
জাতীয় ডেস্ক | সোমবার, ০৭ অক্টোবর ২০২৪ | প্রিন্ট | 29 বার পঠিত | পড়ুন মিনিটে
দেশের আকাশে চলাচলরত উড়োজাহাজের গতিবিধির ওপর নজরদারি করতে বহুল প্রতীক্ষিত রাডার স্থাপন প্রকল্পের কাজ দ্রুত এগিয়ে চলেছে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে। কাজ সম্পূর্ণ শেষ না হলেও বিমান চলাচলের ক্ষেত্রে এখন এই রাডার দিয়েই আকাশে পরীক্ষামূলকভাবে নজরদারি করা হচ্ছে।
জানা গেছে, প্রকল্পটি বাস্তবায়নের শুরুতে প্রায় ২ হাজার ১০০ কোটি টাকা খরচের প্রাক্কলন করা হয়। তবে সংশ্লিষ্টরা জানান, লুটপাটের জন্য এত ব্যয় ধরা হয়েছিল। পরে দরপত্রের মাধ্যমে সব মিলিয়ে ৭৩০ কোটি টাকা ব্যয়ে প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হচ্ছে। বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (বেবিচক) নিজস্ব অর্থায়নে বিমানবন্দরে অত্যাধুনিক এই মাল্টিমোড রাডার সিস্টেম প্রকল্প বসাচ্ছে।
আগামী ডিসেম্বরে এ প্রকল্পের কাজ শেষ হলে দেশের সব সমুদ্র ও আকাশসীমা নজরদারির আওতায় আসবে। পাশাপাশি আন্তর্জাতিক মান অনুযায়ী প্রথম শ্রেণির বিমানবন্দর ও উড়োজাহাজ চলাচলে রাজস্ব আদায় খাত অটোমেশনের যুগে প্রবেশ করবে বলে সংশ্লিষ্টরা জানান।
ফ্রান্সের থ্যালাসের সহায়তায় প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে তাদের এদেশীয় প্রতিনিধি অ্যারোনাস। কোম্পানিটি জানিয়েছে, ডিসেম্বরে মধ্যেই বাকি কাজ শেষ করে আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করা হবে।
বেবিচকের সদস্য (এয়ার ট্রাফিক ম্যানেজমেন্ট-এটিএম) এয়ার কমডোর জিয়াউল হক জানান, বিমানবন্দরে অত্যাধুনিক রাডার স্থাপন প্রকল্পের কাজ প্রায় শেষের দিকে। এয়ার ট্রাফিক ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম কাজ শেষ হলে উড়োজাহাজ চলাচল নিয়ন্ত্রণসহ বেবিচকের রাজস্ব খাত অটোমেশন হবে।
এ ব্যপারে প্রকল্প পরিচালক নাসরিন সুলতানা জানান, প্রকল্পটির প্রায় ৯০ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে। বাকি কাজ এ বছরের মধ্যেই সমাপ্ত হবে বলে তিনি আশাবাদী।
প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে নানা সুবিধা পাওয়া যাবে বলে জানান বেবিচক কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল মঞ্জুর কবীর ভূঁইয়া। সমকালকে তিনি বলেন, এর ফলে দেশের বাণিজ্যিক আকাশসীমা পূর্ণাঙ্গ সারভেইল্যান্স এবং অটোমেশনের আওতায় আসবে। আন্তর্জাতিক মান অনুযায়ী প্রথম শ্রেণির বিমানবন্দরের যুগে প্রবেশ করবে বাংলাদেশ।
তিনি আরও বলেন, ৪০ বছরের পুরোনো রাডার ও নেভিগেশন ব্যবস্থার কারণে বঙ্গোপসাগরের বড় একটি অংশের পাশাপাশি দেশের পুরো আকাশ নজরদারির আওতায় নেই। এতে ওভার ফ্লাইং ফি (বাংলাদেশের আকাশসীমা ব্যবহারের) পুরোপুরি আদায় করা সম্ভব হচ্ছে না। অথচ একবার আকাশ ব্যবহারের জন্য ‘ফ্লাইং ওভার ফি’ প্রায় ৫০০ ডলার।
বেবিচক কর্মকর্তারা আরও জানান, ২০১৬ সালে এই প্রকল্প বাস্তবায়নে ২ হাজার ১০০ কোটি টাকার প্রস্তাবে সায় দিয়ে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান করিম অ্যাসোসিয়েটসকে প্রাথমিকভাবে মনোনীত করে বেবিচক। কিন্তু সে সময় ওই ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে অনভিজ্ঞতা, ব্যাপক লুটপাটের অভিসন্ধি ও দুর্নীতির অভিযোগ ওঠে। পরে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের তদন্তে অভিযোগের সংশ্লিষ্টতা প্রমাণিত হওয়ায় প্রকল্পটি সে সময় আর আলোর মুখ দেখেনি।
পরে সরাসরি ক্রয় পদ্ধতিতে (ডিপিএম) ২০১৯ সালের মে মাসে অর্থনৈতিক ক্রয়-সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি প্রকল্পটির নীতিগত অনুমোদন দেয়। ২০২০ সালের নভেম্বরে এ নিয়ে থ্যালেসের সঙ্গে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়। থ্যালেস রাডার সিস্টেমের যন্ত্রপাতি উৎপাদন এবং স্থাপনে বিশ্বের অন্যতম স্বনামধন্য একটি প্রতিষ্ঠান। প্রায় ৪০ বছর আগে ১৯৮৪ সালে বাংলাদেশে একটি রাডার সরবরাহ করেছিলে এ কোম্পানি।
Posted ৩:৩৫ পূর্বাহ্ণ | সোমবার, ০৭ অক্টোবর ২০২৪
nykagoj.com | Stuff Reporter