
আন্তর্জাতিক ডেস্ক | বৃহস্পতিবার, ১৩ জুন ২০২৪ | প্রিন্ট | 84 বার পঠিত | পড়ুন মিনিটে
মেঘ ভাঙা বৃষ্টিতে সিকিমে গেল বছরের বিপর্যয়ের স্মৃতি এখনো ফিকে হয়নি। এরমধ্যে ফের অতিবৃষ্টির জন্য বিপর্যয় সিকিমে। পাহাড় জুড়ে একাধিক জায়গায় নেমেছে ধস। ফুলে ফেঁপে উঠেছে তিস্তা। রাস্তার ওপর দিয়ে বইছে রানিখোলা নদী। এ অঞ্চলের প্রত্যেক নদীর পানিই বইছে বিপদ সীমার ওপর থেকে। ভেসে গিয়েছে জাতীয় সড়ক। তিস্তায় খেলনার মতো ভেসে বেড়াচ্ছে একের পর এক গাড়ি, বন্যার পানি ঢুকেছে শতাধিক পাহাড়ি গ্রামে। প্রশাসন বলছে প্রতি মুহূর্তে বাড়ছে তিস্তার পানি। ফলে সিকিম, কালিম্পংয়ের পার্বত্য এলাকা থেকে জলপাইগুড়ির সমতল এলাকা সর্বত্রই বিপদ বাড়ছে।
বিপদ এড়াতে প্রশাসনের পক্ষ থেকে তিস্তা পাড়ের বাসিন্দাদের নিরাপদ আশ্রয়ে যেতে বলা হয়েছে। বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে তিস্তাবাজার থেকে দার্জিলিং যাওয়ার রাস্তা। জলপাইগুড়িতে তিস্তা ব্যারেজ সংলগ্ন এলাকার বাসিন্দাদের সতর্ক করা হচ্ছে প্রশাসনের পক্ষ থেকে।
বৃহস্পতিবার সকালে সিকিম প্রশাসন জানায়, প্রবল বৃষ্টির কারণে নতুন করে ধস নেমেছে কালিম্পং – সিকিম সংযোগকারী ১০ নম্বর জাতীয় সড়কে। ইয়াঙ্গনের মাজুয়া গ্রাম সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বিপাকে পড়েছেন সেখানে বেড়াতে যাওয়া পর্যটকরা। বৃষ্টির কারণে গ্যাংটকের শিব মন্দির এলাকার কাছে পানিহাউসেও ভূমিধস হয়েছে।
ভূমিধসের কারণে মাঙ্গান থেকে চুংথাং হয়ে টুং নাগা যাওয়ার পথ বন্ধ রয়েছে। নর্থ সিকিমের লাচুংয়ের কাছে পাখচোক গ্রামে ধসের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে একাধিক বাড়ি। এদিকে সিংথাম ও রঙপোতে তিস্তায় লাল সতর্কতা জারি করা হয়েছে৷ বৃহস্পতিবার লাচুংয়ের পার্কসাঙ্গ থেকে তিন জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়৷ এরপরই জরুরি বৈঠক ডাকে উত্তর সিকিমের জেলা প্রশাসক।
এমন বন্যা পরিস্থিতিতে উত্তর সিকিমের আমবিথাংয়ের (রংবাং) কাছে নিখোঁজ হয়েছেন ৩ জন। পাশেপে (মাঙ্গানের কাছে) নিখোঁজ ২ জন এরমধ্যে একজনের মরদেহ উদ্ধার হয়েছে। গেইথাংয়ে (জংগু) ৩টি বাড়ি ও নামপাথাংয়ে (পেন্টোকের কাছে, মাঙ্গান)- বেশ কয়েকটি বাড়ি-সড়ক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এছাড়া সংকলং সেতুর ভিত ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
এদিকে সিকিমের এমন বিপর্যয়ে ক্রমেই বিপদ বাড়ছে বাংলাদেশের তিস্তা পারের মানুষদেরও। পশ্চিমবঙ্গ সেচ দপ্তর সূত্রে জানানো হয়েছে, পাহাড়ি ঢলে পানির চাপ বাড়তে থাকায় বৃহস্পতিবার সকাল থেকে গজলডোবা থেকে পানি ছাড়ার পরিমাণ কিছুটা বাড়াতে হয়েছে। সকাল ৬টা থেকে ঘণ্টায় অন্তত ৬০ হাজার কিউসেক পানি ছাড়তে হয়েছে। বেলা ১১টার দিকে সেটার পরিমাণ বাড়তে বাড়তে হয় প্রায় ১ লাখ ৬ হাজার কিউসেক।
সেচ দপ্তর জানায়, সিকিমে যতক্ষণ পর্যন্ত বৃষ্টি না-থামবে ততক্ষণ জলস্তর নামবে না।
এদিকে আগামী ১৬ জুন পর্যন্ত সিকিমে ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস জারি করেছে মৌসুম ভবন। যার ফলে পরিস্থিতি আরও খারাপের দিকে যেতে পারে।
কালিম্পংয়ের জেলা প্রশাসক বালাসুব্রহ্মণিয়ম টি বলেন, আমরা পরিস্থিতির ওপর নজর রাখছি। সিকিম প্রশাসনের সঙ্গে ঘনঘন যোগাযোগ করা হচ্ছে।
Posted ১:২১ অপরাহ্ণ | বৃহস্পতিবার, ১৩ জুন ২০২৪
nykagoj.com | Stuff Reporter