শনিবার ২৭শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১৪ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বর্জন আর নতুন পেঁয়াজে ‘কোণঠাসা’ মজুতকারীরা

অর্থনীতি ডেস্ক   |   বুধবার, ১৩ ডিসেম্বর ২০২৩   |   প্রিন্ট   |   46 বার পঠিত   |   পড়ুন মিনিটে

বর্জন আর নতুন পেঁয়াজে ‘কোণঠাসা’ মজুতকারীরা

ভারত পেঁয়াজ রপ্তানি বন্ধের পর থেকেই বাজারে নৈরাজ্য চলছে। তবে এবার বাড়তি দামের বিরুদ্ধে এক হয়েছেন ভোক্তারা। বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ-মাধ্যমে পেঁয়াজ কেনা থেকে বিরত থাকতে প্রচারণা চালানো হয়েছে।

অন্যদিকে, বাজারে আসতে শুরু করেছে দেশীয় নতুন পেঁয়াজ। দাম তুলনামূলক কিছুটা কম হওয়ায় ক্রেতারা ঝুঁকছেন নতুন পেঁয়াজের দিকেই। ফলে অনেকটাই কোণঠাসা হয়ে পড়েছেন দেশি পুরাতন ও ভারতীয় পেঁয়াজ মজুতকারীরা।

বিক্রেতারা বলছেন, দাম কম হওয়ায় দেদারসে বিক্রি হচ্ছে নতুন পেঁয়াজ।

এদিকে বেশি দামে কিনে রাখায় বাধ্য হয়ে লোকসান দিয়ে বিক্রি করতে হচ্ছে ভারতীয় পেঁয়াজ। এমনকি পচতেও শুরু করেছে অনেকের পেঁয়াজ।

বুধবার (১৩ ডিসেম্বর) সকালে রাজধানীর বাড্ডা-রামপুরা এলাকা ঘুরে এসব চিত্র দেখা গেছে।

সরেজমিনে দেখা গেছে, বাজারে দেশি নতুন পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৮০ টাকা থেকে ১০০ টাকা কেজিতে। এছাড়া ভারতীয় পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ১৬০ টাকা কেজি, দেশী পুরাতন পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ২০০ টাকা আর তুরস্ক থেকে আমদানি করা পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ১৩০ টাকা কেজিতে। এক্ষেত্রে অন্যান্যগুলোর তুলনায় দেশি নতুন পেঁয়াজই বিক্রি হচ্ছে বেশি।

অন্যদিকে, ভারতীয় পেঁয়াজ বিক্রেতা দোকানীরা পেঁয়াজের পসরা সাজিয়ে বসে থাকলেও সেগুলোতে ক্রেতা নেই বললেই চলে। ফলে অনেকের পেঁয়াজই পচতে শুরু করেছে, যেগুলো আবার আলাদা করে আরও কম দামে বিক্রি করছেন বিক্রেতারা।

বাড্ডা পাঁচতলা বাজারের ব্যবসায়ী রফিকুল ইসলাম। ভারত পেঁয়াজ রপ্তানি বন্ধের ঘোষণার পরপরই বেশি দামে বিক্রির আশায় ১০ মন ভারতীয় পেঁয়াজ কিনে রেখেছিলেন তিনি। কিন্তু একদিকে দাম বেশি হওয়ায় ভোক্তাদের মুখ ফিরিয়ে নেওয়া এবং অন্যদিকে নতুন দেশি পেঁয়াজ বাজারে আসায় মাথায় হাত রফিকুল ইসলামের।

তিনি জানান, বাধ্য হয়েই লোকসানে ছাড়তে হচ্ছে তার পেঁয়াজ। এমনকি গুদামে বস্তাবন্দী থাকায় পচনও ধরেছে পেঁয়াজে।

তিনি বলেন, পেঁয়াজ কিনেছিলাম ১৬০ টাকা করে, কিছুদিন ২০০ টাকা কেজি বিক্রিও করেছি। কিন্তু গত দু-একদিন যাবৎ হঠাৎই বিক্রি কমে গেছে। বাজারে নতুন পেঁয়াজ আসায় মানুষ কম দামে সেগুলোই কিনছে। কী আর করা, লোকসান হলেও কম দামে বিক্রি করতে হচ্ছে।

ভ্যানে করে দেশীয় নতুন পেঁয়াজ বিক্রি করছেন আনিস মিয়া নামে এক ব্যবসায়ী। তিনি বলেন, একটু বড় মানের নতুন পেঁয়াজ ১০০ টাকা কেজি বিক্রি করছি, ছোটটা ৯০ টাকা কেজি। মানুষ এখন নতুন পেঁয়াজটাই বেশি নিচ্ছে। তিনদিনের জন্য পেঁয়াজ কিনে এনেছিলাম, তা মনে হচ্ছে আজই শেষ হয়ে যাবে।

দাম আরও কমবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, এখন তো মাত্র নতুন পেঁয়াজ আসা শুরু হয়েছে, এক সপ্তাহের মধ্যে নতুন পেঁয়াজ বাজার দখল করবে, তখন দাম আরও কমে আসবে।

বাজার করতে আসা শামীম আহমেদ নামক এক ক্রেতা বলেন, বাজারে নতুন পেঁয়াজ আসায় আমার মতো মধ্যবিত্ত-নিম্নবিত্তদের জন্য কিছুটা ভালো হয়েছে। তারপরও ১০০ টাকা কেজি অনেক দাম, ৪০-৫০ টাকায় হলে আমাদের জন্য ভালো হতো।

তিনি বলেন, তিনদিন আগেও ২০০ টাকা কেজি দরে হাফ কেজি পেঁয়াজ ১০০ টাকায় কিনেছি। আজকে এই টাকায় এক কেজি নিতে পারছি।

সাদিয়া সিদ্দিকী নামক এক গৃহিণী বলেন, দাম বাড়ার পর আর পেঁয়াজ কেনা হয়নি। সবজি বাজারে গাছসহ যে মুড়িকাটা পেঁয়াজ পাওয়া যাচ্ছে, তা দিয়ে দু-দিন চালিয়ে দিয়েছি। বাসায় আগের কিছু পেঁয়াজ ছিল, তা দিয়েও চালিয়েছি। আজ নতুন পেঁয়াজ বাজারে এসেছে বলে সব পেঁয়াজেরই দাম দেখলাম আগের তুলনায় কমেছে।

তিনি বলেন, আমরা যদি সবাই মিলে পেঁয়াজের ব্যবহার একটু কমিয়ে দেই, তাহলেই দেখবেন দাম আগের জায়গায় ফিরে আসবে। তাছাড়া নতুন পেঁয়াজও বাজারে এসে গেছে। সপ্তাহ-খানেকের মধ্যে আশা করছি এমনিতেই দাম আরও কমে আসবে।

প্রসঙ্গত, গত ৮ ডিসেম্বর এক আদেশে রপ্তানি বন্ধের খবর জানায় ভারত। তবে এই সিদ্ধান্ত আসার ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই এক লাফে ১৫০ থেকে ২০০ টাকা হয়ে যায় ভারতীয় পেঁয়াজের দাম। এ নিয়ে ভোক্তাদের নানা অভিযোগের প্রেক্ষিতে মাঠে নামে জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর। তবে পাল্টা যুক্তি ব্যবসায়ীদেরও। গত দুদিনের তুলনায় মঙ্গলবার (১২ ডিসেম্বর) কিছুটা কমলেও, এখনও নিয়ন্ত্রণে আসেনি দাম। ব্যবসায়ীরা বলছেন, দেশি পেঁয়াজের সরবরাহ বাড়লে কমে যাবে দাম।

Facebook Comments Box

Posted ১০:৩২ পূর্বাহ্ণ | বুধবার, ১৩ ডিসেম্বর ২০২৩

nykagoj.com |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

advertisement
advertisement
advertisement

ক্যালেন্ডার

সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০  
সম্পাদক
আফরোজা ইসলাম
কন্ট্রিবিঊটিং এডিটর
মনোয়ারুল ইসলাম
Contact

+1 845-392-8419

E-mail: nykagoj@gmail.com