জাতীয় ডেস্ক | রবিবার, ২৫ আগস্ট ২০২৪ | প্রিন্ট | 41 বার পঠিত | পড়ুন মিনিটে
‘আমাদের ইনক্লুসিভ বাংলাদেশ’—ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) টিএসসি প্রবেশের সড়কে একটি দেয়াললিখন। এটি লেখা হয়েছিল গত ৫ আগস্টের পর। বন্যার্তদের ত্রাণ সংগ্রহে সেটি যেন মূর্তমান উদাহরণ হয়ে উঠেছে। এমন জমজমাট ত্রাণ কার্যক্রম অতীতে চোখে পড়েনি। সব শ্রেণি-পেশা-বয়সের মানুষকে ত্রাণ কার্যক্রমে অংশ নিতে দেখা গেছে। সারাদিনই লোকে লোকারণ্য ছিল টিএসসি চত্বর। রাতের দিকে টিএসসিতে জায়গা সংকুলান না হওয়ায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় জিমনেশিয়ামে গণ ত্রাণ কার্যক্রম স্থানান্তর করা হয়।
সারাদেশে বন্যায় আক্রান্তদের জন্য বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের গণত্রাণ কর্মসূচির তৃতীয় দিন শনিবার সকাল থেকেই টিএসসিতে ত্রাণ দিতে মানুষের ঢল নামে। বিরামহীনভাবে গণত্রাণ কার্যক্রমে স্বতঃস্ফুর্ত অংশগ্রহণ করেছেন সহস্রাধিক মানুষ।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক তারেকুল ইসলাম বলেন, রাত ১১টা পর্যন্ত আজ টিএসসিতে নগদ টাকা এসেছে ২ কোটি ২৫ লক্ষ ৪৭ হাজার ৪৭০ টাকা। এ ছাড়া সারাদিনে হাজারেরও বেশি ব্যক্তি পর্যায় থেকে প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে ত্রাণ নিয়ে আসা হয়েছে টিএসসিতে। অবস্থা এমন দাঁড়িয়েছে, আমরা রাত আটটার পর টিএসসিতে আর ত্রাণ রাখার জায়গা নেই। তাই ত্রাণ সংগ্রহ কার্যক্রম ঢাবির কেন্দ্রীয় জিমনেশিয়ামে স্থানান্তর করা হয়েছে। তবে অর্থ সহায়তার কার্যক্রম টিএসসিতে আছে।
গত শুক্রবার কর্মসূচির দ্বিতীয় দিনে নগদ এবং মোবাইল ব্যাংকিং চ্যানেলে ১ কোটি ৪২ লাখ টাকা ৫০ হাজার ১৯৬ টাকা জমা পড়েছিল। এরমধ্যে নগদ অর্থ সংগ্রহ হয়েছে ১ কোটি আট লাখ ২৩ হাজার ১৭৩ টাকা।
সকালে বিকেল পর্যন্ত টিএসসিতে দেখা যায়, টিএসসিতে ত্রাণ ছাড়া অন্য কোনো কার্যক্রম নেই। ত্রাণ নিয়ে আসা গাড়িগুলো সারি সারি টিএসসিতে ঢুকছে। রোভার স্কাউটের সদস্যরা শৃঙ্খলা রক্ষার কাজটি করছেন। মাইকে বারবার ঘোষণা দেওয়া হচ্ছে, ‘গাড়িগুলো সারিবদ্ধভাবে যাবে, সবাই ফুটপাত দিয়ে হাঁটুন’। তবে রাত আটটা থেকে এ দৃশ্যের পরিবর্তন আসে। টিএসসিতে জায়গার সংকুলান না হওয়ায় জিমনেশিয়ামে কার্যক্রম স্থানান্তর করা হয়। এ দিকে টিএসসিতে চলছিল প্যাকেজিংয়ের কাজ। প্যাকেজিং শেষে টিএসসির উত্তরে কারাস ভবনের সামনে রাখা বড় কাভার্ড ভ্যানে তুলে দেওয়া হচ্ছিল ত্রাণগুলো। এ ছাড়া কলাভবন ক্যাফেটেরিয়াতেও ত্রাণ কার্যক্রম চলছিল। সেখানে ব্যস্ত কার্যক্রম দেখা গেছে।
টিএসসিতে কথা হয় সায়মা খাতুনের সঙ্গে। তিনি নিউমার্কেট এলাকা থেকে এসেছেন চার বছরের বাচ্চাকে সঙ্গে নিয়ে। বুথে অর্থ সহায়তা করার পর কথা বলে জানা গেল এ সব কথা। তিনি বলেন, আসলে ৫ আগস্টের পর দেশটা নিজের বলে মনে হয়। এখানে ত্রাণ সংগ্রহের কথা শুনেছি বেশ। তাই নিজে চলে এলাম আজকে। সকালে ভিড় কম থাকে। বিকেল হলে তো মানুষ বাড়ে। বন্যায় তো আমি পড়তে পারি, তাই আমার কর্তব্য সামর্থ্য অনুযায়ী দুর্গতদের পাশে থাকা।
হাতিরঝিল থেকে স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে কাজ করতে এসেছেন তাইফ হোসেন। দেখে এগিয়ে এসে বললেন, তিনি নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র। স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে কাজ করতে চান। সমন্বয়কদের সঙ্গে কথা বলে দেওয়া যাবে কিনা। কথা বলার পর তিনি লেগে গেলেন প্যাকেজিংয়ের কাজে।
এ দিকে গণত্রাণ কার্যক্রমে পোশাক নেওয়া বন্ধ করা হয়েছে। এ বিষয়ে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সমন্বয়ক লুৎফুর রহমান বলেন, আমাদের এখানে এখন পোশাক নেওয়া হচ্ছে না। অলরেডি অনেক পোশাক জমা হয়েছে। আমাদের পোশাক থেকে খাবার জাতীয় সহায়তা বেশি জরুরি।
Posted ৩:৫৮ পূর্বাহ্ণ | রবিবার, ২৫ আগস্ট ২০২৪
nykagoj.com | Stuff Reporter