
বিনোদন ডেস্ক | বৃহস্পতিবার, ১৯ ডিসেম্বর ২০২৪ | প্রিন্ট | 59 বার পঠিত | পড়ুন মিনিটে
রাজধানীর রাস্তায় ছিনতাইকারীর উৎপাত বেড়েছে- সাম্প্রতি অনেকেই এমন অভিজ্ঞতা শেয়ার করেছেন। এবার এমন এক ঘটনার মুখোমুখি হয়েছেন ‘কুঁড়েঘর’ ব্যান্ডের গায়ক তাসরিফ খান। তবে সরাসরি ছিনতাইকারীর কবলে পড়েননি তিনি। তার এগিয়ে যাওয়ায় ছিনতাইকারীদের কবল থেকে উদ্ধার হয়েছেন এক ব্যক্তি। সেই ঘটনার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ঘটনার বিস্তারিত জানিয়েছেন তাসরিফ।
বুধবার (১৮ ডিসেম্বর) দিবাগত রাতে এই দুর্ঘটনার সাক্ষী হয়েছেন তাঁরা ক’জন।
ঘটনার বিবরণ দিয়ে তাসরিফ লিখেছেন, ‘১৮ তারিখ দিবাগত রাত ২টার ঘটনা। মিরপুর ২ নাম্বার একটা প্র্যাকটিস পেড থেকে জ্যামিং শেষ করে আমরা কুঁড়েঘর ব্যান্ডের প্রায় সবাই খাবার হোটেলের দিকে যাচ্ছিলাম। মিরপুর ২ নাম্বার ওভারব্রিজের পাশে, পেট্রোলপাম্পের ঠিক সামনে খেয়াল করলাম ৫-৬ জন মিলে একটা লোককে ধস্তাধস্তি করছে আর লোকটা খালি গায়ে কোনোরকম ছুটে যাবার চেষ্টায় ‘কেউ বাঁচান ভাই’ বলে চিৎকার করছে।’
তাসরিফরা এগিয়ে গেলে ছিনতাইকারীরা নাটকীয়ভাবে তাদের ভোল পাল্টায়। সেই অভিজ্ঞতা জানিয়ে এই গায়ক লেখেন, ‘‘ব্যান্ডের ৩ জন একসঙ্গে ছিলাম আর বাকিরা সামনে পেছনে মিলিয়ে। আমি এগিয়ে গিয়ে গলা মোটা করে কী সমস্যা জিজ্ঞেস করে থামতে বলার সাথে সাথে খালি গায়ের লোকটা কোনোরকম ছুটে দৌড় দেয় আর ওই ৫-৬ জন আমাদের দিকে এগিয়ে আসতে থাকে। কোনোকিছু অনুমান করার আগেই ওরা আমাদের কাছে এসে বিচারের স্বরে বলে যে ‘ভাই ওইডা মাদক ব্যবসায়ী’।’’
যোগ করে তিনি বলেন, ‘আমি এই কথায় কয়েক মুহূর্তের জন্য কনফিউজড হয়ে যাই। আসলেই পালানো লোকটা মাদক ব্যবসায়ী নাকি এদের নিজেদের কোনো ঝামেলা নাকি এরা ছিনতাই করছিল, ভাবতে ভাবতে আরও কয়েক কদম এগিয়ে যাই ওই খালি গায়ে লোকটা যেদিকে দৌড়াল সেদিকে। খেয়াল করলাম খালি গায়ের লোকটা আসলে পালায়নি। থানা একেবারে পাশেই থাকায় লোকটা থানার সামনে দাড়িয়ে চিৎকার করে পুলিশকে জানানোর চেষ্টা করছে। এই সুযোগে পালিয়ে যায় ছিনতাইকারীরা।
তাসরিফের কথায়, ‘ঘটনা বুঝতে আর বাকি রইল না। পেছন ফিরে দেখি ওরা তড়িৎ গতিতে গাড়িতে উঠে গাড়ি স্টার্ট দিয়েছে। সামনে যে বসা তার হাতে টিপ চাকু। মাথায় এল এরা যখন কাছে এসেছিল তখন এদের কয়েকজনের এক হাত গায়ের পেছনে লুকানো ছিল। তার মানে এদের প্রায় সবার কাছেই ধারালো অস্ত্র কিংবা চাকু ছিল। গাড়িটা টান দেওয়ার সাথে সাথে একটা ছবি তুললাম যেন নাম্বার প্লেটটা পড়া যায়। গাড়ির ছবিটা লাইভ মুড হওয়ায় ছবিটা ঝাপসা হয়েছে কিন্তু নাম্বার বোঝা যায়। ঢাকা মেট্রো-গ/২৫৪৬৩৩।’
তিনি আরও লিখেছেন, ‘‘লোকটা দৌড়ে আমদের দিকে এগিয়ে এসে কান্নার স্বরে বলল ‘ভাই আপনেরা আগায় না আইলে আমারে মাইরলতো ওরা।’ ওরা পালানোর পর এবার একটু ভিড় বাড়লো যে ভিড়টা ছিনতাইয়ের সময়ে হলে হয়তো এই ছিনতাইকারীরা এত সাহস পেতই না। তখন থানায় গিয়ে ওয়ারলেস অপারেটরকে এই গাড়ির নাম্বার জানালাম এবং ওসি তদন্ত যিনি ছিলেন ওনাকেও গাড়ির নাম্বার দিলাম। উনারা ধরার চেষ্টা করবেন এবং দুইজন এসআইকেও দেখলাম সিভিল ড্রেসে একটু তৎপরতার সাথে বলছিল এদের তারা ধরবে।’’
তাসরিফ আরও বলেন, ‘অদ্ভুত ব্যাপার হলো খাবার খাওয়া শেষ করে যখন আমাদের ড্রামার শান্ত রিকশা করে ওর বাসায় ফিরছিল তখন ওই গাড়িকে মিরপুর-১০ আল হেলালের পাশের সিএনজি পাম্পে স্টার্ট করা অবস্থায় দাড়িয়ে থাকতে দেখে আবার আমাকে কল দিয়ে জানায়। আমি কল দিয়ে থানার এসআইকে জানাই। এসআই ভাইজান আমাকে কিছুক্ষণ পর কল করে জানান উনারা লোক পাঠিয়েছিলেন কিন্তু গাড়িটা হয়তো ততক্ষণে ওই জায়গা ত্যাগ করেছে।’
তিনি বলেন, ‘আমার কথা হচ্ছে ঢাকায় বিভিন্ন মোড়ে মোড়ে সিসিটিভি আছে, পুলিশের কাছে গাড়ির নাম্বার আছে, এমনকি বিভিন্ন জায়গায় চেকপোস্টও রয়েছে তারপরও আমি জানি না এই গাড়ি এখনও আটক হয়েছে কিনা অথবা কেন এখনও এই গাড়িটা কিংবা ওই সন্ত্রাসীদের ধরা গেল না? এদের হাতে যদি আল্লাহ না করুক, কেউ খুন হয় কিংবা আমার আপনার পরিবার বড় বিপদে পড়ে তবে এই দায়ভারটা নিবে কে?’
সবশেষে সবাইকে সতর্কভাবে চলাফেরা করার পরামর্শ দিয়েছেন তাসরিফ খান। বলেন, ‘কী হবে জানি না তবে নিজের এবং নিজের পরিবারকে সাবধান করুন, সতর্ক করুন। রাতে একা চলাচল থেকে বিরত থাকুন। এইসব আজন্ম সাফারিংসগুলো বোধহয় আমরা কপালে করে লেখায় নিয়েই আসছিলাম যেগুলা প্রতিনিয়ত আমাদের মেনে নিতে হয় কিংবা সামনেও আরও মেনে নিতে হবে।’
Posted ৯:৩৬ পূর্বাহ্ণ | বৃহস্পতিবার, ১৯ ডিসেম্বর ২০২৪
nykagoj.com | Stuff Reporter