নিজস্ব প্রতিবেদক | শনিবার, ৩১ ডিসেম্বর ২০২২ | প্রিন্ট | 314 বার পঠিত | পড়ুন মিনিটে
সীমান্তে হাজার হাজার শরনার্থী যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশের অপেক্ষায় মানবেতর জীবনযাপন করছে। অনেকেই জীবনের ঝুঁকি নিয়ে সাগর কিংবা মরুভূমি পাড়ি দিয়ে সীমান্ত ক্রস করছে। কিন্তু ভাগ্য তাদের আর সুপ্রন্ন হলো না। সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প জমানায় জারি করা টাইটেল ৪২ এর আওতায় হোমল্যান্ড সিকিউরিটি তাদের রিপোর্ট করবে ১ ঘন্টারও কম সময়ের মধ্যে। এসাইলাম আবেদন করতে হবে সীমান্তের ওপার থেকে। এ আবেদন প্রাথমিকভাবে মঞ্জুর না হওয়া পর্যন্ত তাদের মেক্সিকোতে বা নিজ দেশে অবস্থান করতে হবে।
ট্রাম্পের শাসনামলে ২০২০ সালে করোনার শুরুতেই জারি করা হয়েছিল টাইটেল ৪২। স্বাস্থ্য বিভাগের আইন ১৯৪৪ ধারা অনুসারে করোনা প্রতিরোধে তা জারি করা হয়। এর আওতায় সীমান্ত পাড়ি দিয়ে শরনার্থীরা আর এসাইলাম আবেদন করতে পারবে না। দ্রুততম সময়ে তাদের ডিপোর্ট করবে কাস্টমস এন্ড বর্ডার প্রেটোকশন সদস্যরা। অবৈধভাবে যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশকারি ইমিগ্র্যান্টদের ৩০ মিনিটের মধ্যে সীমান্ত থেকে ডিপোর্ট করা যায়। এই আইনটি তামাদে হলে আগত জন¯্রােতকে সামাল দেয়া সম্ভব নয়। আর ২১ ডিসেম্বরকে সামনে রেখে হাজার হাজার শরনার্থী ভীর জমিয়েছিল সীমান্তে। প্রতীক্ষার প্রহর গুণছিল ট্রাম্প জমানার বিধিনিষেধের সমাপ্তির জন্য। গত ২০ ডিসেম্বর রিপাবলিক্যান দলের প্রতিনিধিদের শাসিত ১৯টি স্টেটের আবেদনের প্রেক্ষিতে সুপ্রীম কোর্টের চীফ জাস্টিস জন রবার্টস সাময়িকভাবে টাইটেল ৪২ বহাল রাখেন। । বাইডেন প্রশাসনও তা সাময়িকভাবে বহাল রাখার জন্য আদালতের প্রতি অনুরোধ জানিয়েছিল। টাইটেল ৪২ এর আওতায় গত ৩ বছরে ২৫ লাখ অবৈধ ইমিগ্র্যান্টকে সীমান্ত থেকে ফেরত পাঠাতে সমর্থ হয়েছে সীমান্ত রক্ষীরা। ২৮ ডিসেম্বর বুধবার সুপ্রীম কোর্ট ৫-৪ ভোটে টাইটেল ৪২ বহাল রাখার সিদ্ধান্ত দেয়। আদালতের এই সিদ্ধান্তে মানবাধিকার সংগঠনগুলো তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছে। অবশ্য আইওআ গর্ভনর কিম রেনলডস এই রায়কে স্বাগত জানিয়েছেন। রায়ের বিরোধীতাকারি জাস্টিস নেইল গরসাচ বলেছেন, সীমান্তের সংকট এখন আর কোভিড সংকট নয়। সুতরাং টাইটেল ৪২ কার্যকর থাকার কোন যুক্তিই গ্রহনযোগ্য নয়। প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেছেন, তার প্রশাসন আদালতের রায়কে সন্মান দেখাবে। পাশাপাশি টাইটেল ৪২ বাতিলের জন্য শুনানীর প্রস্তুতিও থাকবে। আগামী ২১ ফেব্রুয়ারি শুনানী শেষে সিদ্ধান্ত আসবে টাইটেল ৪২ আদৌ থাকবে কিনা।
ইমিগ্রেশন ও ক্রস বর্ডার পলিসির ম্যানেজিং ডাইরেক্টর থেরেসা কার্ডিনাল সাংবাদিকদের বলেছেন, সহসাই সমস্যার সমাধান হচ্ছে না। এ জন্য কোন সুইস নেই। প্রধান সমস্যা হচ্ছে গত ২ দশক কংগ্রেস ইমিগ্রেশন প্রশ্নে ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছে। এদিকে টেক্সাস গর্ভনর সীমান্তে অতিরিক্ত ন্যাশনাল গার্ড পাঠিয়েছে। ইমিগ্র্যান্ট প্রবেশের রুটগুলোতে কাঁটা তারের বেড়া বসাচ্ছে। স্থানীয় এল পাসো সিটির মেয়র ইমিগ্র্যান্ট স্রোতের কারনে শহরে জরুরী অবস্থা ঘোসণা করেছেন। প্রেসিডেন্ট বাইডেন তার নির্বাচনী প্রতিশ্রুতিতে ইমিগ্রেশন সমস্যা সমাধানের কথা বারবার উল্লেখ করেছিলেন। অবস্থাদৃষ্টে মনে হচ্ছে, কংগ্রেসের কাছে তিনি এখন অসহায়। বিষয়টি নিয়ে তারা আর মাথা ঘামাচ্ছেন না।
Posted ৪:৫১ পূর্বাহ্ণ | শনিবার, ৩১ ডিসেম্বর ২০২২
nykagoj.com | Monwarul Islam