
আন্তর্জাতিক ডেস্ক | মঙ্গলবার, ৩১ জানুয়ারি ২০২৩ | প্রিন্ট | 127 বার পঠিত | পড়ুন মিনিটে
’ভারত জোড়ো যাত্রার’ ইতি টেনেছেন কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী। ২০২২ সালের ৭ সেপ্টেম্বর তামিলননাড়ূর কন্যাকুমারী থেকে শুরু হওয়া এই যাত্রা সোমবার কাশ্মীর উপত্যকার শ্রীনগরে শেষ করেন। ভারতের দক্ষিণ প্রান্ত থেকে কাশ্মীরের বরফঠান্ডা উত্তর পর্যন্ত ৫২ বছর বয়সী রাহুলের এই জোড়ো যাত্রাকে ‘কিছু করো না হয় মরো’ পরিস্থিতি উল্লেখ করে। বিগত দুই সাধারণ নির্বাচনে নরেন্দ্র মোদির ভারতীয় জনতা পার্টি-বিজেপির কাছে পরাজয়ের পর তাঁকে নিয়ে তেমন আর চর্চা হয়নি। ভারতের রাজনীতির এক সময়ের অপরাজেয় সংগঠন কংগ্রেস পার্টি। দুর্নীতি, কেলেঙ্কারি ও নেতাদের সরে যাওয়ার কারণে সংগঠনটির হারানো সুনাম পুনরুদ্ধার এবং ভোটারদের সঙ্গে সংযোগ স্থাপন করতে লড়াই করছেন রাহুল গান্ধী।
১৪৫ দিনে ১২টি রাজ্য ও দুটি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে মোট ৩ হাজার ৯৪০ কিলোমিটার হেঁটেছেন রাহুল। এতে অংশ নিয়েছিলেন বিভিন্ন মহলের তারকা, কংগ্রেস সমর্থক ও সাধারণ মানুষ। হাঁটার পথে সাধারণ মানুষের সঙ্গে কথা বলেছেন, আলিঙ্গন করেছেন এবং হাত মিলিয়েছেন রাহুল।
তবে এই যাত্রা কতটা সফল, তা নিয়ে প্রশ্ন আছে নানা মহলে। যাত্রা শুরুর পর রাহুল বলেছিলেন, দেশের বড় সংকটগুলো তুলে ধরে দেশবাসীকে সতর্ক ও ঐক্যবদ্ধ করে তোলাই জোড়ো যাত্রার উদ্দেশ্য। মুখভর্তি দাড়ি ও সাদা টি-শার্ট পরিহিত রাহুল হিমাচল প্রদেশের ঘটোটা গ্রামে সমর্থকদের উদ্দেশে বলেন, ‘জনগণকে ঐক্যবদ্ধ করতে আমরা এই যাত্রা করছি।’
ভারতের সাধারণ নির্বাচনের আর ১৫ মাস বাকি। মোদি টানা তৃতীবার নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন। এ সময়ের মধ্যে তাঁর থেকে জনগণের মনোযোগ সরানোর চেষ্টা করছেন রাহুল। জোড়ো যাত্রার সময় ছোট ও প্রত্যন্ত গ্রামে থেমেছেন। তিনি নিজেকে জনগণের কাছে তুলে ধরছেন। এ ছাড়া ধর্মনিরপেক্ষ ভারতকে একটি হিন্দু সংখ্যাগরিষ্ঠ দৃষ্টিভঙ্গির দিকে ঠেলে দেওয়ার বিজিপির চেষ্টাকে প্রতিহত করার একজন সক্ষম নেতা হিসেবে নিজেকে হাজির করছেন রাহুল।
পাঞ্জাবের হোশিয়ারপুরে সংবাদ সম্মেলনে রাহুল বলেছিলেন, ‘আমরা ঘৃণার বাজারে ভালোবাসার দোকান খুলতে থাকব। সহিংসতা, বেকারত্ব, মূল্যবৃদ্ধি এবং আয়বৈষম্যের বিরুদ্ধে দাঁড়ানো জোড়ো যাত্রার লক্ষ্য।’
কংগ্রেস নেতা আনশুল অভিজিৎ বলেন, ‘অবিরাম চলমান রাহুল গান্ধী শক্তির নিউক্লিয়াস হিসেবে আবির্ভূত হয়েছেন। এই শক্তি তাঁর যাত্রায় যোগ দিতে মানুষকে উদ্বুদ্ধ করেছে।’
তবে কিছু রাজনৈতিক পর্যবেক্ষক এই পদযাত্রা নিয়ে এখনও সন্দিহান। রাহুলের যাত্রা জাতীয় মঞ্চে বিজেপির আধিপত্য কতটুকু হ্রাস করবে, তা নিয়ে তাঁরা প্রশ্ন তুলছেন। সাম্প্রতিক এক সমীক্ষায় উত্তরদাতাদের এক-তৃতীয়াংশ এ মত দিয়েছেন। তাঁদের মতে, জোড়ো যাত্রা রাজনীতির মাঠে ঝড় তুললেও ভারতের বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি পাল্টাতে যথেষ্ট নয়।
এদিকে জোড়ো যাত্রার শেষ দিনে জম্মু-শ্রীনগরে রাহুল গান্ধী বলেছেন, লাদাখে দুই হাজার বর্গ কিলোমিটার এলাকা দখল করেছে চীন। বারবার আমি এই কথা বলে আসছি। গতকাল জোড়ো যাত্রার শেষ দিনে শ্রীনগরজুড়ে তুষারপাত হয়। সকালে রাহুল ও তাঁর বোন কংগ্রেস নেত্রী প্রিয়াঙ্কা গান্ধীকে বরফ নিয়ে খেলতে দেখা যায়। খবর ব্লুমবার্গ ও এনডিটিভির।
Posted ১২:৩৩ অপরাহ্ণ | মঙ্গলবার, ৩১ জানুয়ারি ২০২৩
nykagoj.com | Stuff Reporter