রবিবার ১১ই মে, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ২৮শে বৈশাখ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

বিশ্ববিদ্যালয় পরিবর্তনের সুযোগ বন্ধে হতাশা

শিক্ষা ডেস্ক   |   সোমবার, ২৬ ডিসেম্বর ২০২২   |   প্রিন্ট   |   247 বার পঠিত   |   পড়ুন মিনিটে

বিশ্ববিদ্যালয় পরিবর্তনের সুযোগ বন্ধে হতাশা

মাসুদ হুসাইনের স্বপ্ন ছিল জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে (জবি) পড়ার। গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষার জন্য কঠোর পরিশ্রমও করেছেন তিনি। বিজ্ঞান বিভাগে ৬২ নম্বর পেয়ে গুচ্ছভুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের সাতটিতে আবেদন করেন। প্রথমেই সুযোগ পান বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (বশেমুরবিপ্রবি)। গুচ্ছের নিয়ম অনুযায়ী প্রাথমিক ভর্তি নিশ্চিত করে অপেক্ষা করেন স্বপ্নের জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য। তবে গুচ্ছ কমিটির সিদ্ধান্তে তাঁর সে স্বপ্ন অধরাই রয়ে গেছে। নতুন সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, মাসুদ মাইগ্রেশন বা বিশ্ববিদ্যালয় পরিবর্তন করতে পারবেন না।

এ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে মাসুদ বলেন, নতুন এ নিয়মের কারণে তিনি জবিতে পড়তে পারবেন না। মেধা তালিকায় তাঁর অবস্থান ছিল ৪ হাজার ৭০৮। অথচ এর কম নম্বর পেয়ে অনেকে জবিতে ভালো বিষয়ে ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন। তিনি বলেন, এক বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি থাকায় তিনি জবিতে সুযোগ পাননি। উপাচার্যদের সিদ্ধান্তের কারণে এ পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। তিনি ফের বিশ্ববিদ্যালয় মাইগ্রেশন চালুর দাবি জানান।

শুধু মাসুদ হুসাইনই নন, এ অবস্থা আরও অনেক শিক্ষার্থীর। তাঁদের কষ্ট লাঘব করতে শুরু করা হয়েছিল এ গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষা। এতে অংশ নেয় ২২টি বিশ্ববিদ্যালয়। কিন্তু এ পরীক্ষা তাঁদের ভোগান্তি ঘোচাতে পারেনি; উল্টো বাড়িয়েছে।

জানা যায়, শুরু থেকে ষষ্ঠ মেধাতালিকা পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয় পরিবর্তনের সুযোগ (মাইগ্রেশন) চালু ছিল। তবে ১৯ ডিসেম্বর ভর্তি কমিটির এক বিজ্ঞপ্তিতে সপ্তম মেধাতালিকা থেকে এ মাইগ্রেশন বন্ধের সিদ্ধান্তের কথা জানানো হয়। এতে বলা হয়, সপ্তম মেধাতালিকা থেকে ভর্তিচ্ছুরা গুচ্ছভুক্ত এক বা একাধিক বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য বিবেচিত হলে তাকে অবশ্যই পছন্দমতো একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে হবে। অন্যথায় গুচ্ছভুক্ত কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে পারবে না। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, প্রাথমিক ভর্তিকৃত বিশ্ববিদ্যালয় ব্যতীত শিক্ষার্থীরা অন্য কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য বিবেচিত হবে না। ফলে যোগ্যতা থাকা সত্ত্বেও পছন্দের বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ হারাচ্ছেন তাঁরা। বাধ্যতামূলকভাবেই ভর্তি হতে হচ্ছে তাঁদের।

এ সিদ্ধান্তে ক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা গত ২০ ডিসেম্বর বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের কাছে স্মারকলিপি দিয়েছেন। সেই সঙ্গে তাঁরা মানববন্ধন ও অনশন কর্মসূচি পালন করেছেন। শিক্ষার্থীদের দাবির প্রেক্ষাপটে মাইগ্রেশন বন্ধের সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা করতে গত বৃহস্পতিবার গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষা সংশ্নিষ্ট কমিটি বৈঠক করে। বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যদের অংশগ্রহণে ওই বৈঠকে মাইগ্রেশন বন্ধের সিদ্ধান্তই পুনর্বহাল রাখা হয়। বৈঠকে কমিটির সদস্যরা জানান, দ্রুত ভর্তি কার্যক্রম শেষ করতে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

রংপুর বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক হাসিবুর রশীদ বলেন, গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষা কমিটির সর্বশেষ সভার সিদ্ধান্ত এখনও বহাল আছে। কোনো পরিবর্তন আসেনি। সিদ্ধান্তের পরিবর্তন হবে কিনা, এটা জবি উপাচার্য ও শাবিপ্রবির উপাচার্য ভালো বলতে পারবেন। তবে কমিটির নেতৃত্বে থাকা জবি উপাচার্য অধ্যাপক এমদাদুল হক এবং শাবিপ্রবি উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দীন আহমদ কোনো মন্তব্য করেননি।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে কমিটিতে থাকা এক উপাচার্য বলেন, তিনি মুখপাত্র নন। তবে বৈঠকে এক-দুই সদস্যদের মত বা দ্বিমতে কিছু হয় না। সংখ্যাগরিষ্ঠদের মতামতের ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত হয়। শিক্ষার্থীদের ষষ্ঠ মেধাতালিকা পর্যন্ত সুযোগ দেওয়া হয়েছে। এখন দ্রুত ক্লাস শুরু করতে চান তাঁরা। এ কারণে তাড়াতাড়ি করা হচ্ছে।

Facebook Comments Box

Posted ১২:৪৪ অপরাহ্ণ | সোমবার, ২৬ ডিসেম্বর ২০২২

nykagoj.com |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

advertisement
advertisement
advertisement
সম্পাদক
আফরোজা ইসলাম
কন্ট্রিবিঊটিং এডিটর
মনোয়ারুল ইসলাম
Contact

+1 845-392-8419

E-mail: nykagoj@gmail.com