জাতীয় ডেস্ক | শনিবার, ০৬ জুলাই ২০২৪ | প্রিন্ট | 69 বার পঠিত | পড়ুন মিনিটে
সরকারি চাকরিতে কোটা বাতিল দাবির পক্ষে সড়কে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করেছেন তিন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। গতকাল শুক্রবার জাহাঙ্গীরনগর (জাবি), খুলনা (খুবি) ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) সামনের সড়ক অবরোধ করা হয়।
জাবির শিক্ষার্থীরা ঢাকা-আরিচা মহাসড়কে মানববন্ধন করেন। এ সময় তারা রোববার বেলা ৩টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত তিন ঘণ্টা একই সড়ক অবরোধের ঘোষণা দেন। খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা জিরো পয়েন্ট ও গল্লামারী মোড়ে দুই ঘণ্টা অবস্থান করেন। আর চট্টগ্রাম নগরীর দুই নম্বর গেট সংলগ্ন সড়ক অবরোধ করেন চবিসহ বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা।
পূর্বঘোষণা অনুযায়ী আজ শনিবার বেলা ৩টায় একযোগে সারাদেশের সব কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ে বিক্ষোভ করবেন কোটাবিরোধীরা। এ ছাড়া আগামীকাল রোববার ক্লাস-পরীক্ষা বর্জনের মাধ্যমে ছাত্র ধর্মঘট পালন করা হবে। কেন্দ্রীয়ভাবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় লাইব্রেরির সামনে শনিবার হবে বিক্ষোভ। এতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, অধিভুক্ত সাত কলেজ ও অন্যান্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের যোগ দেওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে। অবরোধ করা হতে পারে শাহবাগ মোড়ও।
বেলা ১১টায় রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা দোহা চত্বরে এবং বেলা আড়াইটায় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসের কাঁঠালতলায় বিক্ষোভ সমাবেশ ও পথসভা করবেন। দাবির পক্ষে ইতোমধ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ৫৫টির বেশি বিভাগের শ্রেণি প্রতিনিধিরা নিজ নিজ বিভাগের ক্লাস বর্জনে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।
আন্দোলনকারীরা জানিয়েছেন, ‘প্রত্যয় স্কিম’ প্রত্যাহারের দাবিতে শিক্ষক এবং কর্মকর্তা-কর্মচারীরা কর্মবিরতি প্রত্যাহার করে শ্রেণিকক্ষে ফিরলেও কোটা বাতিল না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলনে থাকবেন তারা।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের ছাত্র নাহিদ ইসলাম বলেন, চার দাবিতে আমাদের আন্দোলন। আদায় না হওয়া পর্যন্ত রাজপথে থাকব। প্রথম বা দ্বিতীয় শ্রেণি নয়, সব গ্রেডে কোটা বাতিল করতে হবে। তবে অনগ্রসর গোষ্ঠীর জন্য যৌক্তিক ও ন্যূনতম কোটা রাখা যেতে পারে বলে মনে করেন তিনি।
এদিকে কোটা বাতিলের পক্ষে গতকাল গণমাধ্যমে বিবৃতি দিয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিএনপিপন্থি শিক্ষকদের সংগঠন সাদা দল এবং প্রগতিশীল ছাত্র সংগঠন বিপ্লবী ছাত্র মৈত্রী। সাদা দলের আহ্বায়ক লুৎফর রহমান, যুগ্ম আহ্বায়ক মোহাম্মদ ছিদ্দিকুর রহমান খান ও আবদুস সালাম স্বাক্ষরিত বিবৃতিতে আন্দোলনের সঙ্গে একাত্মতা ঘোষণা করা হয়। আর বিপ্লবী ছাত্র মৈত্রীর সভাপতি দিলীপ রায় ও সাধারণ সম্পাদক জাবির আহমেদ জুবেল কোটার যৌক্তিক সংস্কার চেয়েছেন।
আন্দোলনের নেতাকে হলছাড়া করার চেষ্টা
কোটাবিরোধী আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের ছাত্র সারজিস আলমকে হল থেকে বের করে দেওয়ার চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে। বৃহস্পতিবার মধ্যরাতে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি সাদ্দাম হোসেনের অনুসারী বিশ্ববিদ্যালয়ের অমর একুশে হলের পদপ্রত্যাশীরা এ চেষ্টা করেন।
তবে খবর পেয়ে সাধারণ শিক্ষার্থীরা জড়ো হলে প্রশাসন সারজিসকে তাঁর কক্ষে পৌঁছে দেয়। পরে সারজিস সাংবাদিকদের বলেন, হল ছাত্রলীগের পদধারী ও আগামীতে পদপ্রত্যাশী একাধিক নেতা এসে বলেন, ‘ছাত্রলীগের শীর্ষ এক নেতা আমাকে বের করে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন।’ তবে সাধারণ শিক্ষার্থীরা হলগেটে জড়ো হয়ে তাদের প্রতিহত করেন।
হল প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক ইশতিয়াক সৈয়দ বলেন, ভুল তথ্য ছড়িয়ে পড়লে শিক্ষার্থীরা হলগেটে ভিড় করে। তবে সারজিসকে কিছুই করা হয়নি। এর পরও আমি নিজে তাকে কক্ষে পৌঁছে দিয়েছি।
Posted ৪:২৪ পূর্বাহ্ণ | শনিবার, ০৬ জুলাই ২০২৪
nykagoj.com | Stuff Reporter