ড.ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে জনমত গড়ে তুলতে সাঁড়াশি অভিযান চালাচ্ছে আওয়ামী লীগ ও তাদের সর্মথকরা। যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসরত শেখ হাসিনার সন্তান সজীব ওয়াজেদ জয় এই জনমত গঠনের নেতৃত্ব দিচ্ছেন। ৫ মিলিয়ন ডলারেরও অধিক তহবিল নিয়ে ভারত, যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যে লবিষ্ট নিয়োগের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রে আওয়ামী লীগের সর্মথক ও বেশ কিছু বুদ্ধিজীবি সরসাসরি জয়ের সাথে কাজ করছেন। তাদের মধ্যে অনেকে মূলধারা রাজনীতির সাথেও জড়িত। কার্যত তারা প্রধান্য দিচ্ছেন যুক্তরাষ্ট্রকেই। ২০ জানুয়ারি ডোনাল্ড ট্রাম্পের শপথের পর তারা অলআউট লবিং এ নেমে পড়বেন। ইতোমধ্যেই তারা রিপাবলিকান পার্টির কংগ্রেসম্যানদের সাথে যোগাযোগ রাখছেন।
যুক্তরাষ্ট্রে বিপুল সংখ্যক ভারতীয় আমেরিকান মূলধারার রাজনীতির সাথে জড়িত। কংগ্রেস সহ প্রশাসনের বিভিন্ন স্তরে কাজ করছেন। আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতৃত্ব লবিং প্রক্রিয়ায় তাদের কাজে লাগাতে চাচ্ছেন।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও দেশটির কংগ্রেসের মাধ্যমে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আরোপের চেষ্টা চালানো হবে বলে জানিয়েছেন এক ভারতীয় আমেরিকান নেতা। আগামী বছর ডোনাল্ড ট্রাম্প ক্ষমতা গ্রহণের পরই বাংলাদেশের বিরুদ্ধে তারা কাজ শুরু করবেন বলে জানিয়েছেন তিনি।
ভারতীয় মার্কিন নেতা ডাক্তার ভারত বড়াই বার্তাসংস্থা পিটিআইকে ইতিমধ্যে জানিয়েছেন, নির্বাচনের আগে বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের ওপর নির্যাতনের অভিযোগ তুলে ডোনাল্ড ট্রাম্প যে পোস্ট দিয়েছিলেন সেটি তাদের উদ্বুদ্ধ করেছে। আর এ বিষয়টি কাজে লাগিয়েই বাংলাদেশের ওপর নিষেধাজ্ঞা দিতে তারা ট্রাম্পকে উদ্বুদ্ধ করার চেষ্টা করবেন।
পিটিআইকে এই ভারতীয় আমেরিকান বলেছেন, বাংলাদেশে হিন্দু ও তাদের মন্দিরে হামলার ব্যাপারে ট্রাম্প সাহসী বিবৃতি দিয়েছেন। তিনি একজন সাহসী ব্যক্তি, যদি পরিস্থিতির উন্নতি না হয় তাহলে তিনি বাংলাদেশের বিরুদ্ধে অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞার কথা চিন্তা করতে পারেন। ইউরোপীয়ান ইউনিয়ন ও যুক্তরাজ্যেও যুক্তরাষ্ট্রে থেকে বিশেষ নির্দেশনা পাঠানো হয়েছে। লবিং প্রক্রিয়া,লবিষ্ট ফার্ম নিয়োগ ও যুক্তরাষ্ট্রের রাজনীতিকদের সাথে যোগাযোগ স্থাপনে জয় সরাসরি কাজ করছেন। সিঙ্গাপুরের ধণাঢ্য ব্যবসায়ী খান পরিবারের এক সদস্য আওয়ামী লীগের ফান্ড তৈরিতে সক্রিয় ভুমিকাা পালন করছেন বলে জানা গেছে।
বাংলাদেশের ওপর নিষেধাজ্ঞা দিতে ট্রাম্পের কাছে পৌঁছাতে ভারতীয় মার্কিনিরা সক্রিয়ভাবে কাজ করছেন বলেও জানিয়েছেন তিনি। বিশেষ করে বাংলাদেশের তৈরি পোশাক খাতের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপের চেষ্টা চালানো হবে বলেও ইঙ্গিত দিয়েছেন এই ব্যক্তি।
আওয়ামী ঘরণার একজন ব্যবসায়ী আজকালকে বলেন, দলীয় লেবাসে লবিং এর চেয়ে আমরা ভিন্ন আঙ্গিকে এগিয়ে যাব। বাংলাদেশের মাইনোরিটি ইস্যু বিশেষ করে হিন্দু ও খ্রীষ্টান সম্প্রদায়ের ওপর নির্যাতনের বিষয়টি মার্কিন রাজনীতিকরা ওয়াকিবহাল। বিশেষ করে নির্বাচনের আগে এ ব্যাপারে ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিবৃতি নতুন পথ বাতলে দিয়েছে। বাংলাদেশে যেভাবে বিরোধী দলকে নির্যাতন চালাচ্ছে, তাতে ট্রাম্প প্রশাসন চুপ করে বসে থাকবে না। ক্লিনটন পরিবারের বন্ধু ইউনূসের সরকারের বিরুদ্ধে জনমত গড়ে তোলা খুবই সহজ হবে। আমাদের প্রধান টার্গেট থাকবে ইউনূস সরকারের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করানো। যে অস্ত্র আওয়ামীলীগের উপর ব্যবহার করা হয়েছে, তা ইউনূসদের উপরও ব্যবহার করা হবে। বিশ্বব্যাপী লবিং করতে অর্থের কোন অভাব হবে না বলে আমার বিশ্বাস।
যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের সভাপতি ড. সিদ্দিকুর রহমান হাসিনার সরকার পতনের পরদিন থেকেই আন্দোলনে রয়েছেন। নিউইয়র্ক, ওয়াশিংটন ও ফ্লোরিডায় ইউনূসের নেতৃত্ত্বাধীন অন্তর্বর্তকালীন সরকারের বিরুদ্ধে সভা সমাবেশ করেছেন। আন্দোলনের ব্যাপারে দুষ্টি আর্কষন করলে তিনি আজকালকে বলেন, বাংলাদেশে আমাদের সভা সমাবেশ করতে দিচ্ছে না অবৈধ সরকার। হাার হাজার মানুষ হত্যা করেছে। জেলখানাগুলো আওয়ামীলীগের নেতকির্মিদের আর যায়গা দিতে পারছে না। ৩ মাসেই তারা ফ্যাসিবাদেরে মূর্তি ধারন করেছে। প্রবাস থেকেই অবৈধ ইউনূস সরকারের পতন যাত্রা শুরু হবে।
তাকে প্রশ্ন করা হয়, আপনারা কি আন্দোলন ও লবিং ফার্ম নিয়োগে বিশাল ফান্ড পাচ্ছেন? এ প্রশ্নের জবাবে ড. সিদ্দিক বলেন, একটি ডলারও কেন্দ্র থেকে যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগ পায় নি। এটা আওয়ামী বিরোধীদের প্রোপাগান্ডা। আমি দল চালাচ্ছি নেতাকর্মিদের চাঁদা দিয়ে। প্রতিটি কর্মসূচিতে আমরা চাঁদা তুলে খরচ বহন করি। তা করছি দল ও নেত্রীকে ভালোবেসে। ক্ষমতায় থাকাবস্থায় যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামীলীগের যেসব নেতা বাংলাদেশে গিয়ে কোটি কোটি টাকা কামিয়েছেন ও বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের মালিক—চেয়ারম্যান হয়েছেন দলের এই দুঃসময়ে তাদের দেখছি না।