সোমবার ২৯শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১৬ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন চাইলেন শমসের মবিন ও তৈমূর

রাজনীতি ডেস্ক   |   বুধবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৩   |   প্রিন্ট   |   135 বার পঠিত   |   পড়ুন মিনিটে

অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন চাইলেন শমসের মবিন ও তৈমূর

‘তৃণমূল বিএনপি’তে যোগ দিয়ে বড় দায়িত্ব নিলেন বিএনপির সাবেক দুই নেতা শমসের মবিন চৌধুরী ও অ্যাডভোকেট তৈমূর আলম খন্দকার। দু’জনই চাইলেন অবাধ, সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন। মঙ্গলবার দলটির জাতীয় কাউন্সিলে তারা দায়িত্ব গ্রহণ করেন। শমসের মবিন হয়েছেন তৃণমূল বিএনপির চেয়ারপারসন এবং তৈমূর আলম মহাসচিব। তাদের দু’জনকে নিয়ে ২৭ সদস্যের কেন্দ্রীয় কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে। কমিটিতে দলটির প্রতিষ্ঠাতা ব্যারিস্টার নাজমুল হুদার মেয়ে অ্যাডভোকেট অন্তরা সেলিমা হুদা রয়েছেন নির্বাহী চেয়ারপারসনের দায়িত্বে।

দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের আগে তৃণমূল বিএনপিতে হঠাৎ চমক, আলোচনায় ২০১৫ সালে বিএনপি থেকে পদত্যাগকারী শমসের মবিন চৌধুরী ও দল থেকে বহিষ্কৃত তৈমূল আরম খন্দকার। এরই ধারাবাহিকতায় গতকাল রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনে অনুষ্ঠিত হয় দলের প্রথম জাতীয় কাউন্সিল। সারাদেশ থেকে আসা নেতাকর্মী এতে যোগ দেন। তাদের নাম নিবন্ধনে খোলা হয় পাঁচটি বুথ। প্রত্যেককে দেওয়া হয় কাউন্সিলর কার্ড, গেঞ্জি ও দলীয় টুপি।

সকাল সাড়ে ১১টার দিকে মঞ্চে ওঠেন শমসের মবিন চৌধুরী, অন্তরা হুদা ও তৈমূর আলম খন্দকার। পাশাপাশি বসেন তারা। জাতীয় পতাকা উত্তোলন ও জাতীয় সংগীতের মধ্য দিয়ে শুরু হয় মূল অনুষ্ঠান।

ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ও বিএনপির সমালোচনা করে শমসের মবিন ও তৈমূর আলম বলেন, তৃণমূল বিএনপি সাধারণ মানুষের রাজনীতি করবে। জনগণের কল্যাণে কাজ করবে। সে জন্যই তারা এই দলে যোগ দিয়েছেন। দেশের সংকট সমাধানে তৃণমূল বিএনপি ভূমিকা রাখবে বলে উল্লেখ করেন তারা। অ্যাডভোকেট অন্তরা সেলিমা হুদা তাঁর বক্তব্যে শমসের মবিন চৌধুরী ও তৈমূর আলম খন্দকারকে তৃণমূল বিএনপিতে স্বাগত জানান।

নবনির্বাচিত চেয়ারপারসন শমসের মবিন চৌধুরী তাঁর বক্তব্যের শুরুতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানীকে স্মরণ করেন। তিনি বলেন, ‘আমরা সহিংসতার রাজনীতি করব না। রাজনীতি করব মানুষের শান্তির জন্য।’ সুশাসন প্রতিষ্ঠায় সরকারের উদ্যোগে তৃণমূল বিএনপির সহযোগিতা থাকবে উল্লেখ করে শমসের মবিন বলেন, ‘আমরা লগি-বৈঠার হত্যা দেখতে চাই না। বাস-ট্রাক পোড়ানোর সহিংসতাও দেখতে চাই না। অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন চাই। আর সেটা সম্ভব হবে যদি প্রশাসন নিরপেক্ষ ও পেশাদার ভূমিকা পালন করে; নির্বাচন কমিশন যদি সঠিকভাবে ক্ষমতা প্রয়োগ করতে পারে।’ ভোট যদি সঠিকভাবে গণনা হয়, তাহলে আগামী সংসদ নির্বাচনে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা হবে বলে মন্তব্য করেন তিনি।

নবনির্বাচিত মহাসচিব অ্যাডভোকেট তৈমূর আলম খন্দকার তাঁর বক্তব্যে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সুস্থতা কামনা ও মুক্তি দাবি করেন। তিনি বলেন, ‘আগে যে দল করতাম, তার সঙ্গে আদর্শগত ও জাতীয়তাবাদের মিল রয়েছে তৃণমূল বিএনপির। সে জন্যই এই দলে এসেছি।’ দলকে এগিয়ে নিতে সবার সাহায্য-সহযোগিতা কামনা করে তিনি বলেন, ‘এই দল কোনো প্রাইভেট কোম্পানি হবে না। এখানে সবার মূল্যায়ন হবে।’

সরকারের সমালোচনা করে তৈমূর আলম বলেন, ‘এডিসি হারুন-অর-রশীদ যদি বিরোধী দলের কাউকে পেটাতেন, তাহলে তাঁর প্রমোশন হতো। বিএনপির সংসদ সদস্য জয়নুল আবদিনকে পেটানোর কারণে আরেক হারুনের প্রমোশন হয়েছে।’ নির্বাচনের আগে সংসদ সদস্যরা নিজ এলাকায় নিজস্ব বাহিনী গঠন করেছেন উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘আজ যদি দুই নেত্রীকে এক টেবিলে বসানো যেত, তাহলে দেশে এত হানাহানি থাকত না। কোথাও গণতন্ত্র নেই। সরকারি দলকে ভোট দেওয়ার জন্য ডিসি, পুলিশ বক্তব্য দিচ্ছেন।’ আগামী জাতীয় নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক করার দাবি জানান তিনি।

ঘোষিত কমিটিতে দলের কো-চেয়ারপারসন করা হয়েছে কেএ জাহাঙ্গীর মাজমাদারকে। ভাইস চেয়ারপারসন হয়েছেন মেজর (অব.) ডা. হাবিবুর রহমান, মোখলেছুর রহমান, দিপক কুমার পালিত, মেনোয়াল সরকার ও ছালাম মাহমুদ। সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব হয়েছেন আক্কাস আলী খান; যুগ্ম মহাসচিব রেজাউল করিম, মাছুদুর রহমান, ফয়েজ চৌধুরী, তালুকদার জহিরুল হক ও রোকসানা আমিন সুরমা। কোষাধ্যক্ষ হয়েছেন মো. শামীম আহসান, সাংগঠনিক সম্পাদক শাহজাহান সিরাজ, আকবর খান ও কামাল মোড়ল। দপ্তর সম্পাদক হয়েছেন একে সাইদুর রহমান।

এদিকে কাউন্সিলে অংশগ্রহণকারী বেশির ভাগই ছিলেন রাজধানীর আশপাশ এলাকার। সিরাজুল ইসলাম নামে ৭০-ঊর্ধ্ব একজন জানান, তাঁর বাসা ফার্মগেটে। কোনো দলের সঙ্গে তিন সম্পৃক্ত নন। সেগুনবাগিচা থেকে আসা আল আমিন রেজিস্ট্রেশন বুথে নাম তালিকাভুক্ত করতে গিয়ে জানান, এলাকার স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতার নির্দেশে তিনি এসেছেন। স্বাক্ষর করতে না জানায় তাঁর নামের পাশে আরেকজন স্বাক্ষর দেন। ওই ব্যক্তি তাঁর নিজের নাম প্রকাশ করতে চাননি।

তৃণমূল বিএনপির এই কাউন্সিলে নিবন্ধনহীন ২০টির বেশি দল অংশ নেয়। যার মধ্যে ছিলেন সরকার সমর্থক ইসলামী গণতান্ত্রিক পার্টির চেয়ারম্যান ও সাবেক এমপি এমএ আউয়াল এবং বিএলডিপির চেয়ারম্যান ও সাবেক মন্ত্রী নাজিমুদ্দিন আল আজাদ। এ ছাড়া প্রগতিশীল ন্যাপ, গণআজাদী লীগ, সনাতন পার্টি, হিউম্যানিস্ট পার্টি, মানবাধিকার আন্দোলন, ইসলামী গণতান্ত্রিক লীগ, জনতা ফ্রন্ট, ইউনাইটেড ডেমোক্রেটিক পার্টি, জাতীয় মুক্তি দলের নেতারা এতে উপস্থিত ছিলেন।

Facebook Comments Box

Posted ৪:২৪ পূর্বাহ্ণ | বুধবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৩

nykagoj.com |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

advertisement
advertisement
advertisement

ক্যালেন্ডার

সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০  
সম্পাদক
আফরোজা ইসলাম
কন্ট্রিবিঊটিং এডিটর
মনোয়ারুল ইসলাম
Contact

+1 845-392-8419

E-mail: nykagoj@gmail.com