নিজস্ব প্রতিবেদক | শনিবার, ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪ | প্রিন্ট | 75 বার পঠিত | পড়ুন মিনিটে
ড.মুহাম্মদ ইউনূস সম্পর্কে নেতিবাচক মন্তব্য করায় খালেদ মহিউদ্দীনকে নিয়ে আলোচনার ঝড় বইছে। অনেকে মহিউদ্দীনের বক্তব্যের তীব্র প্রতিবাদ করেছেন। হয়েছে প্রতিবাদ সভাও। গত রোববার জ্যাকসন হাইটসের জুইস সেন্টারে বাংলাদেশ সোসাইটির সাবেক সাধারন সম্পাদক ফকরুল আলমের উদ্যোগে এক মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন ডয়েসেভেলের সাবেক সাংবাদিক খালেদ মহিউদ্দীন। এ সভায় ড. ইঊনূসের নোবেল প্রাইজ নিয়ে কটাক্ষ করেন তিনি। অথচ এই মতবিনিময় সভাটি ছিল অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান ড. মুহাম্মদ ইঊনূসকে কেন্দ্র করেই। আয়োজকরা প্রধান উপদেষ্টার কাছে প্রবাসীদের সমস্যা সম্বলিত একটি দাবিনামা পেশ করার লক্ষ্যেই এই মতবিনিময়ের আয়োজন করেছিলেন। এই দাবিনামা নিয়ে কিভাবে তার সাথে সাক্ষাৎ করা যায় তা নিয়েই আলোচনার জন্যই ছিল সভা। কিন্তু প্রায় ২ শতাধিক অতিথির উপস্থিতিিতে ৫০ জন বক্তৃতাও করেন। কিন্তু খালেদ মহিউদ্দীনের বক্তব্যের পর পরিস্থিতিি পাল্টে যায়। এখন দাবি দাওয়া পেশ নিয়ে আয়োজকরাই হতাশায় ভুগছেন।
মতবিনিময় অনুষ্ঠানের শুরুতেই উপস্থাপক আশরাফুল আহসান বুলবুলের উপস্থিতি নিয়ে অনেকে আপত্তি তোলেন। সার্বজনীন মতবিনিময় সভায় পতিত স্বৈরাচারের দোসর কেন উপস্থাপনায় তা অনেকে জানতে চান? তাকে সরিয়ে দেবার দাবি জানানো হয়। উদ্যোক্তা ফকরুল আলম এতেও বিব্রতকর পরিস্থিতিরি মুখোমুখি হন। তাকে কৌশলে সাইড লাইনে বসিয়ে রাখা হয়।
প্রধান অতিথি খালেদ মহিউদ্দীন নোবেল প্রাইজ নিয়ে বক্তব্য দেন। তিনি বলেন, ‘জনগন সকল ক্ষমতার উৎস’ এটি রং স্টেটমেন্ট। আমাদের সংবিধানটি খোলেন। জনগন হলো সকল ক্ষমতার মালিক। উৎসতো দূরের কথা। তারা এপোয়েন্টেড গাই। তারা জনগনের কর্মচারি। বাংলাদেশে পয়সাওয়ালা হতে হলে ফটকাবাজ হতে হবে।সে পলিটিক্যাল লিডার হবে। পলিটিক্যাল লিডার হলে কি হবে? সে একটা এমপি হবে। শেখ হাসিনার একটু ভালো নজরে থাকতে পারলে, খালেদা জিয়ার একটু ভালো নজরে থাকতে পারলে চোর হবে, বাটপার হবে, মন্ত্রী হবে। তাইতো? আমি ছিুদিন সরকারি চাকুরি করেছি। নরসিংদীতে পোস্টিং ছিল। ম্যাজিস্ট্রেট ছিলাম। ছোট চাকর। শেখ হাসিনা বড় চাকর ছিল। বড় চাকর। তা নিয়া ইয়া করার কি আছে। বেতন নেয়। আড়াই তি লাখ টাকা বেতন নেয়। আপনারা কফি খান মাসে তিন জন মিলা এই টাকার সমান। হিসেব কইরা দেখেন। আপনারা ড. ইউনুসকে নিয়ে কথা বলছেন। ড. ইউনুস এর আগে যতবার আসছেন তো আপনাদের মধ্যে কোন চাঞ্চল্যতা ছিল না। এখন সে একটা চেয়ারের মধ্যে বসছে। তাই বড় ব্যাপার হয়ে গেছে। না।তার হাতে আলাউদ্দীনের চ্যারাগ এসে গেছে। সে নোবেল পেতে পারে। নোবেল একটা প্রাইজ রে ভাই। আমি ঠিকানা গ্রুপ থেকে একটা বড় প্রাইজ দিতে পারি আকাশ ভাই’র কাছ থেকে চান্দামন্দা নিয়া। একটা প্রাইজ দিতেই পারি। নোবেল প্রাাইজের চেয়ে বড়ও হতে পারে। তা ১ কোটি, ২ কোটি কিংবা ১০০ কোটি হতে পারে। এটা প্রাইজ! শুনলাম আপনারা তার কাছে ১৩ দফা দাবি নামা পেশ করবেন। এতে কোন কাজ হবে বলে আমি বিশ্বাস করি না। আমি আশাবাদী না। আমাকে এখানে প্রধান অতিথি করে এনেছেন। আমি তার অফিসে কথা বলেছিলাম। এবার তিনি অনেক ব্যস্ত। কথা ও দেখা নাও হতে পারে। আমার সাথে ড. ইউনূসের সাথে অফ ক্যামেরা কথা হতেও পারে। আমি আপনাদের দাবি দাওয়ার ব্যাপারে দেখা হলে বলবো। খালেদ মহিউদ্দীন যখন বক্তব্য দিচ্ছিলেন তখন মঞ্চে ছিলেন লেবার ইউনিয়ন লিডার মাফ মিছবাহ উদ্দীন, ডা. ওয়াদুদ ভূঁইয়া, এম এন মজুমদার, আকাশ রহমান ও ফকরুল আলম সহ অনেকে। অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন কমিউনিটি অ্যাকটিভিস্ট আবু নাসের, এনামুল হায়দার, কাজী আজহারুল হক মিলন, শাহজাহান শেখ, হানিফ মজুমদার, খুরশীদ চৌধুরী, ডা. নাফিজ, মোহাম্মদ আবুল কাশেম, আব্দুর রহিম হাওলাদার, আমিন খান জাকির, সোলায়মান ভূঁইয়া, হাজী আব্দুর রহমান, কামরুজ্জামান বাচ্চু, ইঞ্জিনিয়ার আলতাফ চৌধুরী, জাকারিয়া মাসুদ জিকু, মোহাম্মদ কাশেম, আনোয়ার হোসেন লিটন, বদরুল হক, হাকিকুল ইসলাম খোকন, অ্যাডভোকেট মজিবউর রহমান।
খালেদ মহিউদ্দীনের এই বক্তব্যে প্রেক্ষিতে গত মঙ্গলবার জ্যাকসন হাইটসে বৈষম্যবিরোধী প্রবাসী সচেতন সমাজ ইউএসএ ও প্রবাসী বাংলাদেশী নাগরিক সমাজ সম্মিলিতভাবে প্রতিবাদ সভা করে। সভায় গ্রহীত রেজুলেশনে বলা হয়, ডয়েচেভেলে থেকে বিতাড়িত সালমান এফ রহমান ওরফে দরবেশ বাবার ইন্ডিপেন্ডেন্ট টেলিভিশনের সাংবাদিক খালেদ মহিউদ্দিন বাংলাদেশ সরকারেরপ্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর ড মুহাম্মদ ইউনূস সম্পর্কে অত্যন্ত আপত্তিজনক, উদ্ধত্যপূর্ণ ও কান্ডজ্ঞানহীন মন্তবের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ করা হচ্ছে। পতিত স্বৈরাচার ফ্যাসিস্ট সরকারের কতিপয় দালাল দ্বারা পরিবেষ্টিত হয়ে নিউ ইয়র্কস্থ জ্যাকসন হাইটস এর একটি অনুষ্ঠানে এ ধরণের অশালীন ও অসভ্য মন্তব্যের প্রতিবাদে খালেদ মহিউদ্দিনকে প্রধান উপদেষ্টার নিউ ইয়র্ক সফরের সময়ে কনস্যুলেট ও জাতিসংঘসহ অন্যান্য সকল অফিসে বয়কট করার জোরালো দাবি জানানো হয়েছে সভায়। নিউ ইয়র্কের সচেতন প্রবাসী সমাজের রাজনীতিবিদ , শিক্ষক সাংবাদিক , বুদ্ধিজীবী , সাহিত্যিক , কবি , চিকিৎসক , প্রকৌশলী সহ এই দালাল মহিউদ্দিনের সকল প্রকার অনুষ্ঠান বয়কটের ব্যাপারে এক বিশেষ সভায় সম্মিলিতভাবে সিদ্ধান্তে উপনীত হয় ! নিউইয়র্কের জ্যাকসন হাইটসে অনুষ্ঠিত তাৎক্ষণিক এই প্রতিবাদ সভাটির সভাপতিত্ব করেন যুক্তরাষ্ট্রের লং আইল্যান্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থ ও বাণিজ্য বিভাগের অধ্যাপক ড শওকত আলী। রেজুলেশনে স্বাক্ষর করেছেন প্রফেসর ড. শওকত আলী, প্রফেসর ড জগলুল হায়দার, ড . আবুল কাশেম, সাংবাদিক মঈনুদ্দিন নাসের, খোন্দকার ফরহাদ, রিতা রহমান, জামাল আহমেদ জনি, আব্দুস সবুর, আহমেদ সোহেল, মোহাম্মদ কিউজামান, তাসের মাহমুদ খান , শাহ আলম দুলাল ,মির্জা আজম, মোহাম্মদ সুরুজ্জামান ,সায়ীদ তারেক, এম রহমান মাসুম ও হামিদ সোহেল
Posted ১:২০ অপরাহ্ণ | শনিবার, ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪
nykagoj.com | Monwarul Islam