
আন্তর্জাতিক ডেস্ক | বুধবার, ০৪ জুন ২০২৫ | প্রিন্ট | 36 বার পঠিত | পড়ুন মিনিটে
২০১৮ সালের আগস্টে সুইডেনে পার্লামেন্ট নির্বাচনের প্রচারণা চলছিল। রাজধানী স্টকহোমে ১৫ বছরের এক কিশোরী পার্লামেন্টের সামনে বিক্ষোভ শুরু করেন। তাঁর সঙ্গে যোগ দেন কয়েকজন সহপাঠী। তাদের দাবি, জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় বিশ্বকে এক্ষুণি কঠোর হতে হবে।
ছোটখাটো গড়নের ওই কিশোরীর নাম গ্রেটা থুনবার্গ। তখন রাতারাতি তাঁর আন্দোলন বিশ্বব্যাপী গণমাধ্যমের শিরোনাম হতে শুরু করে। অল্পদিনে তিনি পুরো বিশ্বে পরিচিত মুখ হয়ে ওঠেন।
সেই ‘গ্রেট’ গ্রেটা এবার গাজায় ইসরায়েলের বর্বরতার শিকার ফিলিস্তিনিদের পাশে দাঁড়াচ্ছেন। তাদের অধিকার প্রশ্নে আগে থেকে সোচ্চার থাকলেও সম্প্রতি তিনি বিভিন্ন কর্মসূচিতে অংশ নেন। তাঁকে প্রতিষ্ঠিত বৈশ্বিক ব্যবস্থার নানা চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে হয়। অনেকের রোষানলে পড়েন। তবু থমকে যাওয়ার পাত্র তিনি নন।
বর্তমানে ২২ বছরের এ তরুণী জাহাজে ত্রাণ নিয়ে গাজার উদ্দেশে রওনা হয়েছেন। ‘মাদলিন’ নামে তাঁর জাহাজ ইতালির কাতানিয়া থেকে দলবল নিয়ে গত রোববার যাত্রা শুরু করে। এর মাধ্যমে নজিরবিহীন এক অভিযানের সূচনা করেন গ্রেটা। অভুক্ত রেখে গাজার মানুষকে হত্যার যে পদ্ধতিগত ষড়যন্ত্র ইসরায়েল বাস্তবায়ন করছে, সেটাকে বড় চ্যালেঞ্জ জানাচ্ছে গ্রেটার এ পদক্ষেপ।
গাজায় সমুদ্রপথে ত্রাণ সরবরাহের অনুমোদন দেয় না ইসরায়েল। গ্রেটা যে মানবিক সহায়তা সংস্থা ফ্রিডম ফ্লোটিলা কোয়ালিশনের জাহাজে ত্রাণ নিয়ে রওনা হয়েছেন, অতীতে এ সংস্থাটির ত্রাণবাহী জাহাজে হামলা হয়েছে। গত ২ মে গাজার উদ্দেশে রওনা করা ফ্রিডম ফ্লোটিলার ত্রাণবাহী জাহাজ মাল্টার পাশে পৌঁছলে ইসরায়েল ড্রোন হামলা চালায়। এতে দুটি বিস্ফোরণে জাহাজে আগুন ধরে যায়।
এবার সেই সংস্থারই জাহাজে উঠেছেন গ্রেটা। যাত্রা শুরুর আগে সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, ‘আমরা এটা করছি। পরিণতি কী হবে, জানি না।’ তিনি বলেন, ‘যত ভয়ংকর যাত্রাই হোক না কেন, এটা আমাদের করে যেতে হবে। না করলে মানবতা হারাব। এটা যাই হোক, সরাসরি সম্প্রচারিত গণহত্যার চেয়ে ভয়ংকর নয়।’
কার্যত পুরো বিশ্ব তাকিয়ে আছে ‘মাদলিন’-এর দিকে। নির্ভীক এ তরুণী যাতে জাহাজে ত্রাণ নিয়ে গাজায় পৌঁছতে পারেন, সেই সঙ্গে জাতিসংঘের বিশেষজ্ঞরা নিরাপদ যাত্রার প্রত্যাশার কথা জানিয়েছেন। জাহাজে আছে ওষুধপত্র, খাবার ও শিশুদের জন্য ত্রাণ।
গ্রেটার সমুদ্রযাত্রা প্রসঙ্গে জাতিসংঘ ওয়েবসাইটে প্রকাশিত বিবৃতিতে বলেছে, গাজার মানুষের জরুরি ভিত্তিতে সহায়তা প্রয়োজন। সেই সহায়তা দেওয়ার একটি প্রতীকী চেষ্টা এটি। ইসরায়েলকে অবশ্যই স্মরণে রাখতে হবে– বিশ্ব গভীরভাবে বিষয়গুলো পর্যবেক্ষণ করছে। তাদের অবশ্যই ফ্রিডম ফ্লোটিলা কোয়ালিশন ও তার আরোহীদের ওপর শত্রুভাবাপন্ন পদক্ষেপ থেকে বিরত থাকতে হবে।
জাহাজে গ্রেটার সঙ্গে আরও আছেন ইউরোপীয় পার্লামেন্টের সদস্য রিমা হাসান, ডাচ চলচ্চিত্র নির্মাতা ও শিল্পী লিয়াম কানিংহাম, মার্কিন সামরিক বাহিনীর কর্নেল (অব.) অ্যান রাইট, ইহুদি মানবাধিকারকর্মী জোহার চ্যাম্বারল্যাইন রেজেভ প্রমুখ। মঙ্গলবার জাহাজটি ভূমধ্যসাগরে সিসিলি দ্বীপের কাছাকাছি এলাকা হয়ে গাজার দিকে এগোচ্ছিল। সূত্র: সিএনএন।
Posted ১২:০৬ অপরাহ্ণ | বুধবার, ০৪ জুন ২০২৫
nykagoj.com | Stuff Reporter