
আন্তর্জাতিক ডেস্ক | রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪ | প্রিন্ট | 24 বার পঠিত | পড়ুন মিনিটে
নিজ দেশের প্রেসিডেন্ট ও তার স্ত্রী এবং পার্লামেন্টের স্পিকারকে হত্যার হুমকি দিয়েছেন ফিলিপাইনের ভাইস প্রেসিডেন্ট সারা দুতার্তে। তাদের হুঁশিয়ারি দিয়ে তিনি বলেন, যদি আমাকে হত্যা করা হয় তাহলে এদের কেউ বাঁচবে না।
শনিবার এক সংবাদ সম্মেলনে সারা বলেন, আমি একজন লোক (গুপ্তঘাতক) ঠিক করে রেখেছি। বলেছি, আমি মারা গেলে ফার্দিনান্দ রোমুয়াল্ডেজ মার্কোস জুনিয়র, ফার্স্ট লেডি লিজা আরানেটা এবং স্পিকার মার্টিন রোমুয়ালদেজকে মেরে ফেলবে। একে রসিকতা ভাববেন না আবার। খবর-সিএনএন
সারা দুতার্তে আরও বলেন, আমি তাদের (গুপ্তঘাতক) বলে দিয়েছি, এদের হত্যা না করা পর্যন্ত থামবে না।
তার এ বক্তব্যের পর তাৎক্ষণিকভাবে প্রেসিডেন্টের নিরাপত্তা বাড়ানো হয়েছে। প্রেসিডেন্টের কার্যালয় এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, প্রেসিডেন্ট ফার্দিনান্দ মার্কোসের জীবনের ওপর যেকোনো হুমকি গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করা উচিত। এ রকম স্পষ্ট ভাষায় হুমকির ঘটনায় প্রেসিডেন্টের নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে।
প্রেসিডেন্ট মার্কোস জুনিয়র ফিলিপাইনের সাবেক স্বৈরশাসক ফার্দিনান্দ মার্কোসের ছেলে। তিনি দেশটির প্রয়াত স্বৈরাচার ফার্দিনান্দ ইমানুয়েল এড্রলিন মার্কোসের ছেলে। ফার্দিনান্দ রোমুয়াল্ডেজ মার্কোস জুনিয়র বংবং নামেই অধিক পরিচিত।
২০ বছর ক্ষমতা দখল করে রাখা ফার্দিনান্দকে ১৯৮৬ সালে গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে উৎখাত করা হয়। আর সারা দুতার্তে ফিলিপাইনের সাবেক প্রেসিডেন্ট রদ্রিগো দুতার্তের মেয়ে। মার্কোস জুনিয়র ক্ষমতায় আসার আগে রদ্রিগোর হাতেই ছিল দেশটির শাসনভার। দেশটির সবচেয়ে ক্ষমতাধর দুই রাজনৈতিক পরিবারের মধ্যে দ্বন্দ্ব প্রায় সময়ই দেখা যায়।
২০২২ সালে নির্বাচনের আগে মার্কোস ও দুতার্তের দল মিলে একটি জোট তৈরি করে, যার নাম দেওয়া হয় ‘ইউনিটিম’। এই জোট ক্ষমতায় আসলে প্রেসিডেন্ট ও ভাইস প্রেসিডেন্ট পদে আসেন মার্কোস জুনিয়র ও সারা দুতার্তে। এরপর থেকে তারা একের পর এক দ্বন্দ্বে জড়িয়ে পড়ে । সারা গত জুনে ক্যাবিনেট থেকে পদত্যাগ করে ‘ইউনিটিম’ জোট ভেঙে দিয়েছেন। অন্যদিকে স্পিকার রোমুয়ালদেজ ভাইস প্রেসিডেন্টের কার্যালয়ের বাজেট প্রায় দুই-তৃতীয়াংশ কমিয়ে দিয়েছেন। সম্প্রতি সারার চিফ অব স্টাফ জুলেখা লোপেজকে আটক করা হয়। ধারণা করা হচ্ছে, এর জবাবেই এমন হুমকি দিয়েছেন সারা।
৬৪ বছর বয়সী মার্কোস জুনিয়র গত মাসে অনুষ্ঠিত প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে নিরঙ্কুশ জয় পেয়েছিলেন। দেশটিতে এমন নিরঙ্কুশ বিজয় সাধারণত দেখা যায় না। বছরব্যাপী প্রচারণার পর জয়ী হওয়া এই নির্বাচনকে সমালোচকরা তার পরিবারের ভাবমূর্তি ফেরানোর চেষ্টা হিসেবে দেখছেন। তিনি রদ্রিগো দুতার্তের স্থলাভিষিক্ত হন। দেশে মাদকবিরোধী যুদ্ধ চালানোর জন্য আন্তর্জাতিক অঙ্গনে কুখ্যাতি অর্জন করেছিলেন দুতার্তে। এমন কি রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব ছাড়ার পরও সন্দেহভাজন মাদক ব্যবসায়ীকে হত্যার হুমকি দিয়েছেন তিনি। রদ্রিগো দেশটির সাম্প্রতিক সময়ের সবচেয়ে কট্টরপন্থী প্রেসিডেন্ট হিসেবে বিবেচিত। মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে তার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে তদন্ত চলছে।
Posted ৬:৩৮ পূর্বাহ্ণ | রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪
nykagoj.com | Stuff Reporter