মঙ্গলবার ১৫ই জুলাই, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ৩১শে আষাঢ়, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

শিরোনাম >>
শিরোনাম >>
 আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে তাজ ও আইভী?

আবার আলোচনায় হাসিনা-তারেক মাইনাস ফর্মুলা

নিজস্ব প্রতিবেদক   |   শনিবার, ০৭ ডিসেম্বর ২০২৪   |   প্রিন্ট   |   67 বার পঠিত   |   পড়ুন মিনিটে

আবার আলোচনায় হাসিনা-তারেক মাইনাস ফর্মুলা

 

বাংলাদেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে এখন মাইনাসের গুঞ্জন ডালপালা মেলেছে। ওয়ান ইলিভেনে ‘মাইনাস টু’ নিয়ে তোলপাড় হয়েছে। ওই সময়ে দুই নেত্রী বেগম খালেদা জিয়া এবং শেখ হাসিনাকে মাইনাসের চেষ্টা হয়েছিলো। তাদেরকে গৃহবন্দীও করা হয়। কিন্তু কার্যত সেই ফর্মুলা টেকেনি। তাদের মাইনাস করা যায়নি। এবার আগস্টে গণঅভ‚্যত্থানের কারণে শেখ হাসিনা পালিয়ে ভারতে আশ্রয় নেন। ফলে বাংলাদেশের রাজনীতিতে তিনি এক রকমের মাইনাসে আছেন। তবে তিনি নির্বাসিত জীবনেও রাজনৈতিক কর্মকান্ডে সোচ্চার। সম্প্রতি তিনি নিউইয়র্কে আওয়ামী লীগের এক জনসভায় ভার্চুয়াল ভাষণ দিয়েছেন। আগামী ৮ ডিসেম্বর লন্ডন আওয়ামী লীগের জনসভায় ভাষণ দেবার কথা রয়েছে। ১১ ডিসেম্বর যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের সভায় ভার্চুয়াল বক্তৃতা দেবেন। এই পরিস্থিতিতে শেখ হাসিনাকে আরও কঠোরভাবে দমন করার লক্ষ্যে ‘শেখ হাসিনার বিদ্বেষমূলক ভাষণ প্রচারে নিষেধাজ্ঞা’ জারি করার জন্যে ট্রাইব্যুনালে আবেদন করা হয়। ট্রাইব্যুনাল আবেদন আমলে নিয়ে বাংলাদেশে সংবাদপত্র, টিভি, অনলাইন মিডিয়া এবং সোস্যাল মিডিয়ায় শেখ হাসিনার এহেন বক্তব্য প্রচারে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়। এই নিষেধাজ্ঞার ফলে বিটিআরসিকে সোস্যাল মিডিয়ায় শেখ হাসিনার বিদ্বেষমূলক ভাষণ সরিয়ে ফেলতে হবে।

মাইনাস টু ফর্মুলার আরেক নেত্রী বেগম খালেদা জিয়া বর্তমানে গুরুতর অসুস্থ। তিনি কারাগার থেকে মুক্ত হলেও স্বচ্ছন্দ্যে চলাচল এবং রাজনৈতিক কর্মকান্ডে অংশগ্রহণে অনেকটাই অক্ষম। তিনি বিদেশে নানা রকমের জটিল রোগে ভুগছেন। চিকিৎসার জন্যে বিভিন্ন দেশে যাবার জন্য ভিসাও পর্যন্ত করিয়ে রেখেছেন। তবে সবচেয়ে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে তারেক রহমানকে মাইনাসের গুঞ্জন আসার পর। বাংলাদেশে নতুন ধারার রাজনীতি প্রবর্তনের নামে প্রথাগত আওয়ামী লীগ ও বিএনপি’র রাজনীতি মাইনাস করার প্রচেষ্টা হালে পানি পায়নি। শেষ অবধি তারেক রহমানকে মাইনাস করার চেষ্টায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। শেখ হাসিনার সরকারের পতন ৫ আগস্ট হলেও এখনও পর্যন্ত তারেক রহমান লন্ডন থেকে দেশে ফিরতে পারেননি। এ নিয়ে বিএনপি ও তার বিভিন্ন অঙ্গ-সংগঠনের মধ্যে ক্ষোভের আগুন জ¦লছে। বাংলাদেশের রাজনীতিতে এখন একটা ক্রান্তিকাল চলছে। বিএনপি দ্রæত জাতীয় নির্বাচন চাইলেও নির্বাচনী রোডম্যাপ এখনও ঘোষণা হয়নি। সংস্কারের নামে নির্বাচন কতদূর সে বিষয়ে এখনও ধোয়াঁশা কাটেনি।

অর্ন্তবর্তি সরকার বলছে, সংস্কার কমিশনগুলো ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে তাদের রিপোর্ট সরকারের কাছে জমা দেবে। জানুয়ারিতে প্রধান উপদেষ্টা নোবেল বিজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূস বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের বৈঠক আহŸান করবেন। অর্ন্তবর্তি সরকার কতটা সংস্কার করবে এ বিষয়ে সেখানে একটা মতৈক্যে পৌঁছার চেষ্টা হবে। তার ওপর ভিত্তি করে নির্বাচনের রোডম্যাপ নির্ধারন করা হবে। সরকার অবশ্য নির্বাচন কমিশন গঠন করেছে। কমিশন আগামী মার্চে ভোটার তালিকা হালনাগাদ করার কাজ শুরু করবে। কারণ নির্বাচন নিয়ে কিছুটা ধোঁয়াশা এখন আছে। কারণ সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনী বাতিলের জন্য বিএনপি’র তরফে আদালতে আবেদন করা হয়েছে। আগামী ১৭ই ডিসেম্বর এই বিষয়ে আদালত রায় দেবেন। পঞ্চদশ সংশোধনী বাতিল হয়ে গেলে তত্ত¡াবধায়ক সরকার ব্যবস্থা পুর্নবহাল হয়ে যাবে। সেক্ষেত্রে বর্তমান অর্ন্তবর্তি সরকারকে নিরপেক্ষ তত্ত¡বধায়ক সরকার বলা হবে নাকি নতুন তত্ত¡বধায়ক সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করতে হবে সে বিষয়ে আদালতের নির্দেশনা গুরুত্বপূর্ণ ভ‚মিকা পালন করবে।

আগামী নির্বাচন নিয়ে অনেক প্রশ্নের জবাব এখনও অজানা। নির্বাচনের পর জাতীয় সরকার গঠন করা হবে কিনা সেই আলোচনাও রাজনৈতিক মহলে আছে। জাতীয় সরকার হলে তারেক রহমান প্রধানমন্ত্রী হবেন এমন ধারণা করা যায়। তারেক সরকার সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান এবং সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার সন্তান। তার ওপর তিনি বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান। এই জাতীয় সরকারে জামায়াতে ইসলামীসহ শেখ হাসিনার সরকার পতনে অংশ নেয়া ছাত্র-জনতাসহ সকল পক্ষ থাকতে পারেন। সেখানে কোনও কোনও ছাত্রতে মন্ত্রিসভায় ঠাঁই দেবার সম্ভাবনা রয়েছে। আওয়ামী লীগ ও জাতীয় পার্টিসহ ১৪ দলীয় জোটের দলগুলো বড় ধরনের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করছে। এই ক্ষেত্রে শেখ হাসিনাকে মাইনাস করে আওয়ামী লীগকে নির্বাচনে অংশ নেবার সুযোগ দেয়া হলে দলটি জাতীয় সংসদে বিরোধী দলের আসনে বসতে পারে। শেখ হাসিনার নামে মানবতাবিরোধী ট্রাইব্যুনালে একাধিক মামলা রয়েছে। এই বিচার প্রক্রিয়া চলাকালে নারায়নগঞ্জের আওয়ামী লীগ নেত্রী ও সাবেক মেয়র সেলিনা হায়াত আইভি, সাবের হোসেন চৌধুরী কিংবা সোহেল তাজের মতো ক্লিন ইমেজের প্রার্থীদের নির্বাচনে অংশ নেবার সুযোগ দেয়া হলে অবাক হওয়ার কিছু থাকবে না। নির্বাচনকে অংশগ্রহণমূলক করার ক্ষেত্রে আওয়ামী লীগের অংশগ্রহণের বিষয়ে পর্দার আড়ালে আন্তর্জাতিক পক্ষগুলোর ভ‚মিকা কী হয় সেটিও বিবেচ্য। ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বিক্রম মিস্ত্রি আগামী ৯ ডিসেম্বর ঢাকায় আসছেন। সাম্প্রতিক উত্তেজনার নানা দিকসহ আগামী নির্বাচন নিয়ে অর্ন্তবর্তি সরকার ও বিভিন্ন রাজনৈতিক পক্ষের সঙ্গে নির্বাচন নিয়ে আলোচনা হতে পারে। এক্ষেত্রে তিনি সরকারের চিন্তা-ভাবনা জানার চেষ্টা করতে পারেন।

যুক্তরাষ্ট্রে ট্রাম্প বিজয়ী হওয়ার পর ইউনূসের সরকারের বেশি দিন ক্ষমতায় থাকার সম্ভাবনা কমে যাচ্ছে। ফলে দেশের অভ্যন্তরে বিএনপি’র দ্রæত নির্বাচনের চাপ দিচ্ছে। বর্হিবিশ^ তথা যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপ সহ আন্তর্জাতিক পক্ষগুলোও গণতন্ত্রে প্রত্যাবর্তনের লক্ষ্যে নির্বাচন দ্রæত করার প্রতি জোর দিতে পারে। কারণ দেশে নিরাপত্তা ব্যবস্থার উন্নয়নে অর্ন্তবর্তি সরকার খুব বেশি সাফল্য দেখাতে পারেনি। নতুন করে টাকা ছাপাতে হয়েছে। মূল্যস্ফীতি রেকর্ড পরিমাণ বেড়ে গেছে। এমন বাস্তব পরিস্থিতিতে অর্ন্তবর্তি সরকার বেশ চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছে।

Facebook Comments Box

Posted ৮:০৭ অপরাহ্ণ | শনিবার, ০৭ ডিসেম্বর ২০২৪

nykagoj.com |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

advertisement
advertisement
advertisement
সম্পাদক
আফরোজা ইসলাম
কন্ট্রিবিঊটিং এডিটর
মনোয়ারুল ইসলাম
Contact

+1 845-392-8419

E-mail: nykagoj@gmail.com