
আন্তর্জাতিক ডেস্ক | রবিবার, ২৩ জুন ২০২৪ | প্রিন্ট | 56 বার পঠিত | পড়ুন মিনিটে
দুটি সাঁজোয়া যান যাচ্ছে। বিপরীত দিক থেকে যাচ্ছে দুটি অ্যাম্বুলেন্স। সাঁজোয়া যান দুটির সামনেরটির বনেটে (ইঞ্জিনের ওপরের অংশে) শুয়ে বেঁধে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে জিন্স প্যান্ট পরা এক মধ্যবয়সী ব্যক্তিকে। যার শরীরের উপরিভাগে নেই কোনো কাপড়। শরীরে দেখা যাচ্ছে আঘাতের একাধিক দাগ। খবর আল-জাজিরার
অধিকৃত পশ্চিম তীরের জেনিনে অভিযান চালাচ্ছে ইসরায়েলি বাহিনী। এর মাঝেই এমন একটি ভিডিও প্রকাশ পায়। এতে এই আহত ব্যক্তিকে মানবঢাল হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে বলে মনে করা হচ্ছে।
আলজাজিরার সাংবাদিক নুর ওদেহ রামাল্লা থেকে বলেছেন, ‘দৃশ্যত আহত ও ব্যথায় ভুগছেন এমন ব্যক্তিকে সাঁজোয়া যানের হুডের সঙ্গে বেঁধে রাখার অন্য কোনো যৌক্তিক ব্যাখ্যা নেই।’
ইসরায়েলি বাহিনী জেনিনের মধ্য দিয়ে যাওয়ার সময় অন্তত দুটি বাড়ি অবরোধ করে। সেসব বাড়িতে তল্লাশি চালিয়ে বেশ কয়েকজনকে আটক করে নিয়ে যায়।
জিপের সামনে এভাবে মানুষকে বেঁধে নেওয়ার ঘটনা এবারই প্রথম নয়। এই ধরনের নির্মম ঘটনাকে মানবাধিকার সংস্থাগুলো মানবঢাল হিসেবে ব্যবহারের অভিযোগ করেছে। ফিলিস্তিনের রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি জানিয়েছে, গাড়ির হুডে বেঁধে নিয়ে যাওয়া ব্যক্তিসহ তিনজন আহত হয়েছেন। এই অভিযানের পর এলাকাটি ছেড়ে চলে যায় ইসরায়েলি বাহিনী।
এদিকে, শরণার্থী শিবিরে অব্যাহতভাবে হামলা চালিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েল। গাজার সরকারি মিডিয়া অফিসের প্রধান জানিয়েছেন, শাতি শরণার্থী শিবির ও তুফাহ এলাকায় ইসরায়েলি হামলায় অন্তত ৪২ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। এ ছাড়া মাওয়াসিতে হামলায় নিহত হয়েছেন আরও ২৫ জন। এসব হামলায় ধ্বংসস্তূপের নিচে চাপা পড়াসহ আহত হয়েছেন বহু মানুষ। সব মিলিয়ে এক দিনে মৃত্যু হয়েছে ১০১ জনের। এটি নুসেইরাত ক্যাম্পে সম্প্রতি হামলার পর এক দিনে বড় প্রাণহানির ঘটনা। এমন পরিস্থিতিতে প্রাণে বাঁচতে মাওয়াসি ছেড়ে যাচ্ছেন ফিলিস্তিনিরা।
এদিকে গাজায় অভিযানের নামে গণহত্যা চালানোর ঘটনায় ইসরায়েলের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে (আইসিজে) আগেই মামলা করেছে দক্ষিণ আফ্রিকা। এবার তাতে যোগ দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে লাতিন আমেরিকার দেশ কিউবা।
শনিবার প্রকাশিত এক সংবাদে বলা হয়, গত শুক্রবার কিউবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় একটি বিবৃতিতে বলেছে, কিউবা আনুষ্ঠানিকভাবে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে দক্ষিণ আফ্রিকার গণহত্যার অভিযোগকে সমর্থন করবে। কারণ, গাজায় বেসামরিক নাগরিকদের বিরুদ্ধে নেতানিয়াহু সরকারের ক্রমবর্ধমান আক্রমণ বন্ধের কোনো লক্ষণ নেই।
এদিকে, ইসরায়েলি সেনাবাহিনীকে ‘বিশ্বের অন্যতম অপরাধী সেনাবাহিনী’ ও ‘অনৈতিক’ বলে উল্লেখ করেছেন জাতিসংঘের বিশেষ প্রতিবেদক ফ্রান্সেসকা আলবানিজ। তিনি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে বলেন, এই সিদ্ধান্তে পৌঁছানোর জন্য আধ্যাত্মিক কর্তৃপক্ষ হওয়ার দরকার নেই।
জাতিসংঘের হিসাব বলছে, ইসরায়েলের হামলায় এখন পর্যন্ত গাজায় প্রায় ৪০ হাজার শিক্ষার্থীকে উচ্চ বিদ্যালয়ের পরীক্ষা থেকে বঞ্চিত করেছে।
Posted ৭:১৮ পূর্বাহ্ণ | রবিবার, ২৩ জুন ২০২৪
nykagoj.com | Stuff Reporter