
আন্তর্জাতিক ডেস্ক | বৃহস্পতিবার, ০৬ জুলাই ২০২৩ | প্রিন্ট | 124 বার পঠিত | পড়ুন মিনিটে
যুক্তরাজ্য থেকে বিলাসবহুল প্রমোদতরী টাইটানিক নিউইয়র্কের উদ্দেশে যাত্রা করে ১৯১২ সালের ১৪ এপ্রিল। রাত ১১টা ৪০ মিনিটে উত্তর আটলান্টিকে বরফখণ্ডের সঙ্গে ধাক্কা লেগে এটি ডুবতে শুরু করে। বিশাল জাহাজটি ডুবতে সময় নিয়েছিল ২ ঘণ্টা ৪০ মিনিট। ইতিহাসে অন্যতম বিয়োগান্ত ঘটনা এটি। এতে প্রাণ যায় দেড় হাজারের বেশি মানুষের। জাহাজটি যে প্রথম যাত্রায়ই ডুবে যাবে– এমনটা কেউ কল্পনাও করেননি। টাইটানিক নিয়ে অনেক সাহিত্য-সিনেমা হয়েছে। ডুবুরিরা সমুদ্রের গভীরে গিয়ে বারবার দেখে এসেছেন ধ্বংসাবশেষ।
টাইটানিকের খোঁজ মিললেও যুগে যুগে বহু জাহাজ, নৌকা, রণতরী সমুদ্রে হারিয়ে গেছে, যেগুলোর ঠিকানা মানুষ আজও জানতে পারেনি। এমন জাহাজের সংখ্যা কয়েক লাখ বলেই ধারণা করা হয়। ১৯০০ সালে আজিয়ান সাগরে ডুবুরিরা আবিষ্কার করেন আন্তিকিথেরা জাহাজের ধ্বংসাবশেষ। এটি ছিল রোমান সাম্রাজ্যকালের একটি পণ্যবাহী জাহাজ। দুই হাজার বছরেরও আগে এটি সাগরের গভীরে তলিয়ে যায়। এটি এখন সামুদ্রিক মাছের আশ্রয়স্থল। এরই মধ্যে গ্রিসের উপকূলে আজিয়ান সাগরে আন্তিকিথেরা আবিষ্কারের শতবর্ষ পার হয়েছে। এ আবিষ্কার চোখে আঙুল দিয়ে বিশ্বকে দেখিয়েছে যে, সাগরে বহু জাহাজের ধ্বংসাবশেষ পড়ে আছে, যেগুলো সম্পর্কে মানুষের ধারণাই নেই।
ভূমধ্যসাগরের পূর্ব ও পশ্চিমাঞ্চলকে সংযুক্ত করা শারকি ব্যাঙ্ক এলাকায় সম্প্রতি অভিযান চালায় ইউনেস্কো। হাজার বছর ধরে এ পথ ধরে চলাচল করেছে লাখ লাখ জাহাজ। বহু জাহাজ সাগরে তলিয়ে গেছে। আধুনিক প্রযুক্তি, ওয়াটার রোবট ব্যবহার ও আট দেশের বিজ্ঞানীদের একটি গ্রুপের চেষ্টায় সেখানে সমুদ্রের তলদেশে তিনটি জাহাজের ধ্বংসাবশেষ আবিষ্কার করা সম্ভব হয়েছে। জাহাজগুলোর একটি খ্রিষ্টপূর্ব প্রথম শতকের, একটি খ্রিষ্টের জন্মের দ্বিতীয় শতকের এবং একটি ঊনবিংশ বা বিংশ শতকের। ইউনেস্কোর ধারণা, সমুদ্রের ঢেউয়ের নিচে এ রকম বহু জাহাজের ধ্বংসাবশেষ যুগ যুগ ধরে পড়ে আছে। সম্প্রতি নেদারল্যান্ডসের উপকূলে এমন একটি নৌকার সন্ধান পাওয়া যায়, যেটি ১০ হাজার বছরের পুরোনো। শুধু নৌকা-জাহাজের মতো নৌযানই নয়, বর্তমানে পৃথিবীর সাগর-মহাসাগরের তলদেশে মানবসৃষ্ট নানা বস্তু পাওয়া যাচ্ছে। হাজার হাজার বছর ধরে মানুষ সমুদ্রপথে বাণিজ্য করছে। যুদ্ধও হয়েছে অনেক। অনুসন্ধান-অভিযানও চলেছে অবিরত। জলদস্যুর রৌপ্যপূর্ণ জাহাজ ডুবেছে, বিলাসবহুল রাজকীয় তরীও ডুবেছে। সবই ধারণ করে আছে সমুদ্রের সুবিশাল তলদেশ।
‘রেক সাইট’ নামের একটি অনলাইনের তথ্যমতে, ডুবে যাওয়া নৌযানের সংখ্যা ২ লাখ ৯ হাজারের বেশি। তবে গ্লোবাল মেরিটাইম রেকস ডাটাবেজ বলছে, আড়াই লাখের বেশি নৌযান সমুদ্রে হারিয়ে গেছে। এর অনেকটিরই সন্ধান মেলেনি। কেবল দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধকালেই আটলান্টিক ও প্রশান্ত মহাসাগরে ১৫ হাজার নৌযান ডুবেছে। এক গবেষণার ভিত্তিতে ইউনেস্কো জানায়, মহাসাগরগুলোর তলদেশে ৩০ লাখের বেশি অনাবিষ্কৃত নৌযান চিরবিশ্রামে আছে। এর মধ্যে শারকি ব্যাঙ্ক, গ্রিসের ফৌরি দ্বীপ এলাকা এবং ভূমধ্যসাগরের কিছু এলাকায় নৌকা ও জাহাজডুবির ঘটনা সবচেয়ে বেশি। এসব জাহাজে থাকা কোটি মানুষের সলিলসমাধি হয়েছে। সূত্র : বিবিসি
Posted ১১:১৬ পূর্বাহ্ণ | বৃহস্পতিবার, ০৬ জুলাই ২০২৩
nykagoj.com | Stuff Reporter