
নিজস্ব প্রতিবেদক | শুক্রবার, ০৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ | প্রিন্ট | 389 বার পঠিত
ঐতিহ্যবাহী জালালাবাদ এসোসিয়েশনের সংকট আরও জটিল হচ্ছে। নাটকীয়তার মোড়ে স্থগিত হয়েছে ৬ ফেব্রুয়ারি আহুত সাধারন সভা। কি কারনে স্থগিত করা হলো? সাধারন সম্পাদক মইনুল ইসলামকে কারন দর্শানোর নোটিশের জবাব দেবার শেষ তারিখ ছিল ২৭ জানুয়ারি। বুধবার রাত ১ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত সভাপতি বদরুল খানসহ কার্যকরি কমিটির কোন সদস্যই জবাব পাননি। অথচ মইনুল বলছেন,তিনি জবাব দিয়েছেন। বদরুল খান আজকালকে বলেন, সংগঠনের ঠিকানায় কোন জবাব পাইনি। ই মেইলেও তা দেখিনি।
জালালাবাদ এসোসিয়েশনের সংবিধান অনুসারে কোন সাধারন সভা ডাকতে হলে ৩০ দিন আগে নোটিশ দিতে হয়। সংগঠনের এক কর্মকর্তা আজকালকে বলেন, ৬ ফেব্রুয়ারির সভায় ৩০ দিনের সময়ের ঘাটতি ছিল। সাংবিধানিক বাধ্যবাদকতায় তা স্থগিত করা হয়েছে। অন্যদিকে এসোসিয়েশনের শক্তিশালী বডি হচ্ছে ‘ট্রাস্টি বোর্ড’। জালালাবাদ এসোসিয়েশনের গঠনতন্ত্র অনুসারে যেকোন মেজর সিদ্ধান্ত নেবার বেলায় কার্যকরি কমিটি ও ট্রাস্ট্রি বোর্ড যৌথভাবে নিয়ে থাকে। ২ বছরের জন্য ট্রাস্টিবোর্ড গঠিত হলেও নতুন বোর্ড গঠিত না হওয়া পর্যন্ত তাদের কাজ করার রেওয়াজ জালালাবাদ এসোসিয়েশনের রয়েছে। বদরুল-মইনুলের নেতৃত্বাধীন কমিটি গঠিত হবার পর নতুন ট্রাস্টিবোর্ড গঠিত হয়নি। পুরাতন ট্রস্টিবোর্ডের সদস্যরা হলেন আজমল হোসেন কুনু, এম এম শাহিন,তোফায়েল চৌধুরী ও এডভোকেট নাসির উদ্দীন।
এদিকে রোববার ৫ ফেব্রুয়ারি সংগঠনের কার্যকরি কমিটি বৈঠকে বসছে। প্রেসিডেন্ট আহুত এ সভার প্রধান এজেন্ডা হচ্ছে সাধারন সম্পাদককে দেয়া শো’কজের জবাব ও তার ওপর সিদ্ধান্ত। কমিটির শীর্ষ কর্তারা বলছেন, শো’কজের জবাব না পাওয়া গেলে গঠনতান্ত্রিক পন্থায় এগুতে হবে। এতে সাধারন সম্পাদক সাময়িক সাসপেন্ড হতে পারেন। আর সাধারন সভায় সন্মানিত সদস্যরা চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবেন। নাম না প্রকাশ করার শর্তে এই কর্মকর্তা বলেন, বিষয়টি খুবই সেনসেটিভ। তবে গঠনতন্ত্রের উর্ধ্বে ব্যক্তি নয়। এ’ছাড়া সংগঠনের ট্রাস্টিবোর্ড ও সিলেটের মুরুব্বিদের সাথে বিষয়টি নিয়ে পরামর্শ করা হচ্ছে ।
জালালাবাদ এসোসিয়েশনের সাথে জড়িত একাধিক ব্যক্তি বলেন, এজিএম এর আগেই মইনুল সাসপেন্ড হচ্ছেন। সাধারন সভা ভারপ্রাপ্ত সাধারন সম্পাদকের নামে নতুবা প্রেসিডেন্ট তার ক্ষমতা বলে ডাকবেন। মইনুল, হেলাল ও শেফাজরা জবাবদিহিতার জন্য দাঁড়াবেন সাধারন সভায়।
সংকটের মূল কারন: সাধারন সম্পাদক মইনুল ইসলাম নতুন একটি করপোরেশন ‘জালালাবাদ ইউএসএ ইনক’র ’ নাম দিয়ে এস্টারিয়ায় বাড়ি কিনেছেন। আর এ বাড়ি কিনতে জালালাবাদ এসোসিয়েশনের ৩ লাখ ডলারের বেশি অর্থ ডাউন পেমেন্ট হিসেবে ব্যবহার করেছেন তিনি। বাড়িটির নাম দিয়েছেন জালালাবাদ ভবন। বলছেন, এটিই জালালাবাদ এসাসিয়েশনের ভবন ও কার্যালয়। যদিও বাড়িটির ক্রয় সংক্রান্ত দালিলিক কাগজপত্র মইনুল ইসলামের নামে। তবে তিনি বলছেন, জালালাবাদ এসোসিয়েশন অব আমেরিকা ৭ লাখের মতো আর্থিক দায় দেনা তাকে মিটিয়ে দিলে মালিকানা ট্রান্সফার করে দিবেন। তার প্রতিপক্ষরা বলছেন, ভবনটি যদি জালালাবাদ ইউএসএ ইনক এর নামে কেনা না হয়, তা’হলে মইনুল কিভাবে জালালাবাদ ভবন নাম দিলেন। এটাতো ব্যক্তির খেয়াল খুশি মতো হতে পারে না। নিজ নামে এই বাড়ি কিনতে তিনি সংগঠনের ৩ লাখ ডলার তুলে ফেলেছেন। মইনুল বলছেন, আমি যা করেছি গত কমিটির সভাপতি ও সাধারন সম্পাদকের পরামর্শে। তাদের সাথে আমার ডিড রয়েছে। এটি হবে জালালাবাদ ভবন। এ ভবনকে কেন্দ্র করে পক্ষে বিপক্ষে বিবৃতি আসতে শুরু করেছে। সাবেক সভাপতি মাহবুবুর রহমান ও এম এ কাইয়ুম জালালাবাদ ভবন কেনায় অভিনন্দন জানিয়েছেন। একই সাথে উভয় পক্ষ একসাথে বসে বিরোধ নিষ্পত্তির আহবান জানিয়েছেন তারা। এদিকে ২০২০ সালের ডিসেম্বরে কার্যকরি কমিটির সিদ্ধান্ত ছাড়াই জালালাবাদ এসোসিয়েশনের একাউন্ট থেকে তৎকালীন কোষাধ্যক্ষ (বর্তমানে সাধারন সম্পাদক) মইনুল ইসলামের বিরুদ্ধে আড়াই লাখ ডলার উত্তোলনের অভিযোগ তুলেছেন সভাপতি বদরুল খানের সর্মথকরা।
Posted ৯:১৭ অপরাহ্ণ | শুক্রবার, ০৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৩
nykagoj.com | Monwarul Islam