
ইউএনএ নিউজ | শনিবার, ২১ ডিসেম্বর ২০২৪ | প্রিন্ট | 173 বার পঠিত | পড়ুন মিনিটে
৭১’র বীর শহীদ আর শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান বীরোত্তম সহ বীর মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানানোর মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের ৫৪তম বিজয় দিবস পালন করেছে যুক্তরাষ্ট্র বিএনপি এবং এর সহযোগী সংগঠনসমূহ। মঙ্গলবার ১৭ ডিসেম্বর সন্ধ্যায় জ্যাকসন হাইটসের নবান্ন পার্টি হলে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। যুক্তরাষ্ট্র বিএনপি’র প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ডা. মজিবুর রহমান মজুমদারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রবাসে বসবাসকারী বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মাণনা জানানো হয়।
পবিত্র কোরআন থেকে তেলাওয়াত, বিশেষ দোয়া মোনাজাত, বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্টে্রর জাতীয় সঙ্গীত এবং দলীয় সঙ্গীত পরিবেশের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠানের সূচনা হয়। কোরআন থেকে তেলাওয়াত করেন জাতীয় চলচ্চিত্র পুরষ্কারপ্রাপ্ত মেকাপম্যান মৃধা মোহাম্মদ জসিম। বিশেষ মুনাজাতে সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া ও বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের এবং তার পরিবারের সদস্যদের সুস্বাস্থ্য কামনা করা হয়।
অনুষ্ঠানের মাঝে প্রধান অতিথি হিসেবে টেলিকনফারেন্সে বক্তব্য রাখেন সাবেক মন্ত্রী ও বিএনপি’র জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য মুক্তিযোদ্ধা ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু এবং প্রধান বক্তা বাংলাদেশ জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা দলের কেন্দ্রীয় সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা ইশতিয়াক আজিজ উলফাত। স্বাগত বক্তব্য রাখেন যুক্তরাষ্ট্র বিএনপি’র সাবেক যুগ্ম সম্পাদক গিয়াস উদ্দিন।
টেলিকনফারেন্সে বিএনপি নেতা টুকু বলেন, বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের গৌরবময় অধ্যায় এবং বর্তমান প্রেক্ষাপটে বিজয় দিবসের গুরুত্ব তুলে ধরে বলেন আওয়ামী লীগ ১৯৭১ সালে পালিয়েছিলো, এবার ২০২৪ সালেও পালিয়েছে। তিনি বলেন আওয়ামী লীগ কখনোই গণতন্ত্রে বিশ্বাস করে না এবং এটি একটি ফ্যাসিস্ট দল।
অনুষ্ঠানের বিশেষ পর্বে যেসকল প্রবাসী মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মাণনা জানানো হয়, তারা হলেন— বীর মুক্তিযোদ্ধা ও সাবেক এমপি আনিসুজ্জামান খোকন, বীর মুক্তিযোদ্ধা সহ বাবর উদ্দিন, জয়নাল আবেদীন, মোহাম্মদ সুরুজ্জামান, মরি মশিউর রহমান, মোহাম্মদ সেলিম, গোলাম হোসেন, ওয়াহিদ মন্ডল, কাজী মনির হোসেন ও বাতেন সরকার। ডা. মুজিব উপস্থিত মুক্তিযোদ্ধাদের হাতে সম্মাণনা তুলে দেন। এদের মধ্যে কয়েকজন মুক্তিযোদ্ধা অনুষ্ঠানে অনুপস্থিত ছিলেন।
এছাড়াও অনুষ্ঠানের অতিথি আলহাজ সোলায়মান ভূইয়া, ডা. আব্দুস সবুর খান ও আবু সুফিয়ান ছাড়াও আলোচক যথাক্রমে মুক্তিযোদ্ধ কামাল সাঈদ মোহন, মুক্তিযোদ্ধা আজহারুল হক মিলন, মুক্তিযোদ্ধা নূরুল ইসলাম, মুক্তিযোদ্ধা আলী ইমাম শিকদার, মুক্তিযোদ্ধা—সাংবাদিক মাঈনুদ্দীন নাসেরকেও সম্মাণনা জানানো হয়।
যুক্তরাষ্ট্র বিএনপি’র প্রতিষ্ঠাতা সদস্য মোশাররফ হোসেন সবুজ ও জাতীয়তাবাদী স্বেচ্ছাসেবক দলের কেন্দ্রীয় আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক মাকসুদুল হক চৌধুরী’র যৌথ পরিচালনায় অনুষ্ঠানে বক্তারা মহান মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিচারণ এবং বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে মওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানী, শেখ মুজিবুর রহমান, জিয়াউর রহমান ও আতাউল গণি ওসমানী সহ জাতীয় নেতাদের যার যার অবস্থান মূল্যায়ন করে রাষ্ট্রীয়ভাবে যথাযথ মর্যাদা দানের উপর গুরুত্বারোপ করেন। অনুষ্ঠানের অতিথি ছাড়াও আরো বক্তব্য রাখেন সাবেক ছাত্রদল নেতা ডা. জাহিদ দেওয়ান শামীম, যুক্তরাষ্ট্র যুবদলের সাবেক সভাপতি জাকির এইচ চৌধুরী, মুক্তিযোদ্ধা সুরুজ্জামান, মুক্তিযোদ্ধা গোলাম হোসেন, সৈয়দ এ আর ফারুক, মুক্তিযোদ্ধা মশিউর রহমান, হাবিবুর রহমান হাবিব, কাজী মনির হোসেন, বাতেন সরকার প্রমুখ। অনুষ্ঠানের সার্বিক তত্ত্বাবধানে ছিলেন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ফোরামের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও যুক্তরাষ্ট্র বিএনপি নেতা মোতাহার হোসেন।
অনুষ্ঠানের এক পর্যায়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান—কে নিয়ে ‘জাতির জনক’ প্রশ্নে আনিসুজ্জামান খোকনের বক্তব্যে উপস্থিত বিএনপি দলীয় নেতা—কর্মীরা তীব্র প্রতিবাদ জানান।
সভাপতির বক্তব্যে ডা. মুজিবুর রহমান মজুমদার বলেন, মহান মুক্তিযুদ্ধের ঘোষক শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান। তিনি বাংলাদেশের প্রথম রাষ্ট্রপতি ছিলেন এবং তার ঘোষণার পরে এদেশের মানুষ স্বাধীনতা যুদ্ধে স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশগ্রহণ করেন। তিনি বলেন, মহান মুক্তিযুদ্ধে মাধ্যমে আমরা একটি স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশ পেয়েছিলাম, ৭৫ পরবর্তী ঘটনার পরে এদেশের মানুষ শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানকে রাষ্ট্র পরিচালনা করার সুযোগ করে দিয়েছিলেন এবং তিনি একটি আধুনিক বাংলাদেশ গঠনের কাজ যখনই শুরু করেন, ঠিক তখনই একটি প্রতিবেশী রাষ্টে্রর ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে তাকে হত্যা করা হয়েছে। পরবর্তীতে বেগম খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে গণতন্ত্র উদ্ধার ও বাংলাদেশকে একটি আধুনিক রাষ্ট্র হিসেবে গড়ে তোলার কাজ শুরু হয়েছিল। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে এদেশের গণতন্ত্রকে বিগত ১৬ বছরে হত্যা করা হয়েছে এবং ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনা মানুষের উপর অত্যাচার নির্যাতন চালিয়েছে।
ডা. মুজিব বলেন, বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নেতৃত্বে গত ১৬ বছর গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের আন্দোলন এবং সর্বশেষ জুলাই আন্দোলনের মাধ্যমে স্বৈরাচার হাসিনার পতন হয়েছে এবং শেষমেশ দেশ ছেড়ে পালিয়ে গেছে। বাংলাদেশের মানুষ একটি অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের মাধ্যমে বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নেতৃত্বে আগামী দিনের আধুনিক বাংলাদেশ গড়া এবং সুশাসনের জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছে বলেও তিনি অভিমত ব্যক্ত করেন।
অনুষ্ঠানের সার্বিক সহযোগিতা করার জন্য দেশে বিএনপি জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ও যুক্তরাষ্ট্র বিএনপি’র সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক মিজানুর রহমান মিল্টন ভূঁইয়াকে আন্তরিকভাবে ধন্যবাদ জানান হয় সভা থেকে।
অনুষ্ঠানে উল্লেখযোগ্য দলীয় নেতা—কমীর্দের মধ্যে কেন্দ্রীয় যুবদলের সাবেক সহ সভাপতি শহীদুল্লাহ তালুকদার, প্রফেসর আহসান উল্লাহ মিন্টু, যুক্তরাষ্ট্র যুবদল নেতা মোহাম্মদ কাশেম, তারিক চৌধুরী দিপু, ঝলকাটি জেলা বিএনপি’র সাবেক সহ সভাপতি আলহাজ্ব শহীদুল ইসলাম সিকদার, সাবেক ছাত্রনেতা পারভেজ সাজ্জাদ, মোহাম্মদ বাচ্চু মিয়া, নুরে আলম, আশরাফুজ্জামান আশরাফ, মাযহারুল ইসলাম মিরন, মনিরুল ইসলাম মনির, মোহাম্মদ মাসুদ হোসেন, মুস্তাক আহমেদ, আবুল কালাম, রাশেদ রহমান, সাইফুল ইসলাম সৈকত ভূঁইয়া, জান্নাতুল ফেরদৌস অশ্রম্ন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
Posted ১১:৪৬ অপরাহ্ণ | শনিবার, ২১ ডিসেম্বর ২০২৪
nykagoj.com | Monwarul Islam