রবিবার ১৩ই জুলাই, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ২৯শে আষাঢ়, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

মধ্যবিত্তের ভোট টানতে মোদির রাস্তায় ‘কার্পেট বিছালেন’ নির্মলা

আন্তর্জাতিক ডেস্ক   |   বুধবার, ০১ ফেব্রুয়ারি ২০২৩   |   প্রিন্ট   |   116 বার পঠিত   |   পড়ুন মিনিটে

মধ্যবিত্তের ভোট টানতে মোদির রাস্তায় ‘কার্পেট বিছালেন’ নির্মলা

বছর ঘুরলেই ভারতের লোকসভা নির্বাচন। আর সেই ভোটে বড় ভরসা চাকরিজীবী মধ্যবিত্ত। তাদের খুশি করতে পারলে যে ভোটের ঝুলি ভরে সেটা পরীক্ষিত সত্য। ২০১৯ সালে সেই সাফল্য দেখেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি তথা বিজেপি। এবার ২০২৪ সালের সাধারণ নির্বাচনের আগে সেই একই পথে হাঁটতে চাইছে কেন্দ্রীয় সরকার। আগের লোকসভা ভোটের ঠিক আগে আগে অন্তর্বর্তী বাজেটে ৫ লাখ রুপি পর্যন্ত করযোগ্য আয়ে ছাড় ঘোষণা করা হয়েছিল। এবার ভোটের এক বছর আগেই সেই সীমা বাড়িয়ে ৭ লাখ রুপি করা হলো। বিরোধী আসনে থাকার সময় থেকেই আয়করের ঊর্ধ্বসীমা বৃদ্ধির বিষয়ে সরব হয় বিজেপি। ২০১৪ সালে মোদি প্রধানমন্ত্রী হওয়ার আগেই সেই দাবি তুলেছিলেন প্রয়াত অরুণ জেটলি। পরে তিনি মোদির অর্থমন্ত্রী হন। তবে আগে থেকেই আয়কর ছাড়ের ঊর্ধ্বসীমা ৫ লাখ রুপি করার দাবি করেছিলেন। যদিও জেটলি নিজে সে কাজ করেননি।

২০১৪ সালে জেটলি তাঁর প্রথম বাজেটে আয়কর ছাড়ের ঊর্ধ্বসীমা আড়াই লাখ থেকে বাড়িয়ে ৩ লাখ রুপি করেছিলেন। মোদি সরকার প্রথম বাজেটে পুরস্কৃত করেছিল মধ্যবিত্তকে। কারণ, দেশের মধ্যবিত্তদের বড় অংশের ভোটেই বিজেপি বড় শক্তিতে ক্ষমতায় আসে। এর পরে বাকি বছরগুলোতে সেভাবে আয়কর কাঠামোয় পরিবর্তন আনেননি জেটলি।

শারীরিক অসুস্থতার জন্য প্রথম মোদি সরকারের শেষ বাজেট পেশ করতে পারেননি জেটলি। নতুন অর্থমন্ত্রী হিসেবে ভোটের বছরে বাজেট পেশ করেন পীযূষ গয়াল। আর সেখানেই ছিল মধ্যবিত্তের জন্য বড় চমক। লোকসভা ভোটের আগে জনদরদি ভাবমূর্তি তুলে ধরার সেটাই শেষ সুযোগ ছিল মোদি সরকারের কাছে। সেই সুযোগের পুরোপুরি ফায়দা তোলে কেন্দ্র। অন্তর্বর্তী বাজেটে ঘুরপথে ৫ লাখ রুপি পর্যন্ত আয়করে ছাড়ের ঘোষণা করেন পীযূষ গয়াল। ঘুরপথে কারণ, আদপে আয়করের যে ঊর্ধ্বসীমা আড়াই লাখ রুপি পর্যন্ত ছিল, তাতে কোনও পরিবর্তন করা হয়নি। কিন্তু ছাড় এমনভাবে বাড়ানো হয় যাতে ৫ লাখ রুপি পর্যন্ত কোনো কর দিতে হবে না।

তাতে রাজনৈতিক সুবিধা পেতে অসুবিধা হয়নি বিজেপির। ২০১৪ সালে ২৮২ আসনে জেতা বিজেপি ২০১৯ সালে পায় ৩০৩টি আসন। রাজনীতির কারবারিরা মনে করেন আয়কর ছাড়ে মধ্যবিত্ত চাকরিজীবীদের সুবিধা দেওয়া অন্যতম কারণ ছিল বিজেপির ভালো ফলের নেপথ্যে। বুধবার বাজেট বক্তৃতায় নির্মলা যে ঘোষণা করেছেন তাতে কি সেই রাজনৈতিক উদ্দেশ্যই রয়েছে?

শুধু লোকসভা নির্বাচনই নয়, তার আগে চলতি বছরেই ৯ রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচন রয়েছে। নির্বাচন হতে পারে কাশ্মীরেও। সেই দিকে তাকিয়েই কি মধ্যবিত্তকে এতটা সুবিধা করে দিলেন নির্মলা? তিনি জানিয়েছেন, ‘আয়কর ছাড়ের সীমা ৫ লাখ রুপি থেকে বাড়িয়ে ৭ লাখ রুপি করা হচ্ছে। পাশাপাশি, কারও বছরে ৯ লাখ রুপি পর্যন্ত আয় হলে ৪৫ হাজার রুপি আয়কর দিতে হবে। যা আগের তুলনায় ২৫ শতাংশ কম। যাঁর ১৫ লাখ রুপি বাৎসরিক আয় তাঁকে দেড় লাখ রুপি কর দিতে হবে। আগে দিতে হত ১ লাখ ৮৭ হাজার রুপি।’

বিস্তারিত বাজেট প্রস্তাবে কত রুপি পর্যন্ত আয়ে কত শতাংশ কর তার হিসাব থাকলেও নির্মলা তাঁর বক্তৃতায় হিসাব করে বলেছেন কত আয়ে কত রুপি পর্যন্ত কর দিতে হতে পারে। এই বলার মধ্যেও রাজনৈতিক উদ্দেশ্য থাকতে পারে। সাধারণ মানুষের কাছে শতাংশের হিসাবের থেকে রুপির অঙ্ক বোঝা অনেক বেশি সহজ। সেই সহজ পথই বেছেছেন নির্মলা। আর সব মিলিয়ে মোদির তৃতীয়বার প্রধানমন্ত্রী হওয়ার লড়াইয়ে আগাম লাল কার্পেট বিছিয়ে দেওয়ার চেষ্টাও স্পষ্ট করে দিয়েছেন। সূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা

Facebook Comments Box

Posted ১২:৪৫ অপরাহ্ণ | বুধবার, ০১ ফেব্রুয়ারি ২০২৩

nykagoj.com |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

advertisement
advertisement
advertisement
সম্পাদক
আফরোজা ইসলাম
কন্ট্রিবিঊটিং এডিটর
মনোয়ারুল ইসলাম
Contact

+1 845-392-8419

E-mail: nykagoj@gmail.com