নিজস্ব প্রতিবেদক | শনিবার, ২৪ ডিসেম্বর ২০২২ | প্রিন্ট | 95 বার পঠিত | পড়ুন মিনিটে
আজ সবার দৃষ্টি রাজধানীর ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের দিকে। এখানে হচ্ছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের ২২তম সম্মেলন। দুই ভাগে বিভক্ত সম্মেলনের শেষ ভাগে হবে দলটির নতুন নেতৃত্ব নির্বাচন। ওই নেতৃত্বের সামনে থাকছে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের বৈতরণী পার হওয়ার চ্যালেঞ্জ। দলকে ঐক্যবদ্ধ রেখে নতুন নেতৃত্বকে এগিয়ে নিতে হবে নির্বাচনী জয়ের দিকে। তবে সম্মেলনে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে বড় ধরনের পরিবর্তনের সম্ভাবনা দেখছেন না রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। তারা মনে করছেন, জাতীয় নির্বাচনের আগে দলে বড় পরিসরে পরিবর্তনের ঝুঁকিতে যাবে না ক্ষমতাসীন দল। নির্বাচনের এক বছর আগে এটা করে দল গোছানো সহজতর হবে না বলে তারা মনে করেন। অবশ্য ক্ষুদ্র পরিসরে হলেও বিতর্কিতদের ছেঁটে ফেলতে পারে। এটা সম্ভব হলে আওয়ামী লীগের জন্য ভালোই হবে বলে মন্তব্য করেন তারা।
নেতাকর্মীদের সতর্ক থাকার বার্তা
এদিকে আজ মফস্বলে বিএনপি’র ভাঙচুর-অগ্নিসংযোগের পরিকল্পনা রয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। এক্ষেত্রে নেতাকর্মীদের সতর্ক থাকার বার্তা দিয়েছেন তিনি। গতকাল আওয়ামী লীগের সম্মেলনস্থল পরিদর্শনে এসে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন। ওবায়দুল কাদের বলেন, আজকে বাইরে যে তাণ্ডব চলছে, সাম্প্রদায়িক শক্তিকে নিয়ে আজকে বিএনপি জোটের নেতৃত্ব দিচ্ছে, ১০ তারিখে তারা ফেল করেছে। তারা মাথা নত করবে না। তারা মরিয়া হয়ে নেমেছে। কারণ তারা জানে নির্বাচনে শেখ হাসিনাকে হারানো সহজ নয়। কাজেই তারা এখন আন্দোলন, জ্বালাও-পোড়াও সন্ত্রাস এসব অপকর্ম করে সরকার হটানোর পাঁয়তারা করছে। তিনি বলেন, আমরা শুনতে পাচ্ছি আগামীকাল (আজ) ঢাকায় আমাদের সম্মেলন, তারা তাদের কর্মসূচি পিছিয়েছে, কিন্তু সারা বাংলাদেশে তাদের কিন্তু প্রোগ্রাম আছে এবং এই প্রোগ্রাম উপলক্ষে অগণতান্ত্রিক, অসাংবিধানিক পথে সভা-সমাবেশ ও বিক্ষোভ মিছিল করতে চায়। গাড়ি ভাঙচুর, গাড়ি পোড়াতে শুরু করেছে। মফস্বলে ভাঙচুর-অগ্নিসংযোগ তাদের এ ধরনের প্রোগ্রাম রয়েছে। মফস্বল খালি করে সকল আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের ঢাকায় আসতে নিষেধ করেছেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, পরিষ্কারভাবে বলতে চাই, আমাদের জাতীয় সম্মেলন হবে। বিপুলসংখ্যক নেতাকর্মী এখানে আসবেন। কিন্তু তাই বলে আওয়ামী লীগ তার এলাকা খালি করে আসবে না। আমাদের লোকজন প্রস্তুত থাকবে। আমি আবারো বলছি, ঢাকার বাইরে যারা থাকবেন সম্মেলনে তো সবাই আসবেন না। যারা থাকবে ১০ই ডিসেম্বরের মতো সতর্ক পাহারায় থাকবে। সম্মেলন নির্বাচনের দায়িত্ববোধের প্রতিফলন ঘটবে বলেও জানান আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক।
দায়িত্ব বদলালেও দলেই থাকবো
আই অ্যাম নট এ পারফেক্ট লিডার এবং আমিও মনে করি ভুলত্রুটিও আছে, সাফল্যও আছে নিজের ব্যাপারে মূল্যায়ন করে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেন, কাজেই ব্যর্থতা থেকে শিক্ষাও নেবো। যেখানে ভুল আছে, যেখানে পিছিয়ে আছি সংশোধনের জন্য আমরা সম্মিলিতভাবে আগামী দিনে চেষ্টা করবো। কে কোন দায়িত্বে থাকলো এটা কোনো ব্যাপার না। দায়িত্ব বদলালেও আমরা তো এই দলেই আছি। দলেই থাকবো। দলের কাজ করবো। গতকাল দলের ২২তম জাতীয় কাউন্সিল উপলক্ষে বঙ্গবন্ধু এভিনিউ কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ মন্তব্য করেন। আপনি দুইবার সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন, আপনি নিজের মূল্যায়ন কীভাবে দেখেন তার জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, দেখুন কাজ করতে গেলে…? ভুলক্রটি তো থাকবেই। সাফল্য আছে। তবে প্যান্ডামিকের জন্য আমরা একটা বছর কাজ করতে পারিনি। এর ভেতরেও আমাদের সহকর্মীরা অনেক সহযোগিতা করেছেন। অনেক কাজ করেছেন। মহামারিতে আমাদের সহযোগী সংগঠন, ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগ যথেষ্ট সহযোগিতা করেছেন। তিনি আরও বলেন, আমরা ইনঅ্যাকটিভ ছিলাম না কিন্তু সাংগঠনিক কিছু কার্যক্রম তখন আমাদের স্থগিত রাখতে হয়েছে। আমি মনে করি স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী উদ্যাপন এবং বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী উদ্যাপন আমাদের সবচেয়ে বড় সাফল্য। এবারই অনেকদিন পর উপজেলা এবং তৃণমূল পর্যায়ে সম্মেলন বেশি অনুষ্ঠিত হয়েছে জানিয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, আমাদের বিভাগীয় দায়িত্বপ্রাপ্ত যে নেতারা আছেন এ ব্যাপারে তাদের অবদান যথেষ্ট এবং তারা দায়িত্ব পালন করছেন বলেই এটা সম্ভব হয়েছে। ওবায়দুল কাদের বলেন, আওয়ামী লীগ গত ১৪ বছর ধরে একাধারে রুলিং পার্টি। রুলিং পার্টিতে কিছু সমস্যা থাকবে। যেমন আজ যিনি আছেন, তিনি আবারো থাকতে চাইবেন। আবার নতুন কারও আকাঙ্ক্ষা থাকতে পারে? এখানেই এই দুই আকাঙ্ক্ষার মধ্যে একটা কনফ্লিট অনেক সময় হয়। সেটাকে কেন্দ্র করে নেতাকর্মীদের মধ্যে প্রতিক্রিয়া থাকে। এই বিষয়গুলো পৃথিবীর সব দেশেই আছে, আমাদের এখানেও আছে। কিছু কিছু জায়গায় সামাল দিতে অনেক কষ্ট হয়। আমাদের নেত্রীরও হস্তক্ষেপ করতে হয়েছে। এসব আছে কিছু বড় দল, ছোটখাটো কিছু সমস্যা তো থাকবেই। আমাদের যারা আপিল করেছে ক্ষমা চেয়েছেন নেত্রী সম্মেলনকে সামনে রেখে তাদের ক্ষমা করেছেন। অন্য যারা আবেদন করবেন ফেস টু ফেস সেগুলোও পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে অবশ্যই নেত্রী পদক্ষেপ নেবেন। নেত্রী নিজেই এ বিষয়টি দেখছেন বলেও জানান টানা দুইবারের এই সাধারণ সম্পাদক। এ সময় উপস্থিত ছিলেন- দলের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ড. আব্দুর রাজ্জাক, জাহাঙ্গীর কবির নানক, আব্দুর রহমান, মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া, এডভোকেট কামরুল ইসলাম, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফ, ড. হাছান মাহমুদ, আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন, বিএম মোজাম্মেল হক, মির্জা আজম, এসএম কামাল হোসেন, সফিউল আলম চৌধুরী নাদেল, প্রচার ও প্রকাশনা বিষয়ক সম্পাদক আব্দুস সোবহান গোলাপ, দপ্তর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া, উপ-দপ্তর সম্পাদক সায়েম খান, কার্যনিবাহী সদস্য মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিনসহ অনেকে।
Posted ৩:১৮ পূর্বাহ্ণ | শনিবার, ২৪ ডিসেম্বর ২০২২
nykagoj.com | Monwarul Islam