সোমবার ১৪ই জুলাই, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ৩০শে আষাঢ়, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

শিরোনাম >>
শিরোনাম >>

হাসিনার দেখানো পথেই হাঁটলেন আসাদ!

নিজস্ব প্রতিবেদক   |   সোমবার, ০৯ ডিসেম্বর ২০২৪   |   প্রিন্ট   |   106 বার পঠিত   |   পড়ুন মিনিটে

হাসিনার দেখানো পথেই হাঁটলেন আসাদ!

সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদ বাংলাদেশের পতিত সাবেক প্রধানম›ত্রী শেখ হাসিনার পথেই হাঁটলেন। দীর্ঘ ২৪টি বছর টানা ক্ষমতায় থাকার পর পালিয়ে রাশিয়ায় আশ্রয় নিলেন ৭ ডিসেম্বর। রাশিয়া আসাদকে ২৪ ঘন্টার মধ্যেই রাজনৈতিক আশ্রয় দেবার ঘোষণা দিয়েছে।একই বছরে ৪ মাসের ব্যবধানে ২ জন স্বৈরাচারি শাসকের পতন ও পলায়নের ইতিহাস প্রথম।

বাংলাদেশে শেখ হাসিনার পতনটি স্বশস্ত্র বিপ্লবের মাধ্যমে ঘটেনি। বরং ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য তিনি সরকারি ও বেসরকারি অস্ত্রধারীদের দিয়ে নিরস্ত্র আন্দোলনকামী ছাত্রজনতার ওপর হামলা চালিয়েছে। শহীদ হয়েছে হাজারো ছাত্র জনতা। জনতা তার বাসভবন অভিমুখে যাত্র শুরু করলে জীবন বাঁচাতে ৫ আগষ্ট আকাশ পথে পলায়ন করে ভারতে আশ্রয় নেয়। সিরিয়ায় অভ্যুত্থানটি হয়েছে স্বশস্ত্র বিদ্রোহীদের মাধ্যমে। বিদ্রোহীরা দেশটির একে এক শহরগুলো দখল করে এবং শেষে রাজধানী দামেস্ক নিয়ন্ত্রনে নেয়। অবস্থা বেগতিক দেখে পালিয়ে প্রেসিডেন্ট আসাদ বন্ধু রাষ্ট্র রাশিয়ায় আশ্রয় নিয়েছে। হাসিনা ও আসাদের পলায়ন ও রাজনৈতিক রুট একই। ভারত ও রাশিয়া উভয়ই রাজনৈতিক ও কূটনৈতিক সূত্রে একই সূতায় গাঁথা। এক স্বৈরাচারি ভারতে। অন্যজন রাশিয়ায়।

গত ২ বছর ধরে রাশিয়া ও ভারতের সাথে দহররম মহররম চূড়ান্ত পর্যায়ে গিয়েছিল শেখ হাসিনা। হাসিনার সাথে যুক্তরাষ্ট্রের টানাপোড়েনকালে প্রায়শই রাশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রী কিংবা ঢাকাস্থ রাশিয়ার রাষ্ট্রদূত হাসিনার পক্ষে সাফাই গিয়ে বিবৃতি দিতেন। আর ভারততো ছিল এক পা বাড়িয়ে। সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্দুল মোমেনের ভাষায় স্বামী—স্ত্রীর মতো। আসাদের সাথে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট পুতিনের সম্পর্ক ছিল হরিহরি আত্মায়। গত ১৩টি বছর সিরিয়া প্রশ্নে যুক্তরাষ্টের বিপক্ষে অবস্থান নিয়ে রাশিয়া যুদ্ধজাহাজ ও যুদ্ধ বিমান বসিয়ে আসাদকে টিকিয়ে রেখেছিল। কিন্তু শেষ রক্ষা করতে পারেনি। পলাতক আসাদকে আশ্রয় প্রদান করেই রাশিয়াকে বাস্তবতা মেনে নিতে হল।

সাংবাদিক ইমরান আনসারি তারা স্ট্যাটাসে সোশাল মিডিয়ায় লিখেছেন, স্বৈরাচারের পলায়নই একমাত্র মুক্তি। আর এর মডেল শেখ হাসিনা। অবস্থাদৃষ্টে মনে হচ্ছে রাশিয়ায় বসেই দেশটির স্বাভাবিক অগ্রযাত্রা রোধ করবার চেষ্টা করবেন বাসার আল আসাদ। অনেকটা হাসিনা ষ্টাইলেই। এত দীর্ঘ সময়ের স্বৈরশাসকের পতন আপাতত স্বস্তির খবর হলেও যে মাত্রায় বৈশ্বিক প্লেয়াররা সেখানে সম্পৃক্ত কি হবে তা বলা কঠিন। যুক্তরাষ্ট্র সতর্কতার সাথে মন্তব্য করেছে। কারণ একদিকে তারা যেমন ইরান ও রাশিয়া সমর্থিত আসাদের পদত্যাগে খুশি, অন্যদিকে আইসিস এর উত্থান নিয়ে আতংকিত। প্রেসিডেন্ট বাইডেন অলরেডি বলেছেন সেখানে আইসিসের কোনো উত্থানকে মেনে নেবে না যুক্তরাষ্ট্র। এ বিজয়কে অনেকে আবার দেখছেন এরদোগানের বিজয় হিসেবে। কারণ শেষতক এ অভিযানে তুরস্কের সব ধরণের সাপোর্ট ছিল। পরোক্ষভাবে এটিকে ইরানের পরাজয় বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। ইরানের এ পরাজয়ে অনেকে মনে করছেন সিরিয়ায় ইজরাইলের স্বপ্নভূমি তৈরীতে এ বিজয় সাহায্য করবে। সিরিয়ার পরিস্থিতি এতই জটিল শুধুমাত্র খবরের কাগজ আর মিডিয়ার ভাষ্য শুনে বিশ্লেষণ করা কঠিন। তবে স্বৈরাচারের মূর্তিতে বাচ্চাদের পিপি বর্ষণ ভবিষ্যত স্বৈরাচারদের একটি বার্তা দিয়েছে। কিন্তু যখন কেউ স্বৈরাচার হিসেবে আবির্ভূত হয় তখন সে শেষ পরিণতির কথা ভাবে না।

Facebook Comments Box

Posted ৩:৪৯ পূর্বাহ্ণ | সোমবার, ০৯ ডিসেম্বর ২০২৪

nykagoj.com |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

advertisement
advertisement
advertisement
সম্পাদক
আফরোজা ইসলাম
কন্ট্রিবিঊটিং এডিটর
মনোয়ারুল ইসলাম
Contact

+1 845-392-8419

E-mail: nykagoj@gmail.com