মঙ্গলবার ১৪ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ৩১শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

আওয়ামী লীগ ও গণতন্ত্র একসঙ্গে চলে না: খন্দকার মোশাররফ

রাজনীতি ডেস্ক   |   বুধবার, ২৮ ডিসেম্বর ২০২২   |   প্রিন্ট   |   88 বার পঠিত   |   পড়ুন মিনিটে

আওয়ামী লীগ ও গণতন্ত্র একসঙ্গে চলে না: খন্দকার মোশাররফ

সরকারের সমালোচনা করে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেছেন, আওয়ামী লীগ ও গণতন্ত্র একসাথে চলে না। যারা গণতন্ত্র হত্যাকারী তাদের পক্ষে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার সম্ভব নয়। তারা গত ১৪ বছর ধরে দুর্নীতি ও চাপাবাজি করে ক্ষমতায় টিকে আছে।
আজ বুধবার দুপুরে জাতীয় প্রেস ক্লাবের তৃতীয় তলার মিলনায়তনে এক অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।

বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া, মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাসসহ সকল রাজবন্দির মুক্তির দাবিতে ন্যাশনাল পিপলস পার্টি (এনপিপি) এই আলোচনা সভার আয়োজন করে।

সংগঠনের চেয়ারম্যান ড. ফরিদুজ্জামান ফরহাদের সভাপতিত্বে ও যুগ্ম মহাসচিব ফরিদ উদ্দিনের পরিচালনায় আরও বক্তব্য দেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও ঢাকা মহানগর উত্তরের আহ্বায়ক আমান উল্লাহ আমান, বিকল্পধারা বাংলাদেশের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. নূরুল আমিন বেপারী, জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টির (জাগপা) খন্দকার লুৎফর রহমান, ন্যাপ-ভাসানীর অ্যাডভোকেট আজহারুল ইসলাম, এস এম শাহাদাত, ডেমোক্রেটিক লীগের সাইফুদ্দিন মনি, বাংলাদেশ ন্যাপের শাওন সাদেকি, বাংলাদেশ মাইনরিটি পার্টির সুকৃতি মণ্ডল প্রমুখ।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে খন্দকার মোশাররফ বলেন, আজকে সরকার ভয় পেয়ে আমাদের কর্মসূচিতে বাধা দিচ্ছে। এর আগে আমাদের ৯টি বিভাগের গণসমাবেশ নিয়ে তারা যা করেছে, তার নজিরবিহীন। ঢাকার গণসমাবেশ নিয়ে অনেক টালবাহানা করছে। পরে আমাদের নয়াপল্টন বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে কী নারকীয় তাণ্ডব চালিয়েছে! এটা স্বাধীন বাংলাদেশে কল্পনাও করা যায় না। তারা পরে আমাদের দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাসসহ সিনিয়র সাড়ে চার শতাধিক নেতাকর্মী গ্রেপ্তার করেছে। কিন্তু সরকার আমাদের গণসমাবেশে জনতার ঢল থামাতে পারেনি। এসব সমাবেশে জনগণ অংশগ্রহণ করে জানিয়ে দিয়েছে যে তারা আর আওয়ামী লীগের সরকারকে ক্ষমতায় দেখতে চায় না।

তিনি বলেন, এরপর আমরা জনগণের মতামতের ভিত্তিতে সবার সাথে আলোচনা করে অবিলম্বে এই ভোটারবিহীন সরকারের পদত্যাগ ও সংসদ বিলুপ্ত এবং নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবিতে ১০ দফা ঘোষণা করেছি। এসব দফা বাস্তবায়নের লক্ষ্যে আমাদের কর্মসূচি চলছে। এসব কর্মসূচিতেও সরকার বাধা দিচ্ছে। গত ২৪ ডিসেম্বর প্রথম গণমিছিলে পুলিশ গুলি চালিয়ে পঞ্চগড়ে আমাদের একজন নেতাকে হত্যা করেছে। গত ১৫ দিনে বিশেষ অভিযানের নামে সারাদেশে বিরোধী দলের ২৪ হাজার নেতাকর্মী গ্রেপ্তার করেছে।

ড. মোশাররফ বলেন, জনগণের টাকা হাতিয়ে নেওয়ার জন্য দলের লোকজনের সিন্ডিকেটের মাধ্যমে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম বাড়াচ্ছে। বিচার বিভাগকে ধ্বংস করে ফেলেছে। শুধু একদলীয় বিচার। আওয়ামী লীগের লোকজন বিচার পায়। আসলে এখান থেকে উত্তরণে সরকার হটানোর কোনো বিকল্প নেই।

তিনি বলেন, আজকে জনগণ এই সরকারের পদত্যাগ দাবিতে রাস্তায় নেমেছে। কিন্তু আওয়ামী লীগ উসকানি দিচ্ছে। পুলিশ দিয়ে বাধা দিচ্ছে। কিন্তু আমরা সংঘর্ষ-সংঘাতে বিশ্বাস করি না। আমরা আমাদের দাবি আদায়ে সব রাজনৈতিক শক্তির সমন্বয় করে আন্দোলন কর্মসূচি পালন করছি।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই নেতা বলেন, জনগণের সম্মিলিত আন্দোলনে গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে এই সরকারকে জনগণ বিদায় করবে। অতীতে স্বৈরাচার এরশাদ, আইয়ুবকে জনগণ বিদায় দিয়েছে। সম্প্রতি শ্রীলঙ্কায় জনগণ সেখানে তাদের স্বৈরাচার সরকারকে বিদায় করেছে। ইনশাআল্লাহ, আমাদের আন্দোলনে জনগণ সম্পৃক্ত হয়ে রাজপথে নেমেছে। তারা বলছে এই নব্যস্বৈরাচার ক্ষমতায় টিকতে পারবে না। তাদের সময় শেষ। আমরা সকল দেশপ্রেমিক শক্তি ঐক্যবদ্ধ হয়ে স্বৈরাচার সরকারের পতন ঘটাব, ইনশাআল্লাহ।

তিনি আরও বলেন, অবিলম্বে খালেদা জিয়াসহ সিনিয়র নেতাদের মুক্তি দিতে হবে। তা না হলে জনগণের অভ্যুত্থানের মাধ্যমে এই সরকারের পতন হবে।

আমান উল্লাহ আমান বলেন, এই সরকার সবচেয়ে বড় ভয় পায় জিয়া পরিবারকে। কারণ জিয়াউর রহমান বহুদলীয় গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার করেছেন। তিনি শেখ হাসিনাকে বিদেশ থেকে দেশে এনেছেন। পরে তাকে বিদেশি ষড়যন্ত্রে হত্যা করা হলো। এখন গণতন্ত্রের মাতা দেশনেত্রী খালেদা জিয়াকে জামিন দেয় না। এটা শুধুই আক্রোশ। এরপর বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, সিনিয়র নেতা আবদুস সালাম, রুহুল কবির রিজভীসহ অনেককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তবুও কিন্তু জনস্রোত ঠেকাতে পারেনি।

তিনি বলেন, আজকে আওয়ামী লীগ সরকারের পদত্যাগের দাবিতে দেশের মানুষ ঐক্যবদ্ধ। দেশে গণঅভ্যুত্থানের পরিস্থিতি বিরাজ করছে। সুতরাং আমি বলবে, এই সরকারকে অবিলম্বে পদত্যাগ করতে হবে। পরিষ্কার কথা, এই সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচন হবে না। হতে দেওয়া হবে না। আমরা গণমিছিলের কর্মসূচি দিয়েছি। সবাই শরিক হবেন। ইনশাআল্লাহ, আমরা খালেদা জিয়া ও অন্যান্য নেতাকে মুক্ত করব।

অধ্যাপক ড. নূরুল আমিন বেপারী বলেন, এই সরকার কর্তৃত্ববাদী সরকার। তারা এমন কাজ করবে তাদের গণতান্ত্রিকভাবে সরানো যাবে না। তাদের ভিন্ন কৌশলে হটাতে হবে। তারা দিনের ভোট রাতে করে ক্ষমতায় আছে। ফ্যাসিবাদ ও কর্তৃত্ববাদী সরকারকে সরাতে হলে গণঅভ্যুত্থানের বিকল্প নেই। ইতোমধ্যে জনগণ জেগে উঠেছে। সারা দেশে বিএনপির যে বিভাগীয় গণসমাবশগুলোতে লাখ লাখ মানুষের অংশগ্রহণ, সেটাই প্রমাণ করে। এই সরকার রাষ্ট্রকে দলের সঙ্গে একীভূত করে ফেলেছে। এটা হলো এই সরকারের সবচেয়ে বড় ভুল।

সভাপতির বক্তব্যে ড. ফরিদুজ্জামান ফরহাদ বলেন, এই সরকারের অধীনে দেশে কোনো নির্বাচন হতে দেওয়া হবে। আমরা দৃঢ় বিশ্বাস করি, এই সরকার তার পূর্ণ মেয়াদ ভোগ করতে পারবে না।

Facebook Comments Box

Posted ১:৩৩ অপরাহ্ণ | বুধবার, ২৮ ডিসেম্বর ২০২২

nykagoj.com |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

advertisement
advertisement
advertisement

ক্যালেন্ডার

সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
 
১০১১১২
১৩১৪১৫১৬১৭১৮১৯
২০২১২২২৩২৪২৫২৬
২৭২৮২৯৩০৩১  
সম্পাদক
আফরোজা ইসলাম
কন্ট্রিবিঊটিং এডিটর
মনোয়ারুল ইসলাম
Contact

+1 845-392-8419

E-mail: nykagoj@gmail.com