বৃহস্পতিবার ২৫শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১২ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

রাবি ক্যাম্পাসে এখন আর দেখা মেলে না জলমুরগির

ডেস্ক রিপোর্ট   |   রবিবার, ১৩ নভেম্বর ২০২২   |   প্রিন্ট   |   212 বার পঠিত   |   পড়ুন মিনিটে

রাবি ক্যাম্পাসে এখন আর দেখা মেলে না জলমুরগির

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে প্রায়ই দেখা মিলতো এই পাখিটির। তবে পর্যাপ্ত খাবার ও আবাসিকতার অভাবে রাবি ক্যাম্পাস থেকে দুর্লভ এই পাখিটি বিলুপ্ত হওয়ার আশঙ্কা করছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের পাখিপ্রেমি শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা। বিরল প্রজাতির এই পাখিটি আগের মতো এখন আর ক্যাম্পাসে সহসা দেখা না মেলার কথা বলছেন তারা।

তারা বলছেন, আগের মতো এখন আর ক্যাম্পাসে জলমুরগি দেখা যায় না। এ ধরনের ওয়াটার বার্ডগুলা একসময় রহমতুন্নেসা হলের পেছনে সহসা দেখা মিলতো। সেখানে ২-৩টা জলাশয় ছিল। তবে বর্তমান সেখানে শেখ হাসিনা হল নির্মিত হওয়ায় জলাধারগুলো পূরণ করে ফেলা হয়েছে। ফলে জলমুরগি ক্রমশ হারিয়ে ফেলেছে তাদের আবাস ও প্রজননস্থল। তাই এদের সংখ্যাও দ্রুতগতিতে হ্রাস পেয়েছে।

জানা যায়, নান্দনিক সৌন্দর্যের অধিকারী এই পাখিটি লম্বায় ৩০-৩৮ সেন্টিমিটার। ঠোঁটের গোড়া প্রবাল লাল, অগ্রভাগ হলদেটে। মাথা, চিবুক, ডানা ও বুক কালচে-মেটে, তাতে থাকে ধূসরের আভা।

বিজ্ঞাপন

ডানায় কিছু সাদা দাগ রয়েছে। লেজের তলা সাদা। ব্যাঙাচি, ছোট মাছ, ঘাস বীজ, কীট-পতঙ্গ ইত্যাদি এদের খাবার। প্রজনন সময় মে থেকে আগস্ট। ডিম পাড়ে ৪-৭টি। ডিম ফুটে ১৮-২২ দিনে। পাখিটির ইংরেজি নাম Common Moorhen বা Moorhen । বৈজ্ঞানিক নাম Gallinula chloropus।
প্রজনন মৌসুমে চঞ্চুর রঙ হয় কমলা-লাল; আগাটা থাকে হলুদ। পা ও আঙ্গুল ধূসরাভ-সবুজ হয়ে যায়। প্রজনন মৌসুম বাদে অন্য সময় চঞ্চু ফ্যাকাশে হলুদ। চোখের রঙ লাল। পা, পায়ের পাতা ও আঙ্গুল অনুজ্জ্বল। স্ত্রী-পুরুষের চেহারা অভিন্ন। অপ্রাপ্তবয়স্ক পাখির প্রায় পুরো দেহ বাদামি এবং বুক ও বগলে ধূসর আভা থাকে। পেট সাদাটে। চঞ্চু অনুজ্জ্বল সবুজ। সদ্য ফোটা ছানাগুলো কালচে হয়ে থাকে।

জলমুরগির বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে জানতে চাইলে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) প্রাণিবিদ্যা বিভাগের শিক্ষক, বাংলাদেশের প্রখ্যাত পাখি গবেষক বিশ্ববিদ্যালয় প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ড. আমিনুজ্জামান মো. সালেহ রেজার বলেন, সারা দেশের হাওর, বিল, পুকুর, বাদা ও জলজ উদ্ভিদসমৃদ্ধ জলাশয়ে জলমুরগি বিচরণ করে। সচরাচর জোড়ায় বা ছোট দলে থাকে। ওরা ভালো সাঁতারু, পানিতে ডুবে থাকতেও ওস্তাদ। সাঁতার কেটে বা ভাসমান জলজ উদ্ভিদের উপর হেঁটে হেঁটে ফল, বীজ, কীট-পতঙ্গ, শামুক-গুগলি, ব্যাঙ, ছোট মাছ ইত্যাদি খায়।

এই গবেষক বলেন, সাঁতার কাটা ও হাঁটার সময় মাথাটা চমৎকারভাবে আগে-পিছে দোলায়। ডাহুকের মতো সারাক্ষণই ছোট্ট লেজটি নাড়াতে থাকে। থেমে থেমে অনেকটা ব্যাঙের মতো ‘ক্রুক-ক্রুক-ক্রুক’ শব্দে ডাকে। তবে প্রজননকালে মুরগির মতো ‘ক্যাহ, কুয়াহ, কাহ-কাহ-কাহ…’ বা ‘কিরক-কিরক-কুরাহ …’ শব্দে ডাকে।

বিরল প্রজাতির এই পাখিটি ক্যাম্পাস থেকে বিলুপ্তির শঙ্কা প্রকাশ করে এই গবেষক বলেন, কিছুদিন আগেও রাবি ক্যাম্পাস ঈর্ষণীয় জীববৈচিত্র্যের অধিকারী ছিল। নির্দিষ্ট বনভূমি ছাড়াও ক্যাম্পাসে ছিল ছোট-বড় ঝোপঝাড়। কিন্তু গত কয়েক দশকে উন্নয়নের নামে জলাশয়সহ বনভূমিগুলো বিলীন করে দেয়া হয়েছে। ফলে জলমুরগিসহ বিরল প্রজাতির পাখিগুলো রাবি ক্যাম্পাস থেকে বিলুপ্তির হুমকিতে আছে।

Facebook Comments Box

Posted ৩:৫৬ অপরাহ্ণ | রবিবার, ১৩ নভেম্বর ২০২২

nykagoj.com |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

advertisement
advertisement
advertisement

ক্যালেন্ডার

সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০  
সম্পাদক
আফরোজা ইসলাম
কন্ট্রিবিঊটিং এডিটর
মনোয়ারুল ইসলাম
Contact

+1 845-392-8419

E-mail: nykagoj@gmail.com