
আন্তর্জাতিক ডেস্ক | সোমবার, ০৫ আগস্ট ২০২৪ | প্রিন্ট | 41 বার পঠিত | পড়ুন মিনিটে
ইসরায়েলের ওপর ইরানের ‘আশ্চর্যজনক’ হামলার হুমকির পর মধ্যপ্রাচ্যে আবার নতুন করে যুদ্ধের দামামা বেজে উঠেছে। ব্যাপক সংঘাতের আশঙ্কায় বেশ কয়েকটি দেশ তাদের নাগরিকদের লেবানন ছেড়ে যাওয়ার আহ্বান জানিয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র তাদের নাগরিকদের ‘টিকিট পাওয়ামাত্র’ দেশটি ছাড়তে বলেছে। ধারণা করা হচ্ছে, ইরান ও ইসরায়েলের যুদ্ধক্ষেত্র হতে পারে এ দেশটি।
ইসরায়েলের বিরুদ্ধে ইরান কঠোর প্রতিশোধ নেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। হামাসের প্রধান ইসমাইল হানিয়ার হত্যার জন্য ইসরায়েলকে দায়ী করেছে তেহরান। ইসরায়েল এ নিয়ে কোনো মন্তব্য করেনি।
পশ্চিমা কর্মকর্তারা আশঙ্কা করছেন, লেবাননভিত্তিক ইরান-সমর্থিত মিলিশিয়া গ্রুপ হিজবুল্লাহ ইসরায়েলের বিরুদ্ধে যে কোনো প্রতিশোধের ক্ষেত্রে মুখ্য ভূমিকা পালন করতে পারে। এ পরিস্থিতিতে যুক্তরাষ্ট্র ও অন্যান্য পশ্চিমা দেশগুলো কূটনৈতিক প্রচেষ্টার মাধ্যমে ওই অঞ্চলজুড়ে উত্তেজনা কমানোর চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।
তবে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, সুইডেন, ফ্রান্স, কানাডা ও জর্ডান তাদের নাগরিকদের যত তাড়াতাড়ি সম্ভব লেবানন ছেড়ে যাওয়ার আহ্বান জানিয়েছে। লেবাননের একমাত্র বাণিজ্যিক বিমানবন্দর বৈরুতে ক্রমবর্ধমান হারে ফ্লাইট বাতিল বা স্থগিত করা হচ্ছে। এরই মধ্যে কিছু টিকিটের ভাড়া বেড়েছে।
যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডেভিড ল্যামি তাঁর দেশের নাগরিকদের লেবানন ছাড়ার আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন, আঞ্চলিক পরিস্থিতির ‘দ্রুত অবনতি হতে পারে।’
শুক্রবার ইরানের রাষ্ট্রীয় টিভিতে একজন ঘোষণাকারী সতর্ক করে দিয়েছেন, ‘বিশ্ব অসাধারণ দৃশ্য প্রত্যক্ষ করবে।’ এর পর ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু ইসরায়েলিদের সতর্ক করে বলেছেন, ‘আগামীর দিনগুলো চ্যালেঞ্জিং। আমরা সব দিক থেকে হুমকি শুনেছি। আমরা যে কোনো পরিস্থিতির জন্য প্রস্তুত।’
উত্তেজনার মধ্যেই ইসরায়েলে আবারও ব্যাপক রকেট হামলা চালিয়েছে লেবাননের শক্তিশালী সশস্ত্র গোষ্ঠী হিজবুল্লাহ। সংগঠনের জ্যেষ্ঠ এক কমান্ডারকে হত্যার ঘটনায় সৃষ্ট উত্তেজনার মধ্যেই শনিবার মধ্যরাতে উত্তর ইসরায়েলের বেইট হিলেল শহরে কয়েক ডজন রকেট নিক্ষেপ করে। কমান্ডার নিহত হওয়ার পর ওই সংগঠনের সঙ্গে ইসরায়েলে বড় ধরনের সংঘাতের শঙ্কা সৃষ্টি হয়েছে। আশঙ্কা করা হচ্ছে, হিজবুল্লাহও এই অবস্থায় যে কোনো প্রতিশোধের জন্য বড় ভূমিকা পালন করতে পারে।
এএফপি বলছে, উত্তর ইসরায়েলের বেইট হিলেল বসতিতে কয়েক ডজন কাতিউশা রকেট নিক্ষেপ করা হয়েছে বলে হিজবুল্লাহ ঘোষণা করেছে। তারা বলেছে, দক্ষিণ লেবাননের কাফার কেলা এবং দেইর সিরিয়ানে ইসরায়েলি হামলার জবাব দিতে এ হামলা চালানো হয়েছে। হামলায় ইসরায়েলের বেসামরিক অনেকেই আহত হয়েছেন।
এদিকে ইসরায়েলের তেল আবিব শহরে ছুরি হামলায় দু’জন নিহত ও আরও দু’জন আহত হয়েছেন। হামলাকারী নিজে পুলিশের গুলিতে নিহত হয়েছেন। ইসরায়েলের কর্তৃপক্ষ হামলাকারীকে ‘ফিলিস্তিনি’ বলে দাবি করেছে। তেল আবিবের হলন উপশহরে রোববার সকালের ব্যস্ত সময়ে ছুরি হামলার ঘটনাটি ঘটে।
বাইডেন-নেতানিয়াহুর মধ্যে উত্তেজনা
হামাস নেতা হানিয়াকে হত্যার পর মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ও ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহুর মধ্যে উত্তেজনা তৈরি হয়েছে।
একজন মার্কিন কর্মকর্তা জানান, বৃহস্পতিবার তাদের মধ্যে উত্তপ্ত বাক্যবিনিময় হয়েছে। বাইডেন বলেন, ইসরায়েল যুদ্ধবিরতি চুক্তির ক্ষেত্রে বাধা। ইরানের মাটিতে ইসমাইল হানিয়াকে হত্যা জিম্মি মুক্তির প্রচেষ্টাকে ভণ্ডুল করে দিতে পারে। নেতানিয়াহু অবশ্য এ অভিযোগ অস্বীকার করেন বলে জানায় নিউইয়র্ক টাইমস।
বাইডেন উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, তেহরানে ইসরায়েলের হামলা বৃহত্তর আঞ্চলিক যুদ্ধের সূত্রপাত করতে পারে, যা তিনি এড়ানোর চেষ্টা করছেন।
যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েল সরকারের মতে, হানিয়াকে হত্যার পরিকল্পনা আমেরিকানদের জানায়নি ইসরায়েলিরা। যদিও বাইডেন কয়েকদিন আগেই হোয়াইট হাউসে নেতানিয়াহুর সঙ্গে বৈঠক করেন। হানিয়া হত্যাকাণ্ড হামাসের সঙ্গে ইসরায়েলের চুক্তিকে কঠিন করে তুলেছে কিনা জানতে চাইলে শনিবার বাইডেন হ্যাঁ-সূচক জবাব দেন।
Posted ৩:২৫ পূর্বাহ্ণ | সোমবার, ০৫ আগস্ট ২০২৪
nykagoj.com | Stuff Reporter