আন্তর্জাতিক ডেস্ক | বুধবার, ১১ সেপ্টেম্বর ২০২৪ | প্রিন্ট | 46 বার পঠিত | পড়ুন মিনিটে
রাজধানীর কারওয়ান বাজারে দখল ও চাঁদাবাজিকে কেন্দ্র করে দু’পক্ষে সংঘর্ষে অন্তত ১০ জন আহত হয়েছে। গত সোমবার রাত ১১টার দিকে এ সংঘর্ষ শুরু হয়, যা এক ঘণ্টার বেশি সময় ধরে চলে। সংঘর্ষের সময় অনেকের হাতেই দেশীয় ও ধারাল অস্ত্র দেখা গেছে।
বাজারের ব্যবসায়ীরা জানান, এ সংঘর্ষের নেপথ্যে তেজগাঁও থানা শ্রমিক দলের আহ্বায়ক জালাল আহমেদ, সদস্য সচিব জিএম জাহাঙ্গীর, কর্মী আনু, সুমন, হাফিজসহ বেশ কয়েকজন রয়েছেন। সংঘর্ষ চলাকালেই খবর পেয়ে শিক্ষার্থীরা এসে জালাল আহমেদকে ঘটনাস্থল থেকে আটক করে তেজগাঁও থানা পুলিশের কাছে সোপর্দ করেন। তবে গতকাল মঙ্গলবার মহানগর শ্রমিক দলের যুগ্ম আহ্বায়ক মো. বাবলু ও তেজগাঁও থানার সাবেক সাধারণ সম্পাদক আলমগীর হোসেন দুই পক্ষের মধ্যে মধ্যস্থতা করে আটক জালাল আহমেদকে মুক্ত করে নিয়ে যান। একই সঙ্গে মামলা না করার জন্য ভুক্তভোগী ব্যবসায়ীদের অনুরোধ করা হয় শ্রমিক দলের পক্ষ থেকে।
তবে মামলা না করলেও অভিযুক্তদের বহিষ্কারসহ ন্যায্য বিচারের দাবি জানান ব্যবসায়ীরা।
পরে জালাল আহমেদকে তেজগাঁও থানার আহ্বায়ক পদ থেকে বহিষ্কার করে বিজ্ঞপ্তি দেয় মহানগর শ্রমিক দল।
জানা গেছে, কারওয়ান বাজারের টিনশেড কাঁচামালের আড়তঘেঁষা পশ্চিম পাশের সড়কে রাতে সবজির ব্যবসা করেন ইদ্রিস আলী। সোমবার রাতে তেজগাঁও থানা শ্রমিক দল ও একই থানার ২৬ নম্বর ওয়ার্ড শ্রমিক দলের এক-দেড়শ লোক এসে তাঁর কাছে চাঁদা দাবি করে। নইলে তাকে সেখান থেকে উচ্ছেদের হুমকি দেওয়া হয়। ইদ্রিস আলী চাঁদা দিতে অস্বীকৃতি জানালে তাদের মধ্যে তর্ক হয়। এক পর্যায়ে অন্যান্য ব্যবসায়ী ইদ্রিস আলীর পক্ষ নিলে উভয় পক্ষের মধ্যে শুরু হয় মারামারি। চাঁদাবাজদের হামলায় এ সময় ইদ্রিস আলীর ছেলেসহ কয়েকজন মারাত্মক আহত হন। এ সময় কয়েকজন ব্যবসায়ী শ্রমিক দল নেতা জালাল আহমেদকে ঘিরে ফেলেন। অন্যরা দৌড়ে পালিয়ে যান। পরে ব্যবসায়ীরা কয়েকজন শিক্ষার্থীকে ফোন করে বিষয়টি জানালে বিজ্ঞান কলেজ, বিএএফ শাহীন কলেজ, তেজগাঁও কলেজ, বেসরকারি সোনারগাঁ বিশ্ববিদ্যালয়সহ কয়েকটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে ১৫-২০ জন ছাত্র-ছাত্রী এসে জালালকে পুলিশের হাতে তুলে দেন।
ওই রাস্তায় সবজির ব্যবসা করা মো. আসাদ জানান, আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর থেকে তেজগাঁও থানা শ্রমিক দলের বিভিন্ন পর্যায়ে নেতারা এসে চাঁদা দাবি করছেন। জালাল আহমেদকে সবাই ধরে ফেললে ছাত্রদের খবর দেওয়া হয়। তারা আসার পর কয়েকজন ছাত্রকেও আঘাত করা হয়। পরে ঘটনা আর বেশি দূর গড়ায়নি।
তবে চাঁদাবাজির অভিযোগ অস্বীকার করে জালাল আহমেদ বলেন, আমিও কারওয়ান বাজারের ব্যবসায়ী। আমি চাঁদাবাজির সঙ্গে যুক্ত না। শ্রমিক দলের তেজগাঁও থানার সদস্য সচিব জিএম জাহাঙ্গীর ও তাঁর অনুসারীরা ঝামেলা করতে এলে আমি উভয় পক্ষকে থামাতে যাই। এক পর্যায়ে আমাকে মেরে আহত করা হয়। পরে আমাকে চাঁদাবাজ আখ্যা দিয়ে আটকে রাখা হয়েছিল।
এ বিষয়ে মহানগর শ্রমিক দলের যুগ্ম আহ্বায়ক মো. বাবলু বলেন, তারেক রহমানের নির্দেশ– কোথাও চাঁদাবাজি চলবে না। জালাল আহমেদকে বহিষ্কার করা হয়েছে। অভিযুক্ত অন্যদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
তেজগাঁও থানার ওসি মোবারক হোসেন বলেন, কেউ চাঁদাবাজ হিসেবে চিহ্নিত হলে তাকে ছাড় দেওয়া হবে না। কারওয়ান বাজারের ঘটনায় উভয় পক্ষ নিজেদের পরিচিত। তারা নিজেরা সমঝোতা করে মুচলেকা দেওয়ায় আটক জালালকে তাদের জিম্মায় দেওয়া হয়েছে।
Posted ৩:৫১ পূর্বাহ্ণ | বুধবার, ১১ সেপ্টেম্বর ২০২৪
nykagoj.com | Stuff Reporter