অপরাহ্ণ | শনিবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৫
nykagoj.com | Monwarul Islam