বুধবার ২৪শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১১ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

পররাষ্ট্র মন্ত্রী বললেনঃ আমি কিছুই জানি না

পদক প্রদানে কেন এই আপত্তি ?

নিজস্ব প্রতিবেদক   |   সোমবার, ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৩   |   প্রিন্ট   |   259 বার পঠিত   |   পড়ুন মিনিটে

পদক প্রদানে কেন এই আপত্তি ?

 

পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্দুল মোমেন একজন বিদগ্ধ জ্ঞানী মানুষ। যুক্তরাষ্ট্রে বিশ্বের শ্রেষ্ঠ বিশ্ববিদ্যালয়ে লেখাপড়া করেছেন। শিক্ষার আলোকবর্তিকা পৌঁছে দিয়েছেন হাজারো মানুষের মাঝে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাকে জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি হিসেবে নিয়োগ দিয়েছিলেন। তার এ নিয়োগ যথেষ্ঠ সময়োপযোগী ও সঠিক সিদ্ধান্ত ছিল। তার ভাই এ এম এ মুহিতও আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন সরকারের দাপুটে অর্থমন্ত্রী ছিলেন। স্বৈরাচারি এরশাদের শাসনামলেও অবশ্য জ্বনাব মুহিত ছিলেন মন্ত্রী। ১৯৯২ এর পরে ড. কামাল হোসেনর গঠিত গন ফোরাম গঠনে ভূমিকা ছিল তার। পরে তিনি আওয়ামী লীগে যোগ দেন।

আব্দুল মোমেন জাতিসংঘে দক্ষতার সাথে বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করেছেন। যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামীলীগের অধিকাংশ কর্মসূচিতে তার অংশগ্রহন ছিল চোখে পড়ার মতো।আনুগত্যে শেখ হাসিনার গুডবুকে ছিলেন বরাবরই। জাতিসংঘের দায়িত্ব থেকে বাংলাদেশে পত্তনের পর তিনি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়টি পান যোগত্যতা ও অভিজ্ঞতার আলোকেই। কিন্তু তার কর্মকান্ডের ছোটখাটো বিষয় ও অতিকথন বাংলাদেশের রাজনীতি ও নিজ দল আওয়ামী লীগেও ঝড় তোলে। অনেক সময় নেতাকর্মিদের তোপের মুখেও পড়েছেন। মানুষ বড় হলে উদার হয়। ভালো না লাগলেও ছোট ছোট অপছন্দের বিষয়গুলো এড়িয়ে চলেন। প্রতিহিংসাকে পদলেপন করে এগিয়ে যান তারা। কিন্তু এমনটি কি তিনি করতে পেরেছেন? একটি ছোট ঘটনা উঠে এসেছে নিউইয়র্কের বহুল প্রচারিত সাপ্তাহিক ঠিকানার সাবেক সিইও ও প্রেসিডেন্টে সাঈদ উর রবের একটি লেখনীতে। সাঈদ উর রব দেশের একজন কৃতিমান ক্রিড়াবিদ। সফল ক্রিড়াবিদ হিসেবি বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করেছেন। সোনার মুকুট ছিনিয়ে  এনেছেন দেশ মাতৃকার জন্য। তিনি রাজনৈতিক কোন মতাদর্শ লালন করেন কিনা তা আমার জানা নেই। তবে দেশের মঙ্গলের জন্য কিংবা ভালো কিছু দেখার জন্য তিনি  উদগ্র্বী থাকেন। অনেক লেখা ও কথাবার্তায় তার বর্হিপ্রকাশ ঘটে।  তার বাংলাদেশ থেকে একটি পদক প্রাপ্তি ও তা ঠেকিয়ে দেবার  ঘটনায় মন্ত্রী আব্দুল মোমেনের নেপথ্য আপত্তি সোশাল মিডিয়ায় এসেছে। সাঈদ উর রব এর জন্য মোমেন সাহেবকে সরাসরি দায়ি করেছেন। এমন একটি বিষয় পররাষ্ট্র মন্ত্রীর সাথে যায়?  গত শুক্রবার ২৪ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যায় নিউইয়র্ক কনস্যুলেটে যুক্তরাষ্ট্র সফররত পররাষ্ট্র মন্ত্রী আব্দুল মোমেন প্রবাসী বাংলাদেশিদের সাথে মতবিনিময় করছিলেন। অনুষ্ঠান শেষে নিউইয়র্ক কাগজের পক্ষ থেকে এ ব্যাপারে জ্বনাব মোমেনের দৃষ্টি আর্কষন করা হয়। প্রশ্ন শুনে মন্ত্রী বিস্মিত দৃষ্টিতে তাকান। বলেন, তাই নাকি। এমন ঘটনা এই প্রথম শুনলাম। আমি কিছুই জানি না।

জ্বনাব রব কেন এমন অভিযোগ আনলেন? তাহলে কি পুরষ্কার প্রদানকারি প্রতিষ্ঠানটি অন্যকোন কারন বিষয়টি ফেব্রিকেট করেছে? এ ব্যাপারে ঢাকায়  who’s who প্রতিষ্ঠানে যোগাযোগ করে কোন সদুত্তোর পাওয়া যায় নি। আমরা বাংলাদেশিরা শিক্ষিত হয়েও উদার হতে পারি না। প্রবাসে দির্ঘদিন বাস করেও উন্নত বিশ্বের ভালো দিকগুলো গ্রহন করি না। হিনমন্যতা আমাদের পেছনে নিয়ে যাচ্ছে। সাঈদ উর রবের আত্মকথন ও আমাদের আত্মহননের চিত্রটি তলে ধরতেই সোশাল মিডিয়ায় জ্বনাব রবের লেখাটি নিউইয়র্ক কাগজের পাঠকদের জন্য তুলে ধরা হলো।

পুরস্কার  (?) নিয়ে পর্দার আড়ালে কি হয় তার একটা ছোট  নমুনা তুলে ধরছি।  আসলে বলার ইচ্ছে ছিল না। নিজের সম্পর্কে বলা  যত কম বলা যায় ততই ভাল।  তবে কোন কোন সময় অন্যের জন্য বলতে হয়। তখন মানুষের একটা স্বচ্ছ ধারনা  জন্মাবে ন্যায় ও অন্যায় সম্পর্কে। আমেরিকায় পেশার দায়িত্ব পালন কালে who’s who org বহু বার ফোন করেছিল পুরস্কার নেওয়ার জন্য। কনভিনস করার চেষ্টা করেছে। কথা ও হয়েছে  তবে কথার শেষ হল টাকা দিতে হবে।  টাকার পরিমান তাও খুব একটা বেশী না। কিন্তু ঐ যে বিবেক, টাকা দিয়ে পুরস্কার নিব? জীবনে বহু পুরস্কার অর্জন করেছি দেশে ও বিদেশে । দেশের জন্য বিদেশে পতাকা উড়িয়েছি। কয়জনের ভাগ্যে তা ঘটে? কারো দয়া ও করুণারর দিকে তাকাতে হয়নি। বহু প্রতিষ্ঠিত ব্যক্তিত্বদের আমার পুরস্কার দেওয়ার সৌভাগ্য হয়েছিল  প্রতিষ্ঠানের পক্ষে। এবার আসি আসল কথায়। ২০২০ সালে হঠাৎ একজন ভদ্রলোক ফোন (নাজিউর রহীম) করলেন আমাকে ঢাকা থেকে । আমি উনাকে চিনি না জানি না। এর আগে কখনো উনার সাথে কথা হয়নি।শুরুতেই শুভেচ্ছা বিনিময় করে শুনার চেষ্টা করলাম এবং জিজ্ঞেস করলাম, কেন ফোন করেছেন। বললেন আপনাকে ২০২০ সালের who’s who award দেওয়ার জন্য আমাদের কমিটি মনোনীত করেছে ।  চিন্তা করতে শুরু করলাম তিনি আবার টাকা চেয়ে বসেন কি না। তবে তিনি সেই দিকে যাননি। আমি তখন অবাক হলাম। এই প্রতিষ্ঠান ও ব্যক্তি সম্পর্কে কিছুই জানিনা। কারন দেশে ও বিদেশে আমাদের  সমাজে অনেক ফেইক প্রতিষ্ঠান ও ফেইক ব্যক্তি রয়েছে।এই রকম কি না  ওরা। তারপর উনার কথা শুনে জানার চেষ্টা করি এরা কারা, একটু খোজ খবর নিলাম এরং আগে কারা কারা পুরস্কার পেয়েছেন ।প্রতিষ্ঠানটি ঠিক কি না   ইত্যাদি ইত্যাদি। যাক জানা গেল ভূয়া না। আর যারা যারা আগে পুরস্কার পেয়েছেন তাদের মধ্যে দু একজন বাদে সব ঠিক আছে এবং যোগ্য লোকদের পুরস্কার দিয়েছে। সব জেনে শুনে ভদ্রলোককে বললাম  ফর্মালি আমাকে একটা চিঠি পাঠান। পাঠালেনও বটে এবং কারা পুরস্কার পাচ্ছেন তাদের ও নাম জানলাম। পরে সম্মতি জানালাম। পুরস্কার দেওয়ার জন্য আমাকে মনোনীত করেছিলেন NRB  ক্যাটাগরিতে। ঐ বছর  পুরস্কারের জন্য ১২ জন ব্যক্তি মনোনীত হলেও পুরস্কার দেওয়া হয়েছে এগারো জনকে আমি ছাড়া । অনুষ্ঠানের কিছু দিন আগে হঠাৎ আমাকে প্রতিষ্ঠানের প্রধান নির্বাহী ও কমিটির প্রধান আবারও ফোন করে বললেন ভাই কি করব ! মাফ করবেন বলে দুঃখ প্রকাশ করতে থাকলেন তিনি। জিজ্ঞেস করলাম কি হয়েছে এবং ঘটনাটা কি? জানার চেষ্টা করলাম।  চিঠি দেওয়া হয়েছে আমাকে । যার একটা কপির নমুনা  লেখার সাথে সংযুক্ত । আমার উপর ভিডিও  চিত্র তৈরি করা হয়েছে। পুরস্কারও তৈরি করা হয়েছে। তার নমুনা কপি আমাকে পাঠানো হয়েছে। আমার দশ জন অতিথিকে দাওয়াত ও দেওয়া হয়েছিল  হোটেল রেডিসনে । তারা যথারিতি অনুষ্ঠানে হাজির হয়ে অনুষ্ঠান উপভোগ করেছেন।  কমিটমেন্ট অনুযায়ী আমার গেস্টদেরকে জানাইনি আমার শুভ সংবাদটা। জিজ্ঞেস করেছিলাম কর্মকর্তাদের আমার গেস্টদের যাওয়া ঠিক হবে কি? তারা জানালেন গেস্টরা  থাকবে ।তবে অনুরোধ করলেন কোন মিডিয়াকে সংবাদ টা  না জানানোর জন্য । বললাম ওকে। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন অর্থমন্ত্রী মুহিত সাহেব কিন্তু তার অসুস্থতার কারনে অর্থমন্ত্রী যেতে পারেননি বলে শুনেছি। তার পরিবর্তে বর্তমান পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডঃ এ কে এম আব্দুল মোমেন  অনুষ্ঠানে যাওয়ার  সম্মতি প্রকাশ করেছেন। তিনি জানার আগ্রহ প্রকাশ করেছেন কারা কারা পুরস্কার পাচ্ছেন। প্রতিষ্ঠানের প্রধান নির্বাহী যখন পুরস্কারের জন্য মনোনীত ব্যক্তিদের নামের   লিষ্ট দেখাতে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের গেলেন, পররাষ্ট্র মন্ত্রী লিষ্ট দেখতে গিয়ে আমার নাম দেখে অবাক হলেন এবং চমকে যান।সংগঠনের প্রধানকে বললেন, উনাকে (সাঈদ উর রব)  পুরস্কার দেওয়া যাবে না। উনাকে দিলে আমি অনুষ্ঠানে যাব না। প্রধান নির্বাহী  পড়লেন আবার বিপদে। শ্যাম রাখি না কুল রাখি। আবার ফোন করে জানতে চাইলেন ভাই কি করব। আমি বললাম আমাকে বাদ দিয়ে হলেও অনুষ্ঠান করেন এবং তাই হল। পরবর্তী কালে ডঃ মোমেন  সাহেবের সাথে আমার নিউইয়র্কে একটা অনুষ্ঠানে দেখা হয়েছে। আমি তাকে বুঝতে দেইনি যে ব্যাপারটা আমি জানি।  আমি বসা ছিলাম, তিনি আমাকে দেখে হেলো বলেছেন যথারীতি। আমিতো অনেকের মত অভদ্রতামী করতে পারি না বা শিক্ষাও পাইনি। ডঃ মোমেন  নিউইয়র্ক জাতিসংঘে বাংলাদেশ মিশনে  কর্মরত অবস্থায়  আমার পত্রিকায় খবর ছাপানোর  জন্য খুব আগ্রহী ছিলেন। একজন ভাঁড়কে (সাংবাদিক!) দিয়ে তার পারপাস  সার্ভ করাতেন, আমি এগুলো বুঝতাম এবং নিউজ গুলো  পরবর্তীতে বগল দাবা করে প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করার চেষ্টা করেছেন যা পরবর্তীতে কাজে দিয়েছে তার।  এটা   হউক তাতে আমার কিছু যায় আসে না। ধারনা করছি তার হয়তো আমার উপর রাগ থাকতে পারে একটা কারনে, ডঃ মোমেনের ছোট বোন (রিউ) আমার বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লাসমেট।  আমি  ডঃ মোমেনের বিভাগীয় শহরের একজন মানুষ। তিনি নিউইয়র্কে আসলে সিলেটিরা লাফালাফি করে, দেখি। আসলেই কি বলব। পুরস্কার দিয়ে আমাকে আলোকিত করার কিছু নেই।  আমি দেশের  একশত ষাট মিলিয়ন  মানুষের  প্রতিনিধিত্ব করে  বা জাতির মধ্যে বহুবার প্রথম হয়ে একশত টাকার একটা মেডেল পেয়েছি। ধন্য হয়েছি। কখনও কোন প্রতিবাদ করিনি। বিভিন্ন সরকারের সময় আমাকে ডিপ্রাইভ করেছে।  কিছু বলিনি। তখনই আমার জানা হয়েছে যে এ জাতি কত দরিদ্র। আর  প্রবাসে পত্রিকায় কাজ করে  আর বুঝেছি, জেনেছি,  বাংগালীরা কত  মানসিকভাবে কত দরিদ্র ও হিংস্র। আমরা বিদেশীদেরকে ডেকে এনে সোনার মেডেল দেই  লক্ষ টাকা খরচ করে অনুষ্ঠান করি। আর আমাদের বীরদের অবহেলা অপমানিত করে আনন্দ পাই। মূল্যায়ন হয় না। সম্ভবত মেডেল গুলোতে জং ধরেছে ইতিমধ্যে। ফেলে দেইনি। যত্ন করে রেখেছি  জাতীয় পদক? পরবর্তী জেনারেশনকে দেখানোর জন্য।  জাতীয় বীরদের সম্মান না দিতে পারলে এ জাতি কখনও দাঁড়াতে পারবে না। একটা জাতিকে বিদেশিরা বুঝতে হলে তার  শিল্প, সাহিত্য, আর্ট, কালচার, খেলাধুলা জানলে ওরা বুঝে নিতে পারে এ জাতি কত শক্ত ভিত্তির উপর দাঁড়িয়ে আছে। বা উন্নত। খেলোয়াড়রা আমাদের জাতীয় সম্প্দ। নোংরা রাজনীতি ও বাদরামি করে একটা সম্ভাবনাময় জাতিকে ধীরে ধীরে দুরে ঠেলে দিচ্ছি। হে মানুষ তোমাদের বিবেক জাগ্রত হোক। জেগে উঠো ।

 

 

Facebook Comments Box

Posted ১২:১৭ পূর্বাহ্ণ | সোমবার, ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৩

nykagoj.com |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

advertisement
advertisement
advertisement

ক্যালেন্ডার

সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০  
সম্পাদক
আফরোজা ইসলাম
কন্ট্রিবিঊটিং এডিটর
মনোয়ারুল ইসলাম
Contact

+1 845-392-8419

E-mail: nykagoj@gmail.com